Dhaka ০৮:০০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভয়েস অব আমেরিকার ১৩ শতাধিক কর্মী ছুটিতে!

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৬:৩৬:৩৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫
  • ২৫ Time View

যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকার ১৩০০ জনেরও বেশি কর্মীকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া দুটি মার্কিন সংবাদমাধ্যমের তহবিলও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দেশটিতে সরকার-অর্থায়িত মিডিয়া আউটলেটের মূল সংস্থা এবং আরও ছয়টি ফেডারেল সংস্থা বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়ার একদিন পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো।

রোববার (১৬ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

বার্তাসংস্থাটি বলছে, শনিবার ১৩০০ জনেরও বেশি ভয়েস অব আমেরিকার কর্মীকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। ভয়েস অব আমেরিকার পরিচালক মাইকেল আব্রামোভিৎজ বলেছেন, তার প্রায় ১৩০০ জন সাংবাদিক, প্রযোজক এবং সহকারীদের সকল কর্মীকে প্রশাসনিক ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। এর ফলে প্রায় ৫০টি ভাষায় পরিচালিত একটি মিডিয়াকে পঙ্গু করে দেওয়া হলো।

লিঙ্কডইনে দেওয়া এক পোস্টে আব্রামোভিৎজ বলেছেন, “আমি গভীরভাবে দুঃখিত যে— ৮৩ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো বহুজাতিক ভয়েস অব আমেরিকাকে নীরব করে দেওয়া হচ্ছে। বিশ্বজুড়ে স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের লড়াইয়ে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।”

ভয়েস অব আমেরিকার মূল সংস্থা ইউএস এজেন্সি ফর গ্লোবাল মিডিয়ার (ইউএসএজিএম) পাশাপাশি রাশিয়া ও ইউক্রেনসহ পূর্ব ইউরোপের দেশগুলোতে সম্প্রচারকারী রেডিও ফ্রি ইউরোপ/রেডিও লিবার্টি এবং চীন ও উত্তর কোরিয়ায় সম্প্রচারকারী রেডিও ফ্রি এশিয়াকে অনুদান দেওয়াও বন্ধ করে দিয়েছে।

রয়টার্স বলছে, ট্রাম্পের এই নির্দেশ এমন একটি সংস্থাকে ধ্বংস করার জন্য প্রস্তুত বলে মনে হচ্ছে যা কর্তৃত্ববাদী দেশগুলোতে নির্ভরযোগ্য সংবাদের একটি বিরল উৎস হিসেবে কাজ করে থাকে।

১৯৪২ সালে নাৎসি প্রচারণা মোকাবিলা করার জন্য প্রতিষ্ঠিত ভয়েস অব আমেরিকা এখন প্রতি সপ্তাহে ৩৬ কোটি লোকের কাছে সংবাদ পৌঁছায়। সংস্থাটিতে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কর্মী রয়েছে। কংগ্রেসে পেশ করা সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, সংস্থাটির জন্য ২০২৪ সালে ৮৮ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলার বরাদ্দ ছিল।

ভয়েস অব আমেরিকার সিউল ব্যুরো প্রধান উইলিয়াম গ্যালো রোববার বলেছেন, তাকে কোম্পানির সকল সিস্টেম এবং অ্যাকাউন্ট থেকে লকড আউট করা হয়েছে। তিনি বলেন, “আমি যা করতে চেয়েছি তা হলো- সোজাসাপ্টা ও সৎ থাকা এবং সত্য বলা, সে আমি যে সরকারের খবরই কভার করছি না কেন। যদি এটি কারও জন্য হুমকিও হয়, তাহলে তাই হোক।”

পৃথক প্রতিবেদনে বার্তাসংস্থা সিনহুয়া বলছে, ভয়েস অব আমেরিকা (ভিওএ), রেডিও ফ্রি এশিয়া, রেডিও ফ্রি ইউরোপ এবং অন্যান্য গণমাধ্যমের আউটলেটের শত শত কর্মীকে ছাটাই করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত একটি ইমেইলও করা হয়েছে এসব কর্মীদের। একই সঙ্গে তাদের প্রেস পাস এবং সরঞ্জাম জমা দিতে বলা হয়েছে।

গত শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক নির্বাহী আদেশে ইউএস এজেন্সি ফর গ্লোবাল মিডিয়াকে (ইউএসএজিএম) “অপ্রয়োজনীয়” ফেডারেল আমলাতন্ত্রের অংশ হিসেবে তালিকাভুক্ত করার পরই এসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়। মূলত ভয়েস অব আমেরিকার মূল সংস্থা ইউএসএজিএম।

এদিকে স্থানীয় গণমাধ্যমটির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, রেডিও ফ্রি ইউরোপ ও রেডিও ফ্রি এশিয়াসহ বেসরকারিভাবে অন্তর্ভুক্ত আন্তর্জাতিক সম্প্রচারকদের সব চুক্তি বাতিল করেছে সংস্থাটি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

Popular Post

ভয়েস অব আমেরিকার ১৩ শতাধিক কর্মী ছুটিতে!

Update Time : ০৬:৩৬:৩৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকার ১৩০০ জনেরও বেশি কর্মীকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া দুটি মার্কিন সংবাদমাধ্যমের তহবিলও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দেশটিতে সরকার-অর্থায়িত মিডিয়া আউটলেটের মূল সংস্থা এবং আরও ছয়টি ফেডারেল সংস্থা বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়ার একদিন পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো।

রোববার (১৬ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

বার্তাসংস্থাটি বলছে, শনিবার ১৩০০ জনেরও বেশি ভয়েস অব আমেরিকার কর্মীকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। ভয়েস অব আমেরিকার পরিচালক মাইকেল আব্রামোভিৎজ বলেছেন, তার প্রায় ১৩০০ জন সাংবাদিক, প্রযোজক এবং সহকারীদের সকল কর্মীকে প্রশাসনিক ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। এর ফলে প্রায় ৫০টি ভাষায় পরিচালিত একটি মিডিয়াকে পঙ্গু করে দেওয়া হলো।

লিঙ্কডইনে দেওয়া এক পোস্টে আব্রামোভিৎজ বলেছেন, “আমি গভীরভাবে দুঃখিত যে— ৮৩ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো বহুজাতিক ভয়েস অব আমেরিকাকে নীরব করে দেওয়া হচ্ছে। বিশ্বজুড়ে স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের লড়াইয়ে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।”

ভয়েস অব আমেরিকার মূল সংস্থা ইউএস এজেন্সি ফর গ্লোবাল মিডিয়ার (ইউএসএজিএম) পাশাপাশি রাশিয়া ও ইউক্রেনসহ পূর্ব ইউরোপের দেশগুলোতে সম্প্রচারকারী রেডিও ফ্রি ইউরোপ/রেডিও লিবার্টি এবং চীন ও উত্তর কোরিয়ায় সম্প্রচারকারী রেডিও ফ্রি এশিয়াকে অনুদান দেওয়াও বন্ধ করে দিয়েছে।

রয়টার্স বলছে, ট্রাম্পের এই নির্দেশ এমন একটি সংস্থাকে ধ্বংস করার জন্য প্রস্তুত বলে মনে হচ্ছে যা কর্তৃত্ববাদী দেশগুলোতে নির্ভরযোগ্য সংবাদের একটি বিরল উৎস হিসেবে কাজ করে থাকে।

১৯৪২ সালে নাৎসি প্রচারণা মোকাবিলা করার জন্য প্রতিষ্ঠিত ভয়েস অব আমেরিকা এখন প্রতি সপ্তাহে ৩৬ কোটি লোকের কাছে সংবাদ পৌঁছায়। সংস্থাটিতে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কর্মী রয়েছে। কংগ্রেসে পেশ করা সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, সংস্থাটির জন্য ২০২৪ সালে ৮৮ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলার বরাদ্দ ছিল।

ভয়েস অব আমেরিকার সিউল ব্যুরো প্রধান উইলিয়াম গ্যালো রোববার বলেছেন, তাকে কোম্পানির সকল সিস্টেম এবং অ্যাকাউন্ট থেকে লকড আউট করা হয়েছে। তিনি বলেন, “আমি যা করতে চেয়েছি তা হলো- সোজাসাপ্টা ও সৎ থাকা এবং সত্য বলা, সে আমি যে সরকারের খবরই কভার করছি না কেন। যদি এটি কারও জন্য হুমকিও হয়, তাহলে তাই হোক।”

পৃথক প্রতিবেদনে বার্তাসংস্থা সিনহুয়া বলছে, ভয়েস অব আমেরিকা (ভিওএ), রেডিও ফ্রি এশিয়া, রেডিও ফ্রি ইউরোপ এবং অন্যান্য গণমাধ্যমের আউটলেটের শত শত কর্মীকে ছাটাই করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত একটি ইমেইলও করা হয়েছে এসব কর্মীদের। একই সঙ্গে তাদের প্রেস পাস এবং সরঞ্জাম জমা দিতে বলা হয়েছে।

গত শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক নির্বাহী আদেশে ইউএস এজেন্সি ফর গ্লোবাল মিডিয়াকে (ইউএসএজিএম) “অপ্রয়োজনীয়” ফেডারেল আমলাতন্ত্রের অংশ হিসেবে তালিকাভুক্ত করার পরই এসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়। মূলত ভয়েস অব আমেরিকার মূল সংস্থা ইউএসএজিএম।

এদিকে স্থানীয় গণমাধ্যমটির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, রেডিও ফ্রি ইউরোপ ও রেডিও ফ্রি এশিয়াসহ বেসরকারিভাবে অন্তর্ভুক্ত আন্তর্জাতিক সম্প্রচারকদের সব চুক্তি বাতিল করেছে সংস্থাটি।