তপনকান্তি মন্ডল, বিশেষ প্রতিনিধি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা:
গতকাল বিষমদ কান্ডে মূল অভিযুক্ত “খোঁড়া বাদশা” ওরফে নুর ইসলাম ফকিরসহ চারজনের বিরুদ্ধে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় ঘোষণা করল আলিপুরের ষষ্ঠ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালত ।
পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ পরগনা জেলার মগরাহাট ও উস্তির সংগ্ৰামপুর এলাকায় ২০১১ সালে বিষ মদ পানের জেরে ৩৭৫ জনের বেশী মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ে। তার মধ্যে মৃত্যু ঘটে ১৭২ জনের। এই ঘটনায় খোঁড়া বাদশা সহ আরো বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মগরাহাট ও উস্তি থানায় পৃথক মামলা দায়ের করা হয় । মামলা চলে ডায়মন্ডহারবার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালত এবং আলিপুর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতে ।
ইতিপূর্বে ২০১৮ সালের ২৮ সেপ্টম্বর খোঁড়া বাদশা সহ চারজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছিল ।গতকাল আলিপুর জেলা আদালতে মূলত সেই রায় বহাল থাকল । ২০১১ সালে খোঁড়া বাদশার ভাটিখানার মদ খেয়ে ১৩, ১৪ ও ১৫ ই ডিসেম্বর মগরাহাট, উস্থি ও মন্দিরবাজার থানা এলাকায় যথাক্রমে ৭০, ৬৮ ও ৩৪ জন অর্থাৎ মোট ১৭২ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু ঘটে । এই ঘটনায় পশ্চিম বঙ্গ সরকার প্রতি পরিবারের দু লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেয় ।
অনৈতিক কাজে যুক্ত থাকা নরহত্যা ও বেঙ্গল আবগারি আইন সহ একাধিক ধারায় এই মামলা চলে। সিআইডি তদন্ত করে এই মামলার চার্জশিট দেয় ২০১২ সালে ।এই মামলা থেকে খোঁড়া বাদশার স্ত্রী শাকিলা বিবি সহ ৭ জনের বেকসুর খালাস হয় । তাদের পক্ষের আইনজীবী রামপদ জানা বলেন যে, তদন্তকারী সংস্থা তার মক্কেলদের বিরুদ্ধে আদালতে উপযুক্ত প্রমান সাক্ষ্য প্রমাণ দিতে ব্যর্থ হওয়ায় তারা বিচারে নির্দোষ হিসাবে মুক্তি পেয়েছে। খোঁড়া বাদশার আইনজীবী আবু বক্কর ঢালী এই মামলার রায়ে খুশি নন। তিনি এই রায়ের বিরুদ্ধে কলকাতা উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলে জানিয়েছেন। সরকার পক্ষের বিশেষ আইনজীবী শান্তনু সরকার মূল অভিযুক্তর বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের দাবি জানালেও তিনি আদালতের এই রায়কে স্বাগত জানান।