ভয়াবহ দাবানলের কবলে পড়েছে কানাডা। দেশটির মধ্য ও পশ্চিমাঞ্চলে দ্রুতই বিস্তীর্ণ এলাকাকে গ্রাস করছে দাবানলটি। আগুন ছড়িয়ে পড়ছে উত্তর ও পূর্বাঞ্চলেও। এ অবস্থায় জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে ম্যানিটোবা প্রদেশে। বিভিন্ন অঞ্চলে বাসিন্দাদেরকে দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, আলবার্টার কিছু এলাকা থেকে তেল ও গ্যাস উত্তোলনও বন্ধ রাখা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স।
ব্রিটিশ বার্তাসংস্থাটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, কানাডার মধ্য ও পশ্চিমাঞ্চলে দাবানল ছড়িয়ে পড়ায় ম্যানিটোবা প্রদেশে বুধবার জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। একইসঙ্গে উত্তর ও পূর্বাঞ্চলের প্রায় ১৭ হাজার মানুষকে দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে ফ্লিন ফ্লন শহরের বাসিন্দারাও রয়েছেন।
ম্যানিটোবার প্রিমিয়ার ওয়াব কিনিউ এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, প্রদেশটির সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে বড় মানববসতি সরিয়ে নেওয়ার ঘটনা এটি। বাস্তুচ্যুত মানুষদের উইনিপেগসহ অন্যান্য শহরের ফুটবল মাঠ ও কমিউনিটি সেন্টারে আশ্রয় দেওয়া হবে। পাশাপাশি প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরাও উদ্ধার কাজে অংশ নিচ্ছেন।
প্রিমিয়ার কিনিউ আরও বলেন, এই বিপর্যয় মোকাবিলায় সরকারের সব স্তরের সহযোগিতা ও বিপুল পরিমাণ সম্পদের প্রয়োজন হবে।
অন্যদিকে, দাবানলের কারণে আলবার্টা প্রদেশের কিছু এলাকা থেকে তেল ও গ্যাস উত্তোলন বন্ধ রাখা হয়েছে এবং একটি ছোট শহরের মানুষদের সরে যেতে বলা হয়েছে। তেল উত্তোলনকারী প্রতিষ্ঠান সিনোভাস এনার্জি জানিয়েছে, আলবার্টার উত্তরে ফস্টার ক্রিক এলাকায় তাদের কিছু কর্মীকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
এরই মধ্যে আলবার্টার উত্তরাঞ্চলের চিপেওইয়ান লেক এলাকায় প্রায় ২৯০০ হেক্টর এলাকা জুড়ে দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে। এটি তেলসমৃদ্ধ ফোর্ট ম্যাকমারির কাছাকাছি এবং এই দাবানলের কারণে সেখানকার তেল কোম্পানিগুলো সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
আলবার্টা সরকার জানিয়েছে, চিপেওইয়ান লেক এলাকায় আপাতত সরাসরি কোনও ঝুঁকি না থাকলেও বাতাসের দিক পরিবর্তন হলে তা মারাত্মক হতে পারে, এজন্য এলাকার বাসিন্দাদের এক ঘণ্টার মধ্যে নিরাপদ স্থানে সরে যেতে বলা হয়েছে।
এছাড়া স্বান হিলস শহরের উত্তরে আরেকটি ভয়াবহ দাবানলে প্রায় ১৬০০ হেক্টর এলাকা জ্বলছে। শহরটির প্রায় ১২০০ বাসিন্দাকে সোমবার রাতেই সরে যেতে বলা হয়। ওই এলাকার তেল ও গ্যাস কোম্পানি অ্যাসপেনলিফ এনার্জি নিরাপত্তার স্বার্থে প্রতিদিনের ৪০০০ ব্যারেল সমপরিমাণের উৎপাদন সাময়িকভাবে বন্ধ রেখেছে।