শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, শোষণ, বঞ্চনা ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার জীবনের ৩০ শতাংশ সময় কারাগারে কাটিয়েছিলেন। সেই মহান নেতাকে সপরিবারে হত্যা করে নির্বংশের ষড়যন্ত্র যারা করেছিল পরবর্তীতে রাষ্ট্রীয়ভাবে জনগণের টাকায় তাদের বিদেশি গুরুত্বপূর্ণ মিশনে নিযুক্ত করা হয়েছিল।
রোববার জাতীয় শোকদিবস-২০২০ উপলক্ষে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়োজনে এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ৭৫ পরবর্তী সময়ে রাষ্ট্রীয়ভাবে বঙ্গবন্ধুর পরিবারের প্রত্যেক সদস্যের চরিত্র হরণ করা হয়েছিল। তার পরের প্রজন্ম যাতে স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে জানতে না পারে সেজন্য কয়েক দশক ধরে মিথ্যা প্রপাগান্ডা চালানো হয়েছিল।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর সত্যপ্রসাদ মজুমদারের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে যুক্ত ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং বিভিন্ন অনুষদের ডিনবৃন্দ আলোচনা সভায় যুক্ত ছিলেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর যে সমস্ত সহচর ষড়যন্ত্রকারীদের কোনোরকমের প্রলোভনের ফাঁদে পা দেয়নি তাদের ওপর চালানো হয়েছিল নিষ্ঠুর নির্যাতন। সেনাবাহিনীকে মুক্তিযোদ্ধাশূন্য করার জন্য সামরিক ট্রাইব্যুনালের নামে অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধা সেনা কর্মকর্তাকে হত্যা করা হয়েছিল। পরবর্তী প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে দূরে সরিয়ে রাখার জন্য জয় বাংলা ও বঙ্গবন্ধুকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।
নিষিদ্ধ করা হয়েছিল মানব সভ্যতার অন্যতম দলিল ৭ মার্চের ভাষণ। যে ভাষণ ইউনেস্কো মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড রেজিস্ট্রারে অন্তর্ভুক্ত করেছে।
মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধু কারিগরি ও প্রকৌশলী শিক্ষাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছিলেন। তিনি তাই শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতের জন্য বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় আইনে স্বায়ত্তশাসন দিয়েছিলেন।
তিনি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, জনগণের অর্থে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় বর্তমানে একটি এলিট ইনস্টিটিউশন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তাই এখানকার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা আছে। ব্যক্তিস্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে বঙ্গবন্ধু বৃত্তিমূলক ও কারিগরি শিক্ষার যে স্বপ্ন দেখেছিলেন তা বাস্তবায়নের মাধ্যমে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সফল অংশীদার হতে অবদান রাখার জন্য বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান মহিবুল হাসান চৌধুরী। জনগণের অর্থে ইঞ্জিনিয়ার হয়ে বিদেশে পাড়ি দেয়ারও সমালোচনা করেন তিনি।