‘পরিবারকে আগেই বলে রেখেছি যে, আমার স্বপ্ন হলো ক্যারিয়ারের শেষ পর্যন্ত এই ক্লাবেই থাকা। সেটি আমি করতে চাই নিজের সেরা অবস্থায় থেকে’, বার্সেলোনার সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ আরও এক বছর বাড়িয়ে নেওয়ার পর এভাবেই নিজের প্রতিক্রিয়া জানালেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড রাফায়ের রাফিনিয়া। অবশ্য তার সঙ্গে কাতালানদের চুক্তি ছিল ২০২৭ সালের জুন পর্যন্ত, যা এখন গিয়ে ঠেকেছে ২০২৮–এ।
চলতি মৌসুমে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা এই সেলেসাও তারকা বার্সেলোনার হয়ে ৫৬ ম্যাচে ৩৪ গোল ও ২৫টি অ্যাসিস্ট করেছেন। যা হ্যান্সি ফ্লিকের দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম মৌসুমেই কাতালানদের তিনটি ঘরোয়া শিরোপা জিততে ভূমিকা রেখেছে। ঘরোয়া ট্রেবল পূর্ণ হয়েছে লা লিগা, কোপা দেল রে এবং স্প্যানিশ সুপার কাপ জয়ের মাধ্যমে। আর প্রতিটিতেই তারা দাপট দেখিয়ে হারিয়েছে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদকে।
ক্লাবের সঙ্গে সম্পর্কটা আরও একটু বাড়িয়ে নিয়ে রাফিনিয়া বলছেন, ‘আমার জন্য এটা খুবই তৃপ্তিদায়ক ও দারুণ স্পেশাল। খুবই খুশি আমি এবং এই ক্লাবে আসার পর থেকেই আমার সবচেয়ে বড় ব্যক্তিগত চাওয়া ছিল সমর্থকদের আনন্দ উপহার দেওয়া। আমি এখন রাফিনিয়া, একজন বাবা, একইসঙ্গে অধিনায়কও। যখন প্রথমবার ব্লুগ্রানায় আসি, সেই সময়ের চেয়ে এখন আমার ওপর অনেক দায়িত্ব। প্রতি বছরই আমার মাঝে ম্যাচুরিটি এসেছে, আগের চেয়ে আমি অনেক পরিণত হয়েছি।’
স্বপ্নের ক্লাবের সঙ্গে নতুন এই চুক্তির খবরটি নিজের ইনস্টাগ্রামে জানিয়েছেন রাফিনিয়ার স্ত্রী নাতালিয়া বেল্লোলি। সঙ্গে জুড়ে দেওয়া ছবিতে বার্সেলোনা সভাপতি হুয়ান লাপোর্তা ও নাতালিয়ার মাঝে সন্তান কোলে দাঁড়িয়ে রাফিনিয়া। সবাই মিলে ধরে রেখেছেন রাফিনিয়ার জার্সি, যাতে লেখা ২০২৮। এর মানে কী সেটি আর খোলাসা করে বলতে হয়নি সেলেসাও তারকার স্ত্রীকে। তবে আরেকটু সম্পর্কের গভীরতা বোঝাতে ক্যাপশন লিখেছেন– ‘আমাদের ঘর।’
যদিও নতুন করে এই চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর কথা নাকি আগে জানতেনই না রাফিনিয়া। কিন্তু ক্লাবের এই আস্থার প্রতিদান দিতে পূর্ণ নিবেদন দেওয়ার কথা জানালেন ২৮ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড, ‘ক্লাবের পক্ষ থেকে এই নতুন প্রস্তাব আমি প্রত্যাশা করিনি। অনুশীলন কিংবা ম্যাচে এ জার্সির জন্য আমি সর্বস্ব নিংড়ে দেব।’
এর আগে ২০২২ সালে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব লিডস ইউনাইটেডের দুই মৌসুম কাটিয়ে বার্সায় যোগ দেন রাফিনিয়া। প্রথম দুই মৌসুম মিলিয়ে ১৩ গোল করা এই তারকাকে বিক্রি করে দেওয়া হতে পারে বলে গুঞ্জনও উঠেছিল। কিন্তু সেই দৃশ্য বদলে যায় জার্মান কোচ ফ্লিকের আগমনে। কেবল লা লিগায় ১৮ গোল করে শিরোপা জেতায় অগ্রণী ভূমিকা রাখেন রাফিনিয়া। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে করলেন ১৩ গোল ও ৯ অ্যাসিস্ট। যা তাকে আসন্ন ব্যালন ডি’অরের দৌড়েও সামনের কাতারে রেখেছে। এক্ষেত্রে তাকে লড়তে হবে ক্লাব সতীর্থ লামিনে ইয়ামাল পিএসজির উসমান দেম্বেলের সঙ্গে।