শেষ হলো চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিনের খেলা। যেখানে ক্যারিবীয় স্পিনার জোমেল ওয়ারিক্যানের বাঁহাতি ঘূর্ণিতে নাকাল হয়েছে টাইগাররা। তিনটি উইকেট তুলে নিয়ে একাই কাঁপন ধরিয়েছেন টাইগার শিবিরে।
তবে প্রথম দুটি সেশনে পিছিয়ে পড়লেও সাদমানের ফিফটি এবং সাকিব-লিটনে শেষ সেশনে ঘুরে দাঁড়িয়ে স্বস্তিতে বাংলাদেশ।
আজ বুধবার দিনের পুরো ৯০ ওভার খেলা শেষে ৫ উইকেটে ২৪২ রান সংগ্রহ করেছে মোমিনুল হকের দল। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে মুশফিকুর রহিম ৩৮ রানে আউট হলে ১৯৩ রানেই পঞ্চম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। তবে সাকিব ও লিটনের ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে আর কোনও বিপদ হতে না দিয়ে ৪৯ রান তুললে শেষ ঘণ্টাটা নিরাপদেই কাটায় টাইগাররা।
দিনশেষে সাকিব আল হাসান ৩৯ রানে এবং লিটন দাস ৩৪ রানে অপরাজিত ছিলেন। এরমধ্যে লিটন ছয়টি চারের মার মারলেও সাকিব মেরেছেন দুটি কম।
এর আগে সাত ম্যাচের ক্যারিয়ারে নিজের দ্বিতীয় ফিফটির দেখা পাওয়া সাদমান ইসলাম অনিক সাজঘরে ফেরেন ৫৯ রান করে। তার আগে শর্ট মিডউইকেটে সহজ ক্যাচ দিয়ে মোমিনুল হক ফেরেন ২৬ রান করে। এই তিনজনই শিকার হন বাঁহাতি স্পিনার জোমেল ওয়ারিক্যানের।
সকালে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন মোমিনুল হক সৌরভ। সাকিব আল হাসানসহ সাত ব্যাটসম্যান, চার স্পিনার ও একজন মাত্র পেসার নিয়ে খেলছে বাংলাদেশ। ব্যাটিংয়ে নেমে স্বাগতিকদের পক্ষে দারুণ শুরুর আভাস দিয়েছিলেন তামিম ইকবাল ও সাদমান ইসলাম। প্রথম পাঁচ ওভারেই বাংলাদেশ সংগ্রহ করে ২৩ রান। পঞ্চম ওভারে কেমার রোচের বল তামিমের ব্যাট ছুঁয়ে গিয়ে উইকেট নাড়িয়ে দেয়। ফলে ১৫ বলে ২ চারে ৯ রান করে সাজঘরে ফেরেন তামিম।
তামিমের বিদায়ের পরে ক্রিজে আসেন নাজমুল হোসাইন শান্ত। সাদমান ও শান্ত- এই দুই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান ভালোই খেলছিলেন। ধৈর্য্যের সাথে দেখেশুনে খেলে যাচ্ছিলেন এই দুই তরুণ। তবে মধ্যাহ্ন বিরতির ঠিক আগে গড়বড় করে ফেলেন তারা। বোকামির দণ্ড হিসেবে রান আউটে কাটা পড়েন শান্ত।
এখানেও দৃশ্যপটে ছিলেন সেই কেমার রোচ। তার করা ওই ওভারে জসুয়া ডা সিলভা ও কাইল মেয়ার্সের দৃঢ়তায় রান আউট হওয়ার আগে শান্ত করেন ২৫ রান। তার ৫৮ বলের ইনিংসটিতে ছিল তিনটি চারের মার। থিতু হয়েও আত্মাহুতি দেওয়ার হতাশা নিয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি।
শান্তর বিদায়ের পরে ক্রিজে আসেন অধিনায়ক মোমিনুল হক। তিনিও বাঁহাতি অর্থাৎ টপ অর্ডারের চার ব্যাটসম্যানই বাঁহাতি। মধ্যাহ্ন বিরতির আগের বাকি সময়টা নির্বিঘ্নে কাটিয়ে দেন সাদমান ও মোমিনুল। ২ উইকেটে ৬৯ রান নিয়ে প্রথম সেশন শেষ করে বাংলাদেশ।
লাঞ্চের পরের ঘণ্টাটিও কাটিয়ে দেন কোনও চিন্তা ছাড়াই। তবে পানি পানের কিছুক্ষণ পরেই যেন নিজের স্বরূপে ফিরতে মরিয়া হয়ে ওঠেন ধৈর্য্যের মূর্তপ্রতীক মোমিনুল। জোমেল ওয়ারিক্যানের স্পিনটি বের করে দিতে গিয়ে শর্ট মিডউইকেটে জন ক্যাম্পবেলের সহজ শিকার হন ধৈর্য্যহারা অধিনায়ক। ৯৭টি বল মোকাবেলা করে মাত্র দুটি চার মারা মোমিনুল ফেরেন ২৬ রান করে। যাতে ১১৯ রানের মাথায় তৃতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে অভিজ্ঞ পেসার কেমার রোচ একটি উইকেট পেলেও ১০ম ম্যাচ খেলতে নামা বাঁহাতি স্পিনার জোমেল ওয়ারিক্যান প্রথম দিনেই তুলে নিয়েছেন ৩টি উইকেট, ৫৮ রানের বিনিময়ে। তবে ২২ ওভার বোলিং করে ৫৬ রান খরচ করলেও উইকেটের দেখা পাননি আলোচিত বিশালকায় ডানহাতি স্পিনার রাকীম কর্নওয়াল।