সুবীর মণ্ডল , বাঁকুুুড়া জেলা প্রতিনিধি:
পশ্চিমবঙ্গে একজন বিধায়কের মাইনে প্রায় ৮২ হাজার টাকা। কিন্তু চন্দনা বাউরী… যার সারা জীবনের সঞ্চয় মাত্র ৩২ হাজার টাকা….তার কাছে এত টাকা…প্রয়োজনের অনেক বেশী বলে মনে হয়েছে।
তাই তো সে নির্দ্বিধায় বলে দিতে পারে….অতো টাকা মাইনে নিয়ে আমি কি করবো..যাতে ওই অতিরিক্ত টাকায় গ্রামের মানুষ গুলোর কাজ হয় সেই চেষ্টাই করবো। এ- এক অনন্য নজির পশ্চিমবঙ্গের ইতিহাসে। বসবাসের একটা
ঘর নেই। দুবেলা খাবার জোগাড় করতে হিমশিম খেতে হয়। বড় ধরনের স্বপ্ন দেখে না। শহুরে সাংবাদিক যখন তাকে বলে একটা গাড়ি কিনে নিন….সে তাই মুখের পরে বলে দিতে পারে…আমার স্বামীর মটোর সাইকেল আছে ওতেই কাজ হয়ে যাচ্ছে। গাড়ি চাই না।
-বাড়িতে টিভি নেই….একটা টিভি কিনবেন না কি??
-ভোটের আগে মোবাইল কিনেছি…. ওতেই টিভির কাজ হয়ে যাচ্ছে। টিভি লাগবে না।
তবে একটা এম্বুল্যান্স কেনা যেতে পারে। কিন্তু তারও তো অনেক দাম এখন তো পারবো না।
– ই এম আই তে কিনে নিন।
শহরে সাংবাদিকের কাছে ই এম আই শুনে পিছিয়ে আসেন, কারন স্বাভাবিক ভাবেই এগুলো তার চেনা জগতের বাইরের শব্দ।
তাই বলে দেন…সাংসদ ডাক্তারবাবুর সাথে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেবেন। অত টাকা মাইনে তার লাগবে না। প্রয়োজনের অনেক অতিরিক্ত।
আমরা সবাই মনে প্রানে চাই…যে দলেরই হোক…চন্দনা বাউরীদের মতন মানুষেরা আরও বেশী করে উঠে আসুক রাজনীতিতে। কারন এরা মাটির অনেক কাছে থাকে। মাটির কাছাকাছি মানুষের সুখ- দুঃখের নিত্য সাথী।অভাবে স্বভাব নষ্ট করতে চায় না। ছোট ছোট স্বপ্ন দেখে, আমার সন্তান যেন থাকে দুধে ভাতে। মানুষের সাথে মানুষের কাছে থাকতে চান।আকাশ ছোঁয়া কোন প্রত্যশা নেই । এরা জানে মাটির সমস্যা গুলো কোথায়। এরা বড় বড় পুঁথি পড়ে কিংবা টিভিতে মুখ দেখিয়ে কিংবা বংশগত অধিকারে রাজনীতিতে আসেননি। এসেছেন ওই মাটির যন্ত্রণা মেখে বড় হয়ে।
আরও চন্দনা বাউরীদের আমরা দেখতে চাই। কারন গনতন্ত্রের ভিত্তিভূমি এদের শিঁড়দাঁড়াতেই পা রেখে দাঁড়িয়ে আছে আমাদের দেশে। তবুও এই মানুষেরাই সবচেয়ে বঞ্চিত। বাঁকুুুড়া জেলার প্রতিনিধি হিসাবে জেলার মানুষ গর্বিত।