বরেণ্য গীতিকার ও সুরকার আলাউদ্দিন আলী চলে গেলেন না ফেরার দেশে। (ইন্নালিল্লাহি… রাজিউন)। আজ রোববার বিকেল ৫টা ৫০ মিনিটে রাজধানীর মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৮ বছর।
হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. আশীষ কুমার চক্রবর্তী গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
দীর্ঘ দিন থেকে তিনি নানা অসুখে ভুগছিলেন। চিকিৎসার জন্য তিনি ব্যাংককও গিয়েছিলেন। পরীক্ষার পর জানা যায়, তার ফুসফুসে একটি টিউমার রয়েছে। এরপর তার অন্যান্য শারীরিক সমস্যার পাশাপাশি ক্যান্সারের চিকিৎসাও চলছিল। এর আগে বেশ কয়েক দফায় তাকে আয়েশা মেমোরিয়াল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।
দেশ-বিদেশে চিকিৎসা নিয়ে খানিকটা সুস্থ ছিলেন আলাউদ্দিন আলী। ফিরেছিলেন গানেও। তবে শনিবার (৮ আগস্ট) ভোর পৌনে ৫টায় হঠাৎ করে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। পরে তাকে মহাখালীর আয়েশা মেমোরিয়াল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তার শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখে লাইফ সাপোর্টে রাখার পরামর্শ দেন।
আজ রোববার চিকিৎসাধীন অবস্থায় আটবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারজয়ী এই গীতিকার ও সুরকার পৃথিবীর মায়া ছেড়ে চিরদিনের জন্য চলে যান। তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে আসে শোবিজ অঙ্গনে।
আলাউদ্দিন আলী ১৯৭৫ সাল থেকে সঙ্গীত পরিচালনা করে বেশ প্রশংসিত হন। ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’, ‘সুন্দরী’, ‘কসাই’ এবং ‘যোগাযোগ’ চলচ্চিত্রের জন্য ১৯৮৮ সালে শ্রেষ্ঠ সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।
এছাড়া ১৯৮৫ সালে তিনি শ্রেষ্ঠ গীতিকার হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। অসংখ্যা জনপ্রিয় গানের রচয়ীতা তিনি। তার সুর করা গানের সংখ্যা ৫ হাজারেরও বেশি।
গুণী এই মানুষের জন্ম ১৯৫২ সালের ২৪ ডিসেম্বর মুন্সিগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার বাঁশবাড়ি গ্রামে। তার বাবা ওস্তাদ জাদব আলী। মায়ের নাম জোহরা খাতুন।
‘একবার যদি কেউ ভালোবাসত’, ‘যে ছিল দৃষ্টির সীমানায়’, ‘ভালোবাসা যত বড় জীবন তত বড় নয়’, ‘দুঃখ ভালোবেসে প্রেমের খেলা খেলতে হয়’, ‘এই দুনিয়া এখন তো আর সেই দুনিয়া নাই’, ‘সূর্যোদয়ে তুমি সূর্যাস্তেও তুমি ও আমার বাংলাদেশ’, ‘এমনও তো প্রেম হয়, চোখের জলে কথা কয়’, হয় যদি বদনাম হোক আরওসহ অসংখ্য জনপ্রিয় গানের তিনি সুরকার।