Dhaka ০৪:৫৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৩ এপ্রিল ২০২৫, ১৯ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বর্ষায় অ্যালার্জি থেকে শিশুদের যেভাবে সুস্থ রাখবেন

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৪:৪৮:০৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৪
  • ২৫ Time View

বর্তমান সময়ে আমাদের দেশে অ্যালার্জি একটি কমন সমস্যায় পরিণত হয়েছে। দেশের লাখ লাখ মানুষের কাছে এ এক অসহনীয় ব্যাধি। অ্যালার্জিতে হাঁচি থেকে শুরু করে খাদ্য ও ওষুধের ভীষণ প্রতিক্রিয়া ও শ্বাসকষ্ট হতে পারে। কারও কারও ক্ষেত্রে অ্যালার্জি সামান্যতম অসুবিধা করে, আবার কারও ক্ষেত্রে অ্যালার্জি জীবনকে দুর্বিষহ কর তোলে।

বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে এই সমস্যাটি বর্তমানে প্রকটভাবে দেখা দিচ্ছে। অনেক সময় দেখা যায় অভিভাবকরা শনাক্ত করতে পারেন না বাচ্চাদের এই সমস্যাটি। তবে কয়েকটি উপসর্গ জানান দেয় যে, শিশু অ্যালার্জির সমস্যায় আক্রান্ত। সেগুলো কী? শিশুর ত্বকে যদি ধারাবাহিকভাবে ফুসকুড়ি, চুলকানির সমস্যা চলতেই থাকে, তা হলে সতর্ক হতে হবে। এছাড়াও ক্রমাগত হাঁচি বা শ্বাসকষ্ট হলেও সতর্ক থাকতে হবে। বাড়িতে কারো যদি অ্যালার্জি থাকে, তাহলে এ ধরনের উপসর্গ দেখা দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে শিশুকে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে নিয়ে যেতে হবে।

বর্তমানে শিশুকে রোগমুক্ত রাখতে মা-বাবারা বেশি সতর্কতা অবলম্বন করেন। যার ফলে, শিশুদের শরীরে ‘ইমিউনিটি সিস্টেম’ ঠিক মতো কাজই করে না। খুব সহজেই শিশুরা নানা ধরনের অ্যালার্জি অ্যাটাকের শিকার হয়। রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা তাদের শরীরে তৈরিই হয় না।

অ্যালার্জির ভিন্নতা রয়েছে। অ্যালার্জির কিছু উৎস ঘরের ভেতরেই রয়েছে, অন্যগুলো বাইরে। সারাবছরই ঘরে জমা ধুলা, কোনো বিশেষ খাবার, আরশোলা জাতীয় প্রাণির সংস্পর্শে অ্যালার্জি আক্রান্ত হতে পারে শিশু। তার প্রিয় পোষা প্রাণির লোম থেকেও ছড়াতে পারে অ্যালার্জি। এছাড়া বাতাসে ভাসমান ফুলের রেণু, ধূলিকণা থেকে অ্যালার্জিতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। বিভিন্ন খাবার থেকেও শিশুদের অ্যালার্জি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। দুধ, ডিম, বাদাম, চিংড়ি, কাঁকড়ার মতো খাবার থেকে অ্যালার্জি হতে পারে।

অনেকের ধারণা, অ্যালার্জি হলে শুধু ত্বকে র্যাশ বের হয়। এ ধারণা একেবারেই ভ্রান্ত। চিকিৎসকদের মতে, অ্যালার্জির নানা উপসর্গ দেখা দিতে পারে। যেমন সর্দিজ্বর আসতে পারে আপনার শিশুর। ডাক্তারি পরিভাষায় একে বলে ‘হে ফিভার’। হতে পারে শ্বাসকষ্টের সমস্যাও। অনেকের সমস্যা দেখা দেয় শুধু চোখে।

তবে সামান্য সতর্ক থাকলে আপনার শিশুকে অ্যালার্জি থেকে বাঁচাতে পারেন আপনিই। জানুন কয়েকটি পদ্ধতি:

১. বাড়িতে কোনো পোষা প্রাণি থাকলে, শুরু থেকে অবশ্যই তার সঙ্গে খেলতে দিন শিশুদের। এর ফলে শিশুর শরীরে প্রয়োজনীয় অ্যান্টিবডি তৈরি হবে।

২. শিশু যেন বিকেলে খোলা মাঠে বেড়ানোর বা দৌড়ঝাঁপ করে খেলার সুযোগ পায়। অযথা তাকে বাড়িতে বসিয়ে রাখবেন না।

৩. ছোট থেকেই সব ধরনের খাবার, ফল ও সবজি খাওয়ানো অভ্যাস করান শিশুকে। বয়স বাড়লে ফর্মুলা দুধের বদলে গরুর দুধ খাওয়ান তাকে। এর ফলে, খাদ্যজাত অ্যালার্জির হাত থেকে অনেকটাই মুক্ত থাকবে সে।

৪. অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় মা ভিটামিন ডি সেবন করলে শিশুদের মধ্যে অ্যালার্জির প্রবণতা কম হয়। শিশুদের জন্মের পর থেকেই মায়ের বুকের দুধ অত্যন্ত জরুরি। এর ফলে অনেক ধরনের অ্যালার্জির হারই কমে যায় শিশুদেহে।

৫. শিশুদের কাছাকাছি কোনোভাবেই ধূমপান উচিত নয়। এমনকি, অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় মাকেও ধূমপান না করার পরামর্শ দেয় চিকিৎসকেরা। বেশি মাত্রায় অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ খেলেও অ্যালার্জির সমস্যা হয়।

৬. ছোট থেকেই শিশুকে বেশি করে পানি খাওয়ার অভ্যাস করান। খাবারে আদা, গোলমরিচ, হলুদের মতো মশলার ব্যবহার বেশি করে করুন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

বর্ষায় অ্যালার্জি থেকে শিশুদের যেভাবে সুস্থ রাখবেন

Update Time : ০৪:৪৮:০৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৪

বর্তমান সময়ে আমাদের দেশে অ্যালার্জি একটি কমন সমস্যায় পরিণত হয়েছে। দেশের লাখ লাখ মানুষের কাছে এ এক অসহনীয় ব্যাধি। অ্যালার্জিতে হাঁচি থেকে শুরু করে খাদ্য ও ওষুধের ভীষণ প্রতিক্রিয়া ও শ্বাসকষ্ট হতে পারে। কারও কারও ক্ষেত্রে অ্যালার্জি সামান্যতম অসুবিধা করে, আবার কারও ক্ষেত্রে অ্যালার্জি জীবনকে দুর্বিষহ কর তোলে।

বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে এই সমস্যাটি বর্তমানে প্রকটভাবে দেখা দিচ্ছে। অনেক সময় দেখা যায় অভিভাবকরা শনাক্ত করতে পারেন না বাচ্চাদের এই সমস্যাটি। তবে কয়েকটি উপসর্গ জানান দেয় যে, শিশু অ্যালার্জির সমস্যায় আক্রান্ত। সেগুলো কী? শিশুর ত্বকে যদি ধারাবাহিকভাবে ফুসকুড়ি, চুলকানির সমস্যা চলতেই থাকে, তা হলে সতর্ক হতে হবে। এছাড়াও ক্রমাগত হাঁচি বা শ্বাসকষ্ট হলেও সতর্ক থাকতে হবে। বাড়িতে কারো যদি অ্যালার্জি থাকে, তাহলে এ ধরনের উপসর্গ দেখা দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে শিশুকে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে নিয়ে যেতে হবে।

বর্তমানে শিশুকে রোগমুক্ত রাখতে মা-বাবারা বেশি সতর্কতা অবলম্বন করেন। যার ফলে, শিশুদের শরীরে ‘ইমিউনিটি সিস্টেম’ ঠিক মতো কাজই করে না। খুব সহজেই শিশুরা নানা ধরনের অ্যালার্জি অ্যাটাকের শিকার হয়। রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা তাদের শরীরে তৈরিই হয় না।

অ্যালার্জির ভিন্নতা রয়েছে। অ্যালার্জির কিছু উৎস ঘরের ভেতরেই রয়েছে, অন্যগুলো বাইরে। সারাবছরই ঘরে জমা ধুলা, কোনো বিশেষ খাবার, আরশোলা জাতীয় প্রাণির সংস্পর্শে অ্যালার্জি আক্রান্ত হতে পারে শিশু। তার প্রিয় পোষা প্রাণির লোম থেকেও ছড়াতে পারে অ্যালার্জি। এছাড়া বাতাসে ভাসমান ফুলের রেণু, ধূলিকণা থেকে অ্যালার্জিতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। বিভিন্ন খাবার থেকেও শিশুদের অ্যালার্জি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। দুধ, ডিম, বাদাম, চিংড়ি, কাঁকড়ার মতো খাবার থেকে অ্যালার্জি হতে পারে।

অনেকের ধারণা, অ্যালার্জি হলে শুধু ত্বকে র্যাশ বের হয়। এ ধারণা একেবারেই ভ্রান্ত। চিকিৎসকদের মতে, অ্যালার্জির নানা উপসর্গ দেখা দিতে পারে। যেমন সর্দিজ্বর আসতে পারে আপনার শিশুর। ডাক্তারি পরিভাষায় একে বলে ‘হে ফিভার’। হতে পারে শ্বাসকষ্টের সমস্যাও। অনেকের সমস্যা দেখা দেয় শুধু চোখে।

তবে সামান্য সতর্ক থাকলে আপনার শিশুকে অ্যালার্জি থেকে বাঁচাতে পারেন আপনিই। জানুন কয়েকটি পদ্ধতি:

১. বাড়িতে কোনো পোষা প্রাণি থাকলে, শুরু থেকে অবশ্যই তার সঙ্গে খেলতে দিন শিশুদের। এর ফলে শিশুর শরীরে প্রয়োজনীয় অ্যান্টিবডি তৈরি হবে।

২. শিশু যেন বিকেলে খোলা মাঠে বেড়ানোর বা দৌড়ঝাঁপ করে খেলার সুযোগ পায়। অযথা তাকে বাড়িতে বসিয়ে রাখবেন না।

৩. ছোট থেকেই সব ধরনের খাবার, ফল ও সবজি খাওয়ানো অভ্যাস করান শিশুকে। বয়স বাড়লে ফর্মুলা দুধের বদলে গরুর দুধ খাওয়ান তাকে। এর ফলে, খাদ্যজাত অ্যালার্জির হাত থেকে অনেকটাই মুক্ত থাকবে সে।

৪. অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় মা ভিটামিন ডি সেবন করলে শিশুদের মধ্যে অ্যালার্জির প্রবণতা কম হয়। শিশুদের জন্মের পর থেকেই মায়ের বুকের দুধ অত্যন্ত জরুরি। এর ফলে অনেক ধরনের অ্যালার্জির হারই কমে যায় শিশুদেহে।

৫. শিশুদের কাছাকাছি কোনোভাবেই ধূমপান উচিত নয়। এমনকি, অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় মাকেও ধূমপান না করার পরামর্শ দেয় চিকিৎসকেরা। বেশি মাত্রায় অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ খেলেও অ্যালার্জির সমস্যা হয়।

৬. ছোট থেকেই শিশুকে বেশি করে পানি খাওয়ার অভ্যাস করান। খাবারে আদা, গোলমরিচ, হলুদের মতো মশলার ব্যবহার বেশি করে করুন।