মোহাম্মদ রফিক, বাংলাদেশের ক্রিকেটের এক উজ্জ্বল নক্ষত্রের নাম। ১৯৭০ সালের ৫ সেপ্টেম্বর পুরান ঢাকায় জন্ম নিয়েছিলেন এই বিস্ময় অলরাউন্ডার। আজ তিনি জীবনের ৫০ বছর পূর্ণ করলেন। রফিকের জন্মদিনে ‘সুপ্রভাত উত্তরবঙ্গ  ’ পরিবারের পক্ষ থেকে রইল অফুরন্ত শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। শুভ জন্মদিন মোহাম্মদ রফিক।

১৯৯৭ সালের আইসিসি কাপ জয়ী দলের সদস্য রফিক। সেই টুর্নামেন্টে ৯ ম্যাচে ১০.৬৮ গড়ে ১৯ উইকেট নিয়েছিলেন। তার সেরা ২৫ রানে ৪ উইকেট এসেছিল সেমিফাইনালে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে। বাংলাদেশের প্রথম বোলার হিসেবে টেস্টে ১০০ উইকেট অর্জনের কীর্তি তার।

টেস্ট ও ওয়ানডেতে এক হাজার রান ও ১০০ উইকেটের ডাবল ছোঁয়া প্রথম বাংলাদেশি বোলার। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তিনি আমাদের প্রথম অলরাউণ্ডার ক্রিকেটার। ব্যাটিং করতেন মারকুটে স্বভাবে।

২০০৩ সালের সেপ্টেম্বরে মুলতানে পাকিস্তানকে হারিয়েই দিয়েছিলেন তিনি। অমানুষের ভাগাড় পাকিস্তানের খেলোয়াড়েরা একাধিক চৌর্যবৃত্তি করলেও, মোহাম্মদ রফিক দেখিয়েছিলেন উদারতা। ১৬ বছর আগের সেই টেস্ট আমাদের নৈতিকতার বিজয় বলেই চিহ্নিত হবে।

আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে ৩৩ টেস্ট ও ১২৫ ওয়ানডে খেলেছেন তিনি। ২০০০ সালে ভারতের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষিক্ত হয়েছিলেন, ১৯৯৫ সালের ওয়ানডে অভিষেকেও প্রতিপক্ষ ছিল ভারত। আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে ৩৩ টেস্ট ও ১২৫ ওয়ানডে খেলেছেন রফিক। টেস্টে তাঁর বোলিং গড় ৪০.৭৬ ও ওয়ানডেতে বোলিং গড় ৩৭.৯১ ।

প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার কমতি ছিল এবং তা লুকোবার কোনো অপচেষ্টা করেননি। আইসিসি কাপ জেতার পর সরকারিভাবে উপহার পেয়েছিলেন ৫ কাঠা জমি ও গাড়ি। রফিক এ উপহার নিয়ে কি করলেন তা অনেকেরই অজানা।

কেননা, ঘটনাটি মিডিয়াতে তেমনভাবে আসেনি। যে মিডিয়া দিনকে রাত ও রাতকে দিন বানাচ্ছে সেই মিডিয়ার কাছে মোহাম্মদ রফিকের এই অসামান্য মানবিক কাজটি গুরুত্ব পায়নি আজ পর্যন্ত।

রফিক তার নিজের উপহারের অংশ দান করেন, নিজ এলাকায় স্কুল নির্মাণের জন্য। গাড়ি বিক্রি করে সেই টাকা দিয়ে স্কুল-ঘর তুলে দিয়েছিলেন। রফিকের ভাষায়, ভাই আমি তো লেখাপড়া কিছু শিখি নাই, আমি খুব গরীব ঘরের ছেলে ছিলাম। লেখাপড়ার গুরুত্ব আমি বুঝি। আমার এলাকার ছেলে-মেয়েরা যেন লেখাপড়া শিখে মানুষ হয় এবং সমাজে মাথা উঁচু করে দাঁড়ায় সেজন্যই এই কাজ করেছি।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে