প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যার পেছনে সরাসরি যুক্ত ছিল জিয়াউর রহমান। ঐ ঘটনার আসল খলনায়ক জিয়া একে একে মুক্তিযুদ্ধের নায়কদের হত্যা করেছিল। জিয়া চার নেতা হত্যার সঙ্গেও জড়িত ছিল।’

আজ রোববার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে মুজিববর্ষ বাস্তবায়ন কমিটি আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ সব কথা বলেন। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে আলোচনায় অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘জিয়া বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার হত্যাকারীদের পুরস্কৃত করেছিল। খালেদা জিয়াও একইভাবে একই কাজ করেছিল। বুদ্ধিজীবী হত্যার সাথে জড়িত সেই নিজামী-মুজাহিদদের মন্ত্রী করে তাদেরকে পুরস্কৃত করেছিল।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে ধ্বংসপ্রাপ্ত একটি দেশের দায়িত্ব নিয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যেভাবে দেশকে পরিচালনা করছিলেন, তখন প্রয়োজন ছিল দেশের সব মানুষের একাত্ম হয়ে তাঁর পাশে দাঁড়ানো এবং সহযোগিতা করা। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য যে, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার প্রক্রিয়া শুরুর ক্ষেত্রে দেখা গেছে- আমাদের দলের অভ্যন্তরে নানা খেলা শুরু হয়েছিল। যারা মুক্তিযুদ্ধের সময় দালালি করতে চেয়েছিল, তারা সমালোচনা মুখর হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘সমালোচনার প্রয়োজন আছে। কিন্তু এমনভাবে তাদের লেখনী এবং কার্যকলাপ ছিল, (দৃশ্যত) পরিকল্পিতভাবে সারাদেশে অপবাদ ছড়ানো হয়েছিল। তাদের উদ্দেশ্য ছিল জাতির পিতার জনপ্রিয়তা নস্যাৎ করা। কিন্তু তারা যখন সেটা পারেনি, তখন হত্যার পথ বেছে নেয়।’

মীর জাফর যেমন ইংরেজদের সঙ্গে মিলে বিশ্বাসঘাতকতা করে নবাব সিরাজ উদ দ্দৌলাকে হত্যা করেছিল, মোশতাকও জিয়ার সঙ্গে মিলে সেই কাজটাই করেছিল বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।

সরকার প্রধান বলেন, ‘সিরাজ উদ দ্দৌলাকে হত্যার পর ইংরেজরা নবাব বানিয়েছিল মীর জাফরকে। কিন্তু সে তিন মাসও নবাব থাকতে পারেনি। মোশতাকেরও সেই পরিণতিই হয়েছিল। সেও বেশিদিন ক্ষমতায় টিকতে পারেনি। তাকে সরিয়ে দিয়ে একই সাথে সেনাপ্রধান এবং রাষ্ট্রপতি হয়ে গেল জিয়া নিজে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের কাছে আমার কৃতজ্ঞ যে, তারা বারবার আমার ওপর আস্থা রেখেছেন। আমাদেরকে ভোট দিয়েছেন, তাদের সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন। জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীতে আমাদের অনেক রকম কর্মসূচি ছিল, করোনা ভাইরাসের কারণে সব কর্মসূচি আমরা বাস্তবায়ন করতে পারিনি। কিছু ডিজিটাল পদ্ধতিতে করেছি। জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীতে আমাদের একটাই লক্ষ্য থাকবে যাতে দেশের একটি মানুষও গৃহহীন না থাকে। প্রতিটি মানুষকে অন্তত আমরা একটা মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দেব।’

আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও ১৪ দলের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু, আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. আবু মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন। অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে