Dhaka ০৬:৫০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ মে ২০২৫, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম:
আনচেলত্তির ব্রাজিল স্কোয়াডের তথ্য ফাঁস, প্রথম সারিতে নেইমারসহ ৮ তারকা বিএনপি গায়ের জোরে নগর ভবন বন্ধ করে আন্দোলন করছে : উপদেষ্টা আসিফ উপদেষ্টার কক্ষের সামনে কর্মচারীদের অবস্থান, আশ্বাসে স্থান ত্যাগ ১০ হাজারেরও বেশি হয়রানিমূলক রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যানের অস্থাবর সম্পদ ফ্রিজ রাতের মধ্যে ১৪ অঞ্চলে ঝড়ের আভাস নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতের ক্ষেত্রে সক্ষমতার ঘাটতি রয়েছে : খাদ্য উপদেষ্টা নগদের ২০০০ কোটি আত্মসাৎ, পুরোনো ম্যানেজমেন্টের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ২৪ ঘণ্টায় বিশেষ অভিযানে গ্রেপ্তার আরও ১৪১৫ বিশ্বরেকর্ড গড়ে শাকিলের এভারেস্ট জয়

বাংলাদেশ থেকে পণ্য আমদানিতে কড়াকড়ি, ক্ষতির মুখে পড়বে ভারত নিজেও

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৫:০৫:১৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৯ মে ২০২৫
  • ২৪ Time View

নিজেদের স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশি পোশাকসহ বেশ কিছু পণ্য প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ভারত। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্তে ক্ষতির মুখে পড়বে খোদ নিজেরাই।

মূলত ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এই সিদ্ধান্তে পশ্চিমবঙ্গে কর্মসংস্থান এবং পরিবহন খাতে প্রভাব পড়তে পারে। তবে কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মকর্তারা বলছেন, বাংলাদেশ থেকে পণ্য আমদানিতে কড়াকড়ির ফলে সীমান্ত রাজ্যে প্রভাব পড়লেও তাদের কাছে জাতীয় স্বার্থই বড়।

ভারতীয় বার্তাসংস্থা পিটিআইয়ের বরাত দিয়ে রোববার (১৮ মে) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, বাংলাদেশ থেকে কিছু নির্দিষ্ট পণ্যের স্থলবন্দর দিয়ে আমদানিতে কড়াকড়ি আরোপের ফলে পশ্চিমবঙ্গে কর্মসংস্থান এবং পরিবহন খাতে প্রভাব পড়তে পারে। তবে জাতীয় স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে রোববার জানিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মকর্তারা।

এর আগে গত শনিবার ভারত সরকার একটি নির্দেশিকায় বাংলাদেশ থেকে প্রস্তুত তৈরি পোশাক ও প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যের মতো কিছু পণ্যের আমদানিতে নির্দিষ্ট বন্দর ব্যবহার বাধ্যতামূলক করে। এর মাধ্যমে মূলত স্থলবন্দর দিয়ে এ ধরনের পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ করা হয়।

এর প্রতিক্রিয়ায় বলা হয়, সম্প্রতি বাংলাদেশও ভারতীয় কিছু পণ্যের ওপর অনুরূপ বিধিনিষেধ আরোপ করেছে।

পশ্চিমবঙ্গের পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্টস স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের (পিসিএএসডব্লিউএ) সদস্য কার্তিক চক্রবর্তী জানান, “ভারত তৃতীয় দেশের ট্রান্সশিপমেন্ট নিষিদ্ধ করার পরেও প্রতিদিন ২০-৩০টি ট্রাকে তৈরি পোশাক আসত। এই নতুন নির্দেশনার ফলে তা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে। আগে যখন ট্রান্সশিপমেন্ট চালু ছিল, তখন ৬০-৮০টি ট্রাক পোশাক নিয়ে প্রবেশ করত।”

তিনি আরও বলেন, এই নিষেধাজ্ঞার ফলে সীমান্ত এলাকায় কর্মরত চালক, হেলপার ও অন্যান্য লজিস্টিক কর্মীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

এনডিটিভি বলছে, নাম প্রকাশ না করে একজন বাণিজ্য বিশেষজ্ঞ বলেন, “বাংলাদেশের তৈরি পোশাক কম দামে ভারতীয় খুচরা বাজারে ঢুকে পড়ছে, যার ফলে অনেক সময় দেশীয় শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কিছু ক্ষেত্রে এগুলোকে ‘ডাম্পিং’ও বলা যেতে পারে।”

তিনি আরও বলেন, এই পদক্ষেপ কৌশলগত সিদ্ধান্ত হতে পারে, যার সঙ্গে জাতীয় স্বার্থ ও সাম্প্রতিক ভূ-রাজনৈতিক পরিবর্তনের (যেমন: ঢাকা-ইসলামাবাদ সম্পর্ক) সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে। তার মতে, “অর্থনৈতিক প্রভাব বা ক্ষতির আশঙ্কা থাকলেও জাতীয় স্বার্থের গুরুত্ব বেশি।”

নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, তৈরি পোশাক এখন থেকে শুধুমাত্র নাভাশেবা এবং কলকাতা সমুদ্রবন্দর দিয়ে আমদানি করা যাবে। কোনও স্থলবন্দর দিয়ে এই পণ্য ঢুকবে না।

অন্যদিকে, ফলমূল, ফল-স্বাদযুক্ত পানীয়, কার্বনেটেড ড্রিংকস, প্রক্রিয়াজাত খাবার (যেমন: বিস্কুট, চিপস, কনফেকশনারি), তুলা ও তুলা বর্জ্য, প্লাস্টিকজাত ও পিভিসি পণ্য, ডাইস, প্লাস্টিসাইজার, গ্র্যানুলস ও কাঠের আসবাব— এসব পণ্যের আমদানি আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরামের এলসিএস (ল্যান্ড কাস্টমস স্টেশন) এবং পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্ধা ও ফুলবাড়ি এলসিএস দিয়ে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

কার্তিক চক্রবর্তী জানান, সমুদ্রপথে পণ্য আনতে প্রায় দুই সপ্তাহ সময় লাগে, যেখানে স্থলপথে সময় লাগে মাত্র ৩-৪ দিন। ফলে ব্যবসায়ীরা সমুদ্রপথে পণ্য আনতে উৎসাহী নন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

আনচেলত্তির ব্রাজিল স্কোয়াডের তথ্য ফাঁস, প্রথম সারিতে নেইমারসহ ৮ তারকা

বাংলাদেশ থেকে পণ্য আমদানিতে কড়াকড়ি, ক্ষতির মুখে পড়বে ভারত নিজেও

Update Time : ০৫:০৫:১৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৯ মে ২০২৫

নিজেদের স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশি পোশাকসহ বেশ কিছু পণ্য প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ভারত। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্তে ক্ষতির মুখে পড়বে খোদ নিজেরাই।

মূলত ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এই সিদ্ধান্তে পশ্চিমবঙ্গে কর্মসংস্থান এবং পরিবহন খাতে প্রভাব পড়তে পারে। তবে কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মকর্তারা বলছেন, বাংলাদেশ থেকে পণ্য আমদানিতে কড়াকড়ির ফলে সীমান্ত রাজ্যে প্রভাব পড়লেও তাদের কাছে জাতীয় স্বার্থই বড়।

ভারতীয় বার্তাসংস্থা পিটিআইয়ের বরাত দিয়ে রোববার (১৮ মে) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, বাংলাদেশ থেকে কিছু নির্দিষ্ট পণ্যের স্থলবন্দর দিয়ে আমদানিতে কড়াকড়ি আরোপের ফলে পশ্চিমবঙ্গে কর্মসংস্থান এবং পরিবহন খাতে প্রভাব পড়তে পারে। তবে জাতীয় স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে রোববার জানিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মকর্তারা।

এর আগে গত শনিবার ভারত সরকার একটি নির্দেশিকায় বাংলাদেশ থেকে প্রস্তুত তৈরি পোশাক ও প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যের মতো কিছু পণ্যের আমদানিতে নির্দিষ্ট বন্দর ব্যবহার বাধ্যতামূলক করে। এর মাধ্যমে মূলত স্থলবন্দর দিয়ে এ ধরনের পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ করা হয়।

এর প্রতিক্রিয়ায় বলা হয়, সম্প্রতি বাংলাদেশও ভারতীয় কিছু পণ্যের ওপর অনুরূপ বিধিনিষেধ আরোপ করেছে।

পশ্চিমবঙ্গের পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্টস স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের (পিসিএএসডব্লিউএ) সদস্য কার্তিক চক্রবর্তী জানান, “ভারত তৃতীয় দেশের ট্রান্সশিপমেন্ট নিষিদ্ধ করার পরেও প্রতিদিন ২০-৩০টি ট্রাকে তৈরি পোশাক আসত। এই নতুন নির্দেশনার ফলে তা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে। আগে যখন ট্রান্সশিপমেন্ট চালু ছিল, তখন ৬০-৮০টি ট্রাক পোশাক নিয়ে প্রবেশ করত।”

তিনি আরও বলেন, এই নিষেধাজ্ঞার ফলে সীমান্ত এলাকায় কর্মরত চালক, হেলপার ও অন্যান্য লজিস্টিক কর্মীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

এনডিটিভি বলছে, নাম প্রকাশ না করে একজন বাণিজ্য বিশেষজ্ঞ বলেন, “বাংলাদেশের তৈরি পোশাক কম দামে ভারতীয় খুচরা বাজারে ঢুকে পড়ছে, যার ফলে অনেক সময় দেশীয় শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কিছু ক্ষেত্রে এগুলোকে ‘ডাম্পিং’ও বলা যেতে পারে।”

তিনি আরও বলেন, এই পদক্ষেপ কৌশলগত সিদ্ধান্ত হতে পারে, যার সঙ্গে জাতীয় স্বার্থ ও সাম্প্রতিক ভূ-রাজনৈতিক পরিবর্তনের (যেমন: ঢাকা-ইসলামাবাদ সম্পর্ক) সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে। তার মতে, “অর্থনৈতিক প্রভাব বা ক্ষতির আশঙ্কা থাকলেও জাতীয় স্বার্থের গুরুত্ব বেশি।”

নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, তৈরি পোশাক এখন থেকে শুধুমাত্র নাভাশেবা এবং কলকাতা সমুদ্রবন্দর দিয়ে আমদানি করা যাবে। কোনও স্থলবন্দর দিয়ে এই পণ্য ঢুকবে না।

অন্যদিকে, ফলমূল, ফল-স্বাদযুক্ত পানীয়, কার্বনেটেড ড্রিংকস, প্রক্রিয়াজাত খাবার (যেমন: বিস্কুট, চিপস, কনফেকশনারি), তুলা ও তুলা বর্জ্য, প্লাস্টিকজাত ও পিভিসি পণ্য, ডাইস, প্লাস্টিসাইজার, গ্র্যানুলস ও কাঠের আসবাব— এসব পণ্যের আমদানি আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরামের এলসিএস (ল্যান্ড কাস্টমস স্টেশন) এবং পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্ধা ও ফুলবাড়ি এলসিএস দিয়ে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

কার্তিক চক্রবর্তী জানান, সমুদ্রপথে পণ্য আনতে প্রায় দুই সপ্তাহ সময় লাগে, যেখানে স্থলপথে সময় লাগে মাত্র ৩-৪ দিন। ফলে ব্যবসায়ীরা সমুদ্রপথে পণ্য আনতে উৎসাহী নন।