মহামারী করোনা ভাইরাসের কারণে গত মার্চ থেকে অচল হয়ে পড়ে দেশের ক্রিকেট। আট মাস পর অবশ্য প্রেসিডেন্টস কাপ দিয়ে দেশের মাটিতে ক্রিকেট ফেরায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
এখন বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপ দিয়ে দেশে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফেরানোর চেষ্টাও অব্যাহত।
টুর্নামেন্টটিকে দেশে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফেরানোর ড্রেস-রিহার্সেলও বলা চলে। কারণ আগামী জানুয়ারিতে বাংলাদেশ সফরে আসার কথা রয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের। তবে চাইলেই বাংলাদেশ সফরে আসতে পারবে না কোনও দল, এমনকি বাংলাদেশও কোনও দেশে সফর করতে পারবে না। কারণ করোনার জন্য সারা বিশ্বই এখন সতর্ক।
তাইতো জাতীয় দলকে বাংলাদেশে পাঠানোর আগে এখানকার সুরক্ষা-বলয় পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে আসে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ডের দুই সদস্যের এক প্রতিনিধি দল। প্রস্তাবিত দু’টি ভেন্যু ঢাকা-চট্টগ্রাম এবং কড়া স্বাস্থ্যবিধি ও সুরক্ষা-বলয় পর্যবেক্ষণ শেষে সন্তোস প্রকাশ করেছে উইন্ডিজ প্রতিনিধি দল।
গত শনিবার ঢাকায় আসেন ক্যারিবিয় প্রতিনিধি দলের দুই সদস্য ড. অক্ষয় মানসিং এবং পল স্লোওয়ে। আক্ষয় মানসিং আইসিসি এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের মেডিকেল দলের সদস্য ও বোর্ডের পরিচালক। আর পল হলেন দলের নিরাপত্তা ম্যানেজার।
পর্যবেক্ষণ শেষে মানসিং বলেন, ‘বাংলাদেশের সার্বিক ব্যবস্থাপনা ও পরিকল্পনায় আমরা সন্তুষ্ট। সময় বদলাতে শুরু করেছে। সবাই এখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরতে আগ্রহী। আগামী বছরের শুরুতে বাংলাদেশ সফর সম্ভব কিনা, সেটি দেখতেই আমরা এখানে এসেছি। বলতেই হবে, বিসিবি যে প্রোটোকলের কথা আমাদের জানিয়েছে, তা বেশ সন্তোসজনক। ঢাকা ও চট্টগ্রমে যা দেখেছি, আমরা তাতে খুশি। এখানকার পরিস্থিতি ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজের পরিচালকদের জানাবো। এখানে যে ব্যবস্থাপনা আমরা দেখেছি, তা বিশ্বের যে কোনও জায়গার মতোই ভালো।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এখানে আসার আগে বেশ কয়েকটি বৈঠক করেছি এবং বিসিবির প্রোটোকল সম্পর্কে শুনেছি, যা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। বিসিবি আমাদেরকে প্রোটোকলসমূহের যে বর্ণনা দিয়েছে, সেগুলো দারুণ ছিলো। আমাদের আসার আগে তাদের দু’টি টুর্নামেন্ট হয়েছে এবং একটি চলমান। সুতরাং জৈব সুরক্ষা বলয় তৈরি করতে পুরোপুরি প্রস্তুত তারা। যে হাসপাতাল ও হোটেলগুলোয় আমরা গিয়েছি, সেগুলো কোভিড-১৯-এর জন্য আন্তর্জাতিক মানের। তাই স্বাস্থ্যগত দিক বিবেচনায় আমরা খুবই খুশি।’
কোয়ারেন্টাইন ও কোভিড প্রটোকল নিয়েও কথা বলেন মানসিং। তিনি বলেন, ‘এখানে আসার আগে একবার কোভিড-১৯ পরীক্ষায় নেগেটিভ হয়ে আসতে হবে। আসার পর আরও তিন দফায় পরীক্ষা হবে। প্রটোকল অনুযায়ী- ৭ দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। এর মধ্যে তিন দিন থাকতে হবে কক্ষেই। তৃতীয় দিনের পর দ্বিতীয় দফা কোভিড পরীক্ষায় নেগেটিভ হলে আমাদের অনুশীলনের সুযোগ মিলবে, তবে সেটি কেবল নিজেদের মধ্যেই। ৭ দিন না হওয়া পর্যন্ত বাইরের কারও সংস্পর্শে আসা যাবে না। ৭ দিন পর আমরা বাংলাদেশের ছেলেদের সাথেও নেট সেশন করতে পারবো।’
সুতরাং, সবকিছু ঠিক থাকলে জানুয়ারিতে বাংলাদেশে আসবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল। সফরে তিনটি টেস্ট, তিনটি ওয়ানডে ও দু’টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার কথা দু’দলের।