আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
অসময়ের টানা বৃষ্টি, পাহাড়ি ঢল, বন্যা আর ভূমিধসে ভারত ও নেপালে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১৫০ জনের।
বিবিসির তথ্য অনুযায়ী, ভারতের উত্তরাখণ্ডে বুধবার আরও ছয়জনের লাশ উদ্ধারের পর নিহতের সংখ্যা বেড়েছে ৫২ জন হয়েছে। তাদের মধ্যে পাঁচজন একই পরিবারের সদস্য।
জনপ্রিয় পর্যটন এলাকা উত্তরাখণ্ডে পর্যটকদের আসতে নিষেধ করা হয়েছে। বন্ধ রাখা হয়েছে সব স্কুল। ঋষিকেশে গঙ্গার পানি ঢুকে পড়েছে লোকালয়ে, বাজেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নৈনিতাল এলাকাও।
পর্যটন এলাকা নৈনিতাল হ্রদের পানি উপচে আশপাশের বাড়িঘর রাস্তার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি বলেছেন, বন্যায় অবকাঠামোর পাশাপাশি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
সাধারণত অক্টোবর মাসে উত্তরাখণ্ডে গড়ে ৩০ দশমিক ৫ মিলিমিটারের মত বৃষ্টিপাত হয়। এবার সেখানে এক দিনেই ৩২৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে।
বৃষ্টি অব্যাহত থাকার পূর্বাভাস রয়েছে ভারতের দক্ষিণের রাজ্য কেরালাতেও। ভারতের আবহাওয়া অফিস বলছে, পশ্চিম ঘাট এবং পূর্বের পাহাড়ি এলাকায় বৃহস্পতিবারও ভারি বৃষ্টি হতে পারে।
প্রবল বৃষ্টি, বন্যার আর ভূমিধসে ভারতের এ রাজ্যে গত সোমবার পর্যন্ত ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে, ধ্বংস হয়েছে ১৬ শ ঘরবাড়ি।
ভারতে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বুধবার থেকে কমতে শুরু করেছে বলে জানিয়েছে দেশটির আবহাওয়া অধিদপ্তর। তবে নেপালে বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে।
রয়টার্স জানিয়েছে, বুধবার সেখানে আরও ৩৪ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, নিহতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৭৭ জনে।
ভারি বৃষ্টিতে বন্যা দেখা দেওয়ায় বুধবার নেপালের ৮৫টি অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট বাতিল করতে হয়েছে।
এই দুর্যোগে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশটির পূর্বাঞ্চলের পঞ্চথর জেলা, সেখানে ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া পশ্চিমের জেলা ইলামে ১৩ জন এবং দোতিতে ১২ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
নেপাল পুলিশের মুখপাত্র বসন্ত কুনওয়ার জানিয়েছেন, রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে সাড়ে তিনশ কিলোমিটার পশ্চিমে সেতি গ্রামে অন্তত ৬০ জন মানুষ আটকা পড়ে আছেন।
দেশটির টেলিভিশনে দেখানো হয়েছে, পানির তোড়ে ফসল তলিয়ে আছে এবং নদীর পানি বেড়ে ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, সেতু ভাসিয়ে নিয়ে গেছে।
বর্ষা মৌসুমে নেপালে এমন আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধস দেখা যায়। দেশটিতে সাধারণত জুনের মাঝামাঝি সময় থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এমন আবহাওয়া থাকে। এবার অক্টোবরেও তেমন আবহাওয়া দেখা দিয়েছে।
নেপালের আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, আরও অন্তত এক দিন কিছু কিছু স্থানে ভারি বৃষ্টি এবং পূর্বাঞ্চলের পার্বত্য এলাকায় হালকা থেকে মাঝারি তুষারপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
সূত্র: বিবিসি, রয়টার্স