লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিলে অনেকটা স্থায়ী রূপ নেওয়া করোনায় থামছেই না প্রাণহানি। ইতিমধ্যে সেখানে ১ লাখ ১৯ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে ভাইরাসটিতে। শনাক্তের হার উচ্চ হওয়ায় এখনও প্রতিদিনই প্রায় হাজার মানুষ পৃথিবী ছাড়া হচ্ছেন। অপরদিকে, গত একদিনেও প্রায় অর্ধলক্ষ মানুষের করোনা শনাক্ত হয়েছে দেশটিতে। আগের তুলনায় কিছুটা কমেছে সুস্থতা। তারপরও আক্রান্তদের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশই বেঁচে ফিরেছেন।
ব্রাজিলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ডোমিটারের নিয়মিত পরিসংখ্যানে বাংলাদেশ সময় আজ শনিবার সকালে বলা হয়েছে, দেশটিতে গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৮ হাজার ১১২ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৩৮ লাখ ১২ হাজার ৬০৫ জনে দাঁড়িয়েছে। নতুন করে প্রাণ হারিয়েছেন ৮৬৮ জন। এতে করে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১ লাখ ১৯ হাজার ৫৯৪ জনে ঠেকেছে।
অপরদিকে, সুস্থতা লাভ করেছেন আরও ২৯ হাজারের অধিক ভুক্তভোগী। এতে করে বেঁচে ফেরার সংখ্যা পৌনে ৩০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে।
গত ২৬ ফেব্রুয়ারি দেশটির সাও পাওলো শহরে ৬১ বছর বয়সী ইতালি ফেরত এক জনের শরীরে ভাইরাসটি প্রথম শনাক্ত হয়। এরপর থেকেই অবস্থা ক্রমেই সংকটাপন্ন হতে থাকে। যেখানে আক্রান্ত ও প্রাণহানির তালিকায় অনেক চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন।
তবে শুধু ব্রাজিলই নয়, করোনার ভয়াবহতা ছড়িয়ে পড়েছে গোটা লাতিন আমেরিকার অন্যান্য দেশগুলোতেও। যেখানে পূর্বের তুলনায় ভাইরাসটির দাপট অনেকটা বেড়েছে। এমন অবস্থায় করোনাকে বাগে আনতে দেশগুলোর সরকার মানুষকে ঘরে রাখতে চেষ্টা করছেন। কিন্তু অর্থনীতির চাকা সচল থাকা নিয়ে রয়েছে যত দুশ্চিন্তা। ফলে সংকটাবস্থার মধ্য দিয়ে ব্রাজিল, পেরু, চিলি, ইকুয়েডর ও আর্জেন্টিনার মতো দেশগুলোতে অনেক কিছুই চালু রয়েছে।
এর মধ্যে ব্রাজিলে সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা। যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। দেশটিতে আক্রান্তদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে বেশ বিপাকে পড়তে হচ্ছে চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোকে। অপরদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা দ্বিতীয় দফায় করোনা আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপে ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর পর ব্রাজিল ভাইরাসটির এখন প্রধানকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। একই সঙ্গে এ অঞ্চলের অন্যান্য দেশগুলোতে দ্রুত বিস্তার লাভ করায় পেরু, চিলি ও কলম্বিয়ার মতো দেশগুলোর প্রত্যেকটিতে আক্রান্ত ২ লাখ ছাড়িয়ে গেছে।
এর মধ্যে পেরুতে আক্রান্ত ৬ লাখ প্রায় ৩০ হাজার। যেখানে মৃতের সংখ্যা ২৮ হাজার ৪৭১ জনে ঠেকেছে।
কলম্বিয়ায় শনাক্ত হয়েছে ৫ লাখ ৯০ হাজার রোগী। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ১৮ হাজার ৭৬৭ জনের।
চিলিতে সংক্রমিত ৪ লাখ ৬ হাজারের কাছাকাছি। এর মধ্যে ১১ হাজার ১৩২ জনের প্রাণ কেড়েছে করোনা।
আর্জেন্টিনায় সংক্রমিতের সংখ্যা সাড়ে ৩ লাখ ৯২ হাজার ছাড়িয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৮ হাজার ২৭১ জনের।