Dhaka ০৭:১৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫, ২৮ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম:
প্রথমদিনে অনুপস্থিত প্রায় ২৭ হাজার, বহিষ্কার ২২ পোল্যান্ডের বাংলাদেশের দূত হলেন সাবেক আইজিপি ময়নুল ইসলাম ‘পোশাক রপ্তানিতে বিশ্বে শীর্ষস্থানে উঠতে প্রস্তুত বাংলাদেশ’ সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মামলার সাক্ষী আবছার আটক ১৩ দিন বৃষ্টিবলয়ে থাকবে পুরো দেশ, হবে কালবৈশাখী-বজ্রপাত যুক্তরাষ্ট্রের ওপর পাল্টা শুল্ক স্থগিত করলো ইউরোপীয় ইউনিয়ন পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে ফেরি চলাচল বন্ধ ভারত থেকে শেখ হাসিনাকে ফেরানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লুট হওয়া অস্ত্র নিরাপত্তার জন্য হুমকি: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলে বাণিজ্যে প্রভাব পড়বে না: বাণিজ্য উপদেষ্টা

বরিশাল-ঢাকা নৌ রুটে ঈদে ২০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধি

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৬:৩১:২০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জুলাই ২০২০
  • ১৪৬ Time View

আসন্ন ঈদ-উল আজহা। তবে এই ঈদ নিয়ে নেই তেমন কোন মাতামাতি-হে চৈ। করোনা ভাইরাসের প্রভাব ও সংক্রমনের কারণে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সরকারি ছুটিও দেয়া হয়েছে মাত্র তিন দিনের। তাও কর্মস্থলে থাকার জন্য নির্দেশনা রয়েছে।

তার মধ্যেও যারা ঈদ উৎসব পালন করতে রাজধানী ঢাকা থেকে বরিশাল তথা দক্ষিণাঞ্চলে আসছে, তাদের উপর অপেক্ষা করছে বাড়তি লঞ্চ ভাড়ার চাপ। কারণ স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় বছরের দুই ঈদ ও পূজোতে যাত্রী ভাড়া ২০ ভাগ বাড়ানো হয়। প্রতিবারের মত এই করোনাকালেও তাদের বাড়তি ২০ ভাগ ভাড়া গুনতে হবে।

এই ভাড়া ঢাকা বরিশাল নৌ রুটের লঞ্চসহ অভ্যন্তরিন রুটের লঞ্চগুলোতে থাকবে। যদিও লঞ্চ মালিকরা বরাবরের মত এ বারও দাবি করেছেন ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়নি। ঈদ উপলক্ষে সরকারি রেট কার্যকর করা হচ্ছে মাত্র। প্রতিবার ঈদের এক মাস আগেই শুরু হয় ঈদ প্রস্তুতি। বরিশাল-ঢাকা নৌ-রুটের চলাচলকারী লঞ্চগুলোতে রং করা, ঘষা-মাজার কাজই জানান দেয় ঈদের আগমনী বার্তা। এমনকি ঈদ আসলেই নতুন নতুন বিলাসবহুল লঞ্চ নৌ-বহরে যুক্ত করার উদ্যোগও দেখা যায় ইতিপূর্বে।

তবে এবারের আসন্ন কোরবানির ঈদের চিত্র পুরোটাই ভিন্ন। লঞ্চগুলোতে নেই ঈদ পূর্বক প্রস্তুতি। বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাসের প্রভাব ইতিপূর্বের সকল ঈদ প্রস্তুতি ভন্ডুল করে দিয়েছে। শুধু তাই নয়, এই প্রথম কোন ঈদে বিশেষ সার্ভিস অর্থাৎ ডাবল ট্রিপ ছাড়াই ঈদে যাত্রী পরিবহন করবে বরিশাল-ঢাকা নৌ রুটের লঞ্চগুলো। তাও আবার সব লঞ্চ ঈদ সার্ভিসে যুক্ত হবে কিনা সে নিয়েও সন্দিহান মালিকরা।

লঞ্চ মালিকরা জানিয়েছেন, ‘করোনা ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে দেশে গণপরিবহন চলাচল বন্ধ করে দেয় সরকার। এর ফলে দুই মাসের অধিক সময় মানবেতর জীবন যাপন করতে হয় মালিক এবং শ্রমিকদের। প্রতি রোজার ঈদে যাত্রী পরিবহনের মাধ্যমে সারা বছরের লোকসান কাটিয়ে লাভের মুখ দেখার আশা করেন তারা। কিন্তু করোনার প্রভাবে লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকায় লাভের পরিবর্তে কোটি কোটি টাকা লোকসান গুনতে হয়েছে মালিকদের।

তারা বলেন, ‘রোজার ঈদে যে ক্ষতি হয়েছে তা কোরবানির ঈদে কিছুটা হলেও কাটিয়ে উঠার প্রস্তুতি ছিল। কিন্তু বর্তমানেঈদের ১০ দিন আগেও চলাচলরত লঞ্চগুলোতে যাত্রীদের উপস্থিতি সেই প্রস্তুতিকে হতাশায় ঠেলে দিয়েছে। তাই কোরবানির ঈদেও লোকসান ধরে নিয়েছেন অনেক লঞ্চ মালিক।

জানা গেছে, সারা বছর রাজধানী থেকে বরিশালগামী লঞ্চগুলোর ডেকের ভাড়া ২০০ টাকা নেয়া হয়। আর সিঙ্গেল কেবিনের ভাড়া নেয়া হয় ৯০০ এবং ডাবল কেবিন ১৮০০ টাকা। ভিআইপি কেবিনের ভাড়া নেয়া হয় প্রকারভেদে ৩-৫ হাজার টাকা। কিন্তু ঈদ এলেই সরকার নির্ধারিত ভাড়ার অজুহাত তুলে মালিকরা অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করেন।

সে অনুযায়ী এবারও সরকার নির্ধারিত রেটের অজুহাতে ঈদ সার্ভিসে ডেকের ভাড়া ২৫০ টাকা, সিঙ্গেল (এসি/নন-এসি) ১১০০ এবং ডাবল (এসি/নন-এসি) ২২০০ টাকা এবং ভিআইপি কেবিনের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৬-৭ হাজার টাকা। ঈদ উদযাপন করতে ঢাকা থেকে বরিশালে আসার অপেক্ষায় থাকা চাকুরীজীবী আশরাফুজ্জামান নামে এক লঞ্চযাত্রী জানান, লঞ্চ মালিকরা দুই ধরনের রেট দিয়ে যাত্রীদের হয়রানি করছেন। প্রতিবছরই তারা এভাবে প্রতারণা করেন।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌ-চলাচল (যাত্রী পরিবহন) সংস্থার ভাইস চেয়ারম্যান ও সুন্দরবন লঞ্চ মালিক সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, ‘আমরা সরকার নির্ধারিত ভাড়ার বেশি নেই না। তবে স্বাভাবিক সময়ে সরকার নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে কম নিয়ে থাকি। ঈদের সময় সদরঘাট বা বরিশাল লঞ্চঘাটের এক প্রান্ত থেকে যাত্রী ছাড়াই ফিরতে হয়। তাই এ সময় সরকার নির্ধারিত ভাড়া নিয়ে থাকি।’

বিআইডব্লিউটিএ বরিশাল নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের যুগ্ম পরিচালক আজমল হুদা মিঠু সরকার বলেন, ঈদে ভাড়া বেশি নেয়া হয় না। সরকার নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে কম নেয়া হচ্ছে। সরকার নির্ধারিত ভাড়ার থেকে কম নিলে আমাদের কোন আপত্তি নেই। তবে বেশী নিলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

প্রথমদিনে অনুপস্থিত প্রায় ২৭ হাজার, বহিষ্কার ২২

বরিশাল-ঢাকা নৌ রুটে ঈদে ২০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধি

Update Time : ০৬:৩১:২০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জুলাই ২০২০

আসন্ন ঈদ-উল আজহা। তবে এই ঈদ নিয়ে নেই তেমন কোন মাতামাতি-হে চৈ। করোনা ভাইরাসের প্রভাব ও সংক্রমনের কারণে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সরকারি ছুটিও দেয়া হয়েছে মাত্র তিন দিনের। তাও কর্মস্থলে থাকার জন্য নির্দেশনা রয়েছে।

তার মধ্যেও যারা ঈদ উৎসব পালন করতে রাজধানী ঢাকা থেকে বরিশাল তথা দক্ষিণাঞ্চলে আসছে, তাদের উপর অপেক্ষা করছে বাড়তি লঞ্চ ভাড়ার চাপ। কারণ স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় বছরের দুই ঈদ ও পূজোতে যাত্রী ভাড়া ২০ ভাগ বাড়ানো হয়। প্রতিবারের মত এই করোনাকালেও তাদের বাড়তি ২০ ভাগ ভাড়া গুনতে হবে।

এই ভাড়া ঢাকা বরিশাল নৌ রুটের লঞ্চসহ অভ্যন্তরিন রুটের লঞ্চগুলোতে থাকবে। যদিও লঞ্চ মালিকরা বরাবরের মত এ বারও দাবি করেছেন ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়নি। ঈদ উপলক্ষে সরকারি রেট কার্যকর করা হচ্ছে মাত্র। প্রতিবার ঈদের এক মাস আগেই শুরু হয় ঈদ প্রস্তুতি। বরিশাল-ঢাকা নৌ-রুটের চলাচলকারী লঞ্চগুলোতে রং করা, ঘষা-মাজার কাজই জানান দেয় ঈদের আগমনী বার্তা। এমনকি ঈদ আসলেই নতুন নতুন বিলাসবহুল লঞ্চ নৌ-বহরে যুক্ত করার উদ্যোগও দেখা যায় ইতিপূর্বে।

তবে এবারের আসন্ন কোরবানির ঈদের চিত্র পুরোটাই ভিন্ন। লঞ্চগুলোতে নেই ঈদ পূর্বক প্রস্তুতি। বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাসের প্রভাব ইতিপূর্বের সকল ঈদ প্রস্তুতি ভন্ডুল করে দিয়েছে। শুধু তাই নয়, এই প্রথম কোন ঈদে বিশেষ সার্ভিস অর্থাৎ ডাবল ট্রিপ ছাড়াই ঈদে যাত্রী পরিবহন করবে বরিশাল-ঢাকা নৌ রুটের লঞ্চগুলো। তাও আবার সব লঞ্চ ঈদ সার্ভিসে যুক্ত হবে কিনা সে নিয়েও সন্দিহান মালিকরা।

লঞ্চ মালিকরা জানিয়েছেন, ‘করোনা ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে দেশে গণপরিবহন চলাচল বন্ধ করে দেয় সরকার। এর ফলে দুই মাসের অধিক সময় মানবেতর জীবন যাপন করতে হয় মালিক এবং শ্রমিকদের। প্রতি রোজার ঈদে যাত্রী পরিবহনের মাধ্যমে সারা বছরের লোকসান কাটিয়ে লাভের মুখ দেখার আশা করেন তারা। কিন্তু করোনার প্রভাবে লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকায় লাভের পরিবর্তে কোটি কোটি টাকা লোকসান গুনতে হয়েছে মালিকদের।

তারা বলেন, ‘রোজার ঈদে যে ক্ষতি হয়েছে তা কোরবানির ঈদে কিছুটা হলেও কাটিয়ে উঠার প্রস্তুতি ছিল। কিন্তু বর্তমানেঈদের ১০ দিন আগেও চলাচলরত লঞ্চগুলোতে যাত্রীদের উপস্থিতি সেই প্রস্তুতিকে হতাশায় ঠেলে দিয়েছে। তাই কোরবানির ঈদেও লোকসান ধরে নিয়েছেন অনেক লঞ্চ মালিক।

জানা গেছে, সারা বছর রাজধানী থেকে বরিশালগামী লঞ্চগুলোর ডেকের ভাড়া ২০০ টাকা নেয়া হয়। আর সিঙ্গেল কেবিনের ভাড়া নেয়া হয় ৯০০ এবং ডাবল কেবিন ১৮০০ টাকা। ভিআইপি কেবিনের ভাড়া নেয়া হয় প্রকারভেদে ৩-৫ হাজার টাকা। কিন্তু ঈদ এলেই সরকার নির্ধারিত ভাড়ার অজুহাত তুলে মালিকরা অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করেন।

সে অনুযায়ী এবারও সরকার নির্ধারিত রেটের অজুহাতে ঈদ সার্ভিসে ডেকের ভাড়া ২৫০ টাকা, সিঙ্গেল (এসি/নন-এসি) ১১০০ এবং ডাবল (এসি/নন-এসি) ২২০০ টাকা এবং ভিআইপি কেবিনের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৬-৭ হাজার টাকা। ঈদ উদযাপন করতে ঢাকা থেকে বরিশালে আসার অপেক্ষায় থাকা চাকুরীজীবী আশরাফুজ্জামান নামে এক লঞ্চযাত্রী জানান, লঞ্চ মালিকরা দুই ধরনের রেট দিয়ে যাত্রীদের হয়রানি করছেন। প্রতিবছরই তারা এভাবে প্রতারণা করেন।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌ-চলাচল (যাত্রী পরিবহন) সংস্থার ভাইস চেয়ারম্যান ও সুন্দরবন লঞ্চ মালিক সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, ‘আমরা সরকার নির্ধারিত ভাড়ার বেশি নেই না। তবে স্বাভাবিক সময়ে সরকার নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে কম নিয়ে থাকি। ঈদের সময় সদরঘাট বা বরিশাল লঞ্চঘাটের এক প্রান্ত থেকে যাত্রী ছাড়াই ফিরতে হয়। তাই এ সময় সরকার নির্ধারিত ভাড়া নিয়ে থাকি।’

বিআইডব্লিউটিএ বরিশাল নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের যুগ্ম পরিচালক আজমল হুদা মিঠু সরকার বলেন, ঈদে ভাড়া বেশি নেয়া হয় না। সরকার নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে কম নেয়া হচ্ছে। সরকার নির্ধারিত ভাড়ার থেকে কম নিলে আমাদের কোন আপত্তি নেই। তবে বেশী নিলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব।