বৈশ্বিক মহামারি করোনা আবহে স্বর্ণের দাম লাগামহীনভাবে বেড়েই চলেছে আন্তর্জাতিক বাজারে। চলতি বছর স্বর্ণের দামে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি হয়েছে। সোমবার বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ১৯৩১ মার্কিন ডলার। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এ বছরের শেষের দিকে প্রতি আউন্স স্বর্ণের মূল্য দুই হাজার ছাড়িয়ে যাবে।
সোমবার (২৭ জুলাই) আন্তর্জাতিক বাজারে লেনদেন শুরু হতেই স্বর্ণের দাম এক হাজার ৯৩১ ডলার স্পর্শ করেছে। বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম বেড়েছে ৪০০ ডলারের উপরে যা পূর্বের মূল্যের ২৬ শতাংশ বেশি। বছরের শুরুর দিকে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ছিল এক হাজার ৫১৭ ডলার।
স্বর্ণের সঙ্গে রূপার দামও বেড়েছে। বর্তমানে প্রতি আউন্স রূপার মূল্য ২৩.২৭ মার্কিন ডলার। চলতি বছরের মার্চের তুলনায় বর্তমানে রূপার মূল্য দ্বিগুণ হয়ে গেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্বর্ণের দামের পাশাপাশি রূপার দাম আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ইতিমধ্যে স্বর্ণের দামের ২০১১ সালের রেকর্ডও ভেঙে গেছে। ওই বছর সেপ্টেম্বরে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম এক হাজার ৯২০ ডলারে উঠেছিল। এটাই ছিল এযাবৎকালের বিশ্ববাজারে স্বর্ণের সর্বোচ্চ দাম। তা আজ অতীত হয়ে গেছে।
গেল সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ছিল এক হাজার ৯০১ ডলার। আজ ইতোমধ্যেই প্রতি আউন্সে বেড়েছে ৩০ ডলার। ফলে সপ্তাহের লেনদেন শুরু হতেই প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম গিয়ে দাঁড়াল এক হাজার ৯৩১ ডলারে।
এভাবে স্বর্ণের দাম বেড়ে যাওয়ার ফলে মুদ্রাস্ফীতি দেখা দিতে পারে কিনা, সে ব্যাপারে উদ্বিগ্ন আছেন বিশেষজ্ঞরা।
এএসজেড ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ডেনিয়েল হাইনেস বলেন, ‘করোনাভাইরাস মহামারী আকারে ছড়িয়ে যাওয়ার পর ইউরোপীয় ইউনিয়নের নয়া পদক্ষেপের কারণে স্বর্ণের দাম বেড়ে যাচ্ছে। মহামারী পরিস্থিতি বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে স্বর্ণের দামও বাড়ছে।’
তিনি মনে করেন, এ বছরের শেষের দিকে স্বর্ণের দাম আরও বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে করোনা মহামারী থেমে গেলে বাজার পরিস্থিতি আবারও স্থিতিশীল হবে বলে আশাবাদী ডেনিয়েল হাইনেস।
বিশ্ববাজারে এভাবে স্বর্ণের দাম বাড়ার প্রেক্ষিতে গত সপ্তাহে বাংলাদেশেও দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)। দেশে গত শুক্রবার থেকে স্বর্ণের বাড়তি দাম কার্যকর হয়েছে। আজ যেহেতু বিশ্ববাজারে আবারও স্বর্ণের দাম বেড়েছে, সেহেতু দেশীয় বাজারেও এর প্রভাব পড়বে।