মঞ্চে বসে রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হাতে প্লাস্টিকের একটি ফুটবল। ডেকে নিলেন দর্শকাসনে বসা এক মহিলাকে। হুইলচেয়ারে বসে হাতে করেই ছুড়ে দিলেন সেই ফুটবল। মহিলা সেই বল তালুবন্দি করতেই চিৎকার করে উঠলেন মমতা, ‘বোল্ড আউট, বিজেপি বোল্ড আউট। দেখলেন তো যেটা বলি সেটাই করি। ওই এক পায়ে এমন শট দেব না, বিজেপি তোমাকে কান মুলে রাজনৈতিক ভাবে মাঠের বাইরে বের করে দেব।’

পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়ণগড়ে এক নতুন খেলা দেখা গেল মমতার কাছে। ‘খেলা হবে’ এখন তৃণমূলের নির্বাচনী স্লোগানে পরিণত হলেও এতদিন সেটা ছিল মুখেই। এই প্রথম মঞ্চে আক্ষরিক অর্থেই খেলা দেখা গেল।

নারায়ণগড়ে সভার শুরুতেই একজনের উদ্দেশে মমতাকে বলতে শোনা যায়, ‘বলটা মেরে দেখাও তো।’ তারপর মমতার কথাতেই বোঝা যায় সেই বল বেশি দূরে যায়নি। তাই বলটা মঞ্চে চেয়ে নেন তিনি। নিজের বক্তব্যের মাঝেই মুখ্যমন্ত্রী সেই বল হাতে নিয়ে বলেন, ‘আমি তো বসে আছি। কী ভাবে খেলব। একজন মা, বোন চলে আসুন। সামনা সামনি বলটা আপনার হাতে তুলে দেব।’ এগিয়ে আসা মহিলা বল লুফতে পারবেন কিনা সেটাও বারবার জিজ্ঞাসা করে নেন মমতা। মহিলা ‘হ্যাঁ’ সূচক ঘাড় নাড়লে হুইলচেয়ারে বসেই বল ছুড়ে দেন তিনি। তারপরেই সেই চিৎকার।

যখন রাজ্যে প্রথম দফার ভোটগ্রহণ চলছে তখন পশ্চিম মেদিনীপুরে বসে বারবার অধিকারী পরিবারের দিকে আক্রমণ করেন মমতা। নাম না করে শিশির অধিকারী ও শুভেন্দু অধিকারীকে ‘গাদ্দার’ ও ‘মিরজাফর’ তকমা দিয়ে মমতা বলেন, ‘‘দুই গাদ্দার ছিল। বাপ আর ব্যাটা। এখন বিজেপিতে গিয়ে জ্যাঠা হয়েছে। ওদের সম্বন্ধে যত বলি তত আমার ঘৃণা হয়। কেন বলুন তো। লজ্জাটা আমার। আমিই এত বাড়িয়েছি। আমিই এত দিয়েছি। যা চেয়েছে তাই দিয়েছি।’’

শনিবার নারায়ণগড়ের সভায় সরাসরি বিজেপি-র বিরুদ্ধে ভোটে অশান্তি ও ভোট লুঠের অভিযোগ আনেন মমতা। সেই সঙ্গে মহিলাদের প্রশংসা করে মমতা বলেন, ‘‘কাল রাত ১২টার সময় জ্যাঠার এক ব্যাটা টাকা দিচ্ছিল। হাতে নাতে ধরা পড়েছে। মা- বোনেরা বিজেপি-র বহিরাগত গুন্ডাদের মোকাবিলা করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে।’’ সেই সঙ্গে গুন্ডাদের আটকাতে মহিলাদের হাতা, বঁটি, খুন্তি, ঝাড়ু এ সব নিয়ে ভোট দিতে যাওয়ার পরামর্শও দেন তিনি।

১ এপ্রিল দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণে বাংলার চোখ থাকবে নন্দীগ্রামের দিকে। মমতা ও শুভেন্দু, দুই হেভিওয়েটের লড়াই। আর সেই লড়াইয়ের আগে কয়েকটা দিন নন্দীগ্রামেই থাকবেন বলে জানান মমতা। তিনি বলেন, ‘‘আমি কাল নন্দীগ্রামে যাব। ২৮, ২৯, ৩০, ৩১, ১ তারিখ ওখানেই থাকব। বিজেপি-র গুন্ডারা কী করতে পারে সেটা আমিও একটু কাছ থেকে দেখতে চাই।’’

সূত্র: আনন্দবাজার

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে