অনুকূল বিশ্বাস,মালদহ জেলা প্রতিনিধি:
বাংলায় একটা প্রবাদ আছে “একা রামে রক্ষা নেই সুগ্রীব দোসর “। করোনা মহামারীতে ভারতের অবস্থা এখন এমনই। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে ভয়ঙ্কর ছোবলে সারাদেশ যখন আতঙ্কে কাঁপছে , এমন সময় কালো ছত্রাক বা ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের আক্রমণ করোনা রোগীদের অবস্থা শোচনীয় করে তুলেছে।
ভারতের উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, ছত্রিশগড়, গুজরাট, মহারাষ্ট্র , রাজস্থান, পশ্চিমবঙ্গ সহ একাধিক রাজ্যে এই ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। চিকিৎসা পরিষেবায় এই ব্ল্যাক ফাঙ্গাসকে বলা হচ্ছে নিউকরমাইকোসিস।
করোনায় আক্রান্ত রোগীর ফুসফুস ও মস্তিষ্ক বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এছাড়া যেকোনো করোনা আক্রান্ত রোগী শারীরিক ভাবে দুর্বল হয়ে যায় । স্বাভাবিক ভাবেই তার শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় । সেই সুযোগে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণ ঘটে তার শরীরে। বিশেষ করে যে সমস্ত করোনা রোগীকে দীর্ঘদিন আইসিইউতে রেখে চিকিৎসা করা হয়েছে এবং যাঁদের অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস ও দীর্ঘদিন স্টেরয়েড অতিরিক্ত মাত্রায় নিচ্ছেন মূলত তাঁরাই এই সংক্রমণের শিকার হচ্ছেন। পরিসংখ্যান বলছে অনেক করোনা রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতির মূল কারণ হিসেবে এই ফাঙ্গাস সংক্রমণই দায়ী।
ওইসব রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালে বেশকিছু এই রোগীর সন্ধান মিলেছে। তবে ডাক্তাররা বলছেন ব্ল্যাক ফাঙ্গাস ছোঁয়াচে নয়। তাই একজনের শরীর থেকে অন্যজনের সংক্রমনের আশঙ্কা নেই। কিন্তু করোনার সংক্রমণের সঙ্গে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণ ডাক্তারদের চরম বিপাকে ফেলেছে। তাই দেশবাসীকে সারাদেশের যেখানেই ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের রোগী চোখে পড়বে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে খবর দেওয়া অনুরোধ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে করোনার পাশাপাশি ব্ল্যাক ফাঙ্গাসকেও কেন্দ্রীয় সরকার মহামারী ঘোষণা করেছে।
এবার আসি কিভাবে মানুষ বুঝবে যে ব্লাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণ ঘটেছে অর্থাৎ এর প্রাথমিক লক্ষণ গুলি কিরূপ:-
এই ফাঙ্গাসের সংক্রমণে গালে ব্যথা হতে পারে, সেটা গালের এক পাশে কিংবা উভয় পাশেই ব্যথা হতে পারে। এটাই এর প্রাথমিক লক্ষণ। এছাড়া মুখের ক্ষত সৃষ্টি হতে পারে, বিভিন্ন রকম ত্বকের সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা বলছেন যে, এই ফাঙ্গাল সংক্রমণে চোখও প্রভাবিত হতে পারে। এর প্রভাবে চোখের ফোলাভাব ও দৃষ্টিশক্তি কমে যেতে পারে। এমনকি চোখে লালচে ভাব ,চোখ খুলতে অনিহা, চোখে অসাড়তার লক্ষণ গুলো এই ফাঙ্গাল সংক্রমণের লক্ষণ বলে জানা যাচ্ছে। সারাদেশে একটু একটু করে এই ‘কালো ছত্রাক’ সংক্রমণ ক্রমশঃ থাবা বসাতে শুরু করেছে।