দুপচাঁচিয়া প্রতিনিধি :

বগুড়া দুপচাঁচিয়ায় সোশ্যাল মিডিয়াতে রংপুর ও গাজীপুরের দুই যুবকের প্রতারণার শিকার হয়ে বাসা থেকে চলে যাওয়া ১৬ বছরের মেয়ে ও সঙ্গী হিসেবে যাওয়া ১১ বছরের মেয়ে শিশুকে তথ্যপ্রযুক্তির সহযোগিতায় ৩ জেলায় ১১দিনের কঠোর অভিযানে উদ্ধার করেছে দুপচাঁচিয়া থানা পুলিশ।

থানা এবং শিশুদের অভিভাবক সূত্রে জানা যায়, সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা মিষ্টি কথার জালবুনে বিভিন্ন প্রলোভনে বগুড়া দুপচাঁচিয়ার গত ১৫ এপ্রিল ১৬ বছরের এক সনাতন ধর্মাবলম্বী মেয়েকে বগুড়া থেকে নিয়ে যায় রাসেল নামে এক যুবক যে পেশায় রাজমিস্ত্রী। যাওয়ার সময় সেই মেয়েটি সঙ্গী হিসেবে তার সাথে নিয়ে যায় তার বয়সে ছোট সম্পর্কে ফুফু ১১ বছরের আরেক মেয়ে শিশুকে। প্রাইভেট পড়তে গিয়ে আর না ফিরলে ২ মেয়ে একসাথে উধাও হয়ে যাওয়ার ঘটনায় পরিবারের লোকজন থানায় অভিযোগ করে সম্পূর্ণ অসহায়ত্বের সাথে পুলিশের সহযোগিতা কামনা করে। আদমদিঘী-দুপচাঁচিয়া সার্কেলের সদ্য পদোন্নতিপ্রাপ্ত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কে এইচ এম এরশাদ এর দিকনির্দেশনায় এবং দুপচাঁচিয়ার অফিসার ইনচার্জ হাসান আলীর নেতৃত্বে ওসি (তদন্ত) সনাতন চন্দ্র সরকার, এস.আই সাইফুল ইসলাম, নাসির সহ সঙ্গীয় পুলিশ ফোর্স তৎক্ষনাৎ ঘটনাটির তদন্ত শুরু করলে একপর্যায়ে তথ্যপ্রযুক্তির সহযোগিতায় স্থানীয় পুলিশের সহযোগিতায় ১৬ বছর বয়সী সেই মেয়ের সাবেক কথিত ফেসবুক প্রেমিক রংপুর পীরগাছায় রাসেলের বাসায় অভিযান চালায় এবং সেখান থেকে পুলিশ তথ্য পায় মূলত রাসেল এই কাজে সহযোগিতা করলেও মূলত রাসেলের বন্ধু ঢাকা গাজীপুরের গার্মেন্টস্কর্মী হৃদয়ের সাথেই রয়েছে সেই দুই মেয়ে। পরে পুলিশিং বিভিন্ন কৌশলে তাদের উপর চাপ প্রয়োগ করলে ফেসবুক প্রতারক হৃদয় সিরাজগঞ্জে তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে ১১ দিনের মাথায় সেই ২ মেয়েকে ফেরত দেয় এবং পুলিশের হাল না ছাড়ার মানসিকতায় ৩ জেলায় অভিযান চালিয়ে প্রতারণার শিকার সেই দুই মেয়ে সুস্থভাবে উদ্ধার হয়। এদিকে মেয়েদের পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে দুপচাঁচিয়া থানা পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানিয়েছেন তাদের অভিভাবকেরা।

ঘটনায় ভুক্তভোগী ২ জনই শিশু হওয়ায় তাদের নাম ও ঠিকানা বিস্তারিত জানানো না গেলেও এই ঘটনায় যেমন পুলিশিং দক্ষতা উঠে এসেছে তেমনি করোনাকালীন সময়ে ঘরে থাকার কারণে অভিভাবকদের নজর এড়িয়ে শিশুদের সোশ্যাল মিডিয়ায় আসক্ত হয়ে নৈতিক অবক্ষয় এবং বিভিন্ন চক্রের ফাঁদে জড়িয়ে যাবার আশঙ্কাও সমহারে উঠে এসেছে।

এ প্রসঙ্গে দুপচাঁচিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. হাসান আলী শনিবার রাতে মুঠোফোনে জানান, করোনাকালীন সময়ে অভিভাবকদের অগোচরেই শিশুরা সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন এ্যাপস্ এ আসক্ত হয়ে বিভিন্ন নেতিবাচক কর্মকান্ডে পা দিয়ে ফেলছে যা কোনভাবেই কাম্য নয়। ইদানিং সময়ে ছোট ছোট মেয়েরা বিভিন্ন চক্রের প্রলোভনের ফাঁদে পরে বাড়ি থেকে চলে যাওয়ার ঘটনা বেড়েছে যার মাশুল সেই মেয়েদের ও তাদের অভিভাবকদের আজীবন দিতে হচ্ছে বা হবে। যেক্ষেত্রে সর্বপ্রথম শিশুদের আগে অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে। জেলা পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা বিপিএম (বার) এর নেতৃত্বে দুপচাঁচিয়ায় তিনি শতভাগ সুষ্ঠু পুলিশিং সেবা প্রদানের অঙ্গিকার করে সকলকে সচেতন হওয়ার আহবান জানান এই কর্মকর্তা।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে