সাইমন হোসেন, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ
ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় ঘর পোড়ানোর মামলা থেকে বাঁচতে ‘অলৌকিক আগুনের নাটক’ সাজিয়ে মানুষের মাঝে ভীতি সৃষ্টির অভিযোগে ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
গত ২ মে (রবিবার) তাদের আটক করে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা গুজব ছড়িয়ে অলৌকিক আগুনের নাটক সাজিয়েছিলেন বলে স্বীকার করেছেন।
ঠাকুরগাঁও ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আকরাম আলী বলেন, গত ১ মে শনিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার চাড়োল ইউনিয়নের ছোট সিঙ্গিয়া মুন্সিপাড়া গ্রাম থেকে তাদের আটক করা হয় এবং এর আগে গত ২৯ এপ্রিল বালিয়াডাঙ্গী থানায় সিঙ্গিয়া মুন্সিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা সালেহা বেগমের দায়েরকৃত মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
উক্ত ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- ছোট সিঙ্গিয়া মুন্সিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা সামসুজ্জোহা, এহেতাসাম উল্লাহ, মকসেদুল ইসলাম, ইন্তাজ আলী, দেলোয়ার হোসেন, কফিল উদ্দীন, ওবায়দুল্লাহ, তহিদুর রহমান, আজিম উদ্দীন চৌধুরী, মন্টু আলম, মেহেরুন নেছা ও বিলকিস আক্তার তাদের বয়স ৩১ বছর থেকে ৫৯ বছরের মধ্যে।
সালেহা বেগমের মামলার বিবরণী তে জানা যায়, গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর সালেহা বেগমের স্বামী মকবুল হোসেনের মৃত্যু হয় এরপর গ্রামের কিছু মানুষ মকবুল হোসেনের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন প্রকার গুজব রটায় এবং বাদীর পরিবারের লোকজনকে সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করে এ নিয়ে চলতি বছরের ২৮ মার্চ কে বা কারা সালেহা বেগমের চারটি গোয়ালঘর ও দুই বিঘা জমির গমে আগুন দেয়। ৬ এপ্রিল সালেহার চাচা সিরাজ উদ্দীনের খড় রাখার ঘরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় এতে বাদীর পরিবারের পাঁচ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।
মামলার এজাহারে আরও বলা হয়, গত ৮ এপ্রিল দুপুরে প্রতিবেশী ইনতাজ আলীর বাড়ির কাপড় কাঁচার বালতিতে আগুন ধরে- এমন মিথ্যা গুজব ছড়িয়ে বাদী ও তার পরিবারের লোকজনের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন গ্রামের কয়েকজন মানুষ তবে গ্রামবাসীর কছে বিষয়গুলো নিয়ে বাদী কথা বললে তারা এই গুজবের সত্যতা দেখাতে পারেনি এসব ঘটনার পরে ২৯ এপ্রিল সালেহা বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের আসামি করে বালিয়াডাঙ্গী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
পরে এ ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে মাঠে নামা ডিবি পুলিশের তদন্তকারী কর্মকর্তা আকরাম আলী বলেন, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সন্দেহ হলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১২ জনকে আটক করা হয়। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার সঙ্গে আটক ব্যক্তিদের সম্পৃক্ততা রয়েছে এমন কিছু তথ্য পাওয়া গেছে এজন্য তদেরকে সালেহা বেগমের দায়েরকৃত মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে সালেহা বেগমের দায়েরকৃত মামলা থেকে বাঁচতে গ্রামে অলৌকিক আগুনের সাজানো নাটক সাজানো হয়েছিল তাদের উদ্দেশ্যে ছিল মানুষের মাঝে ভীতি সৃষ্টি করা এবং সালেহা বেগমের জমি দখল করা।
এদিকে ২ মে রোববার বিকেলে গ্রেপ্তারকৃতদের ঠাকুরগাঁওয়ের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয় এ সময় গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আকরাম আলী তিনি বলেন, ‘মামলাটি তদন্তাধীন অবস্থায় রয়েছে আদালত তাদের রিমান্ড মঞ্জুর করলে ও মামলাটি তদন্ত শেষে হলে আরও অনেক রহস্য বেড়িয়ে আসতে পারে।