মোংলা প্রতিনিধি:

ইতালির নাগরিক মুক্তিযুদ্ধের অকৃত্রিম বন্ধু শিক্ষানুরাগী কবি সাহিত্যিক অনুবাদক ফাদার মারিনো রিগন এস এক্র এর তৃতীয় মৃত্যু বার্ষিকী আজ।

ইতালির নাগরিক হয়েও বাংলাদেশকে প্রাণের চেয়ে বেশি ভালোবেসেছিলেন ফাদার মারিনো রিগন । ১৯৫৩ সালে তিনি বাংলাদেশে আসেন। এর পর মোংলায় একটি উচ্চ বিদ্যালয় আর একটি চার্চ প্রতিষ্ঠা করেন। এর পর থেকে মোংলায় স্থায়ী বসবাস।এই মহান মানুষটি শিক্ষা বিস্তারে অসামান্য অবদান রেখেছেন। ৬১ বছর ধরে বাংলাদেশে বসবাস রত অবস্থায় তিনি দক্ষিণাঞ্চলে তাঁর সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠিত করেছেন ১৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

এছাড়াও হাজার হাজার হত দরিদ্র শিক্ষার্থীদের শিক্ষার সুযোগ করে দিয়েছে। সাহিত্যিক অনুবাদক ফাদার মারিনো রিগন ইতালিয়ান ভাষায় রবীদ্রনাথ ঠাকুরর গীতাঞ্জলিসহ ৪০টি কাব্যগ্রন্থ, লালন সাঁইয়ের সাড়ে তিনশো গান, জসিম উদ্দিনর নক্সীকাঁথার মাঠ, সাজন বাদিয়ার ঘাট ছাড়াও এদেশের গুরুত্বপূর্ণ কবিদের অসংখ্য কবিতা অনুবাদ করছেন।ফাদার মারিনো রিগন মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের জন্য অসামান্য অবদান রেখেছিলেন। যুদ্ধকালীন সময় যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসাসেবা, শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় দেওয়াসহ বিভিন্নভাবে মুক্তিযোদ্ধা ও নিরস্ত্র বাঙালিদের তিনি সহায়তা করেছেন। মুক্তিযোদ্ধা এ অবাদন রাখার জন্য ২০১২ সালে বাংলাদেশ সরকার বিশেষ সম্মাননা প্রদান কোরেছিল। সৃজনশীল, শিক্ষামূলক ও মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার ২০০৮ সালে ফাদার রিগনকে প্রদান করেছিল বাংলাদেশের সম্মানসূচক নাগরিকত্ব।বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় কারনে ২০১৭ সালের ২০ অক্টোবর মাত্র ৯২ বছর বয়সে ইতালিতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। এরপর ফাদার রিগনের  ইচ্ছা অনুযায়ি মৃত্যুর এক বছর পর ২০১৮ সালের ২২ অক্টোবর তাঁর মরদেহ দেশে এনে মংলার শেলাবুনিয়া সেন্ট পলস গির্জার পাশে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হয়।

ব্যাপক আয়োজনে মোংলায় ফাদার মারিনো রিগন এস এক্র এর তৃতীয় মৃত্যু বার্ষিকী পালিত হচ্ছে।মঙ্গলবার (২০ অষ্টোবার) সকাল সাড়ে ৮ টায় ফাদার রিগন শিক্ষা ফাউন্ডেশন, সেবা সংস্থা,এবং সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট মোংলা এর আয়োজনে  ফাদার মারিনো রিগন এস এক্র এর সমাদিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পন করা হয়েছে।
এছারাও দিনটি উপলক্ষে বিকেলে আলোচনা সভা,সংস্কৃতি অনুষ্ঠানের আয়োজনের কথা রয়েছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে