সুবীর মণ্ডল, বাঁকুড়া জেলা প্রতিনিধি:

বাঁকুড়া  সম্মিলনী মেডিকেল কলেজে চর্মরোগ  চিকিৎসায়  লেজার  চিকিৎসা  শুরু  হতে চলেছে। জঙ্গলমহলের  চিকিৎসা  ব্যবস্থায় নতুন  দিগন্ত খুলে যাবে বলে  মনে করেন জেলার  আপামর জনসাধারণ।   বাঁকুড়ার ২২টি ব্লকের লক্ষ লক্ষ  মানুষ দীর্ঘদিন ধরে  প্রতীক্ষায় ছিল। আজ হাতের মুঠোয় আধুনিক প্রযুক্তির  নির্ভর চিকিৎসা।  নিঃসন্দেহে  একটি অসাধারণ মানবিক ভাবনার বাস্তবায়নের পথ সুগম  হতে চলেছে, এই উদ্যোগ  অত্যন্ত  প্রসংশনীয়।

জন্মগতভাবে বা অন্য কোন কারণে মুখ ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে লাল কালো দাগ বা জড়ুলের সমস্যার সমাধানে, অত্যাধুনিক লেজার অস্ত্রোপচার পদ্ধতি চালু হল বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে। বেশ কয়েকটি জেলার মানুষকে কলকাতায় গিয়ে  বহু অর্থ খরচ করে আর চিকিৎসা করতে যেতে হবে না ।সাধারণ মানুষের কাছে এক পরম প্রাপ্তি

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, কলকাতার বাইরে, জেলায় এমন সুযোগ প্রথমবার পেতে চলেছেন সাধারণ মানুষ। এর সাহায্যে অনেক সমস্যারই স্থায়ী সমাধান করা যাবে বলে দাবি করেছেন  সংশ্লিষ্ট বিভাগের  চিকিৎসকরা।

বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজের বহির্বিভাগে চর্মরোগ শাখায় প্রতিদিনই গড়ে ৬০০-এর বেশি রোগী চিকিৎসা করাতে আসেন। এই হাসপাতালের চর্মরোগ বিভাগের  সুনাম বহুদিনের।     সেই কারণেই  ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা নিয়ে শুধুমাত্র বাঁকুড়া জেলা নয়, পার্শ্ববর্তী পুরুলিয়া,ঝাড়গ্রাম,পশ্চিম বর্ধমান,পুর্ব বর্ধমানের একাংশ, পশ্চিম মেদিনীপুরের একাংশ এমনকি পার্শ্ববর্তী রাজ্য ঝাড়খণ্ড থেকেও প্রতিদিন রোগীরা বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে ভিড় জমান। বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজের চর্ম রোগ বিভাগের চিকিৎসকদের দাবি এই বিপুল সংখ্যক রোগীর প্রায় দশ শতাংশ রোগী আসেন মূলত মুখে জড়ুল বা লাল-কালো দাগ এর সমস্যা সমাধানের আশায় । এ ছাড়াও কিছু সংখ্যক মহিলা রোগী আসেন যাঁদের পুরুষদের মতো গোঁফ দাড়ি গজিয়ে ওঠে। এই ধরনের অসুখগুলির চিকিৎসার ক্ষেত্রে এতদিন চর্মরোগ বিভাগের চিকিৎসকদের ভরসা করতে হত গুটিকয়েক মলম ও ওষুধের উপরে। এর ফলে এই ধরনের সমস্যা সমাধানে যেমন অনেক বেশি সময় লাগত তেমনই অনেক ক্ষেত্রে সমস্যাগুলি পুরোপুরি নির্মূল করা সম্ভব হত না। এই সমস্যা সমাধানের উদ্যেশ্যেই এ বার বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজের চর্ম বিভাগে শুরু হতে চলেছে অত্যাধুনিক লেজার সার্জারি।  বাঁকুড়া  সম্মিলনী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ডাঃ  পার্থপ্রতিম প্রধান  অত্যন্ত    গর্বের সঙ্গে  জানালেন , “আমাদের  মেডিকেল কলেজের  এ-এক বড় সাফল্য। বহু  মানুষের  উপকার করতে  পারা যাবে। ” সারা জেলা  জুড়ে  খুশির আনন্দ। বহু দিন  বাদে আধুনিক  প্রযুক্তি  নির্ভর  চিকিৎসার  সুযোগ   বাঁকুড়া জেলা ছাড়াও ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর   এবং  প্রতিবেশী  রাজ্য  ঝাড়খণ্ডের মানুষও পাবেন এবং     সেই সাথে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানুষগণ  উপকৃত হবেন। যাদের  পক্ষে কলকাতায় গিয়ে বহু অর্থ খরচ করা স্বপ্ন।

এই উদ্দেশ্যে ইতিমধ্যেই ওই হাসপাতালের চর্ম বিভাগে বসানো হয়েছে অত্যাধুনিক লেজার যন্ত্র । চিকিৎসকদের দাবি, জন্মগত ভাবে বা অন্য কোনো কারনে মুখ ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে তৈরি হওয়া লাল, কালো দাগ ও জরুল নির্মূল করার ক্ষেত্রে বা ‘হার্সিডিসম’-এর চিকিৎসায় মন্ত্রের মতো কাজ করবে এই অত্যাধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি ।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে