রাজধানীর পল্লবী এলাকা থেকে বাংলাদেশি এক নারীসহ ১২ নাইজেরিয়ান নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

২১ জুলাই, বুধবার দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সংস্থাটির সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনের সিআইডি জানায় ফেসবুকে বন্ধুত্ব করে উপহার পাঠানোর কথা বলে শতাধিক মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে দুই মাসে অন্তত পাঁচ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় এই চক্রটি।

গত ২০ জুলাই মঙ্গলবার তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় পাঁচটি ল্যাপটপ, ১৪টি মোবাইল ফোন ও বিপুল পরিমাণ সিমকার্ড উদ্ধার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিরা হলেন- নান্দিকা ক্লিনেন্ট চেকেনজু, ক্লেটাস আছুনা, ওনিকুলভ টিমেটি চিনঙ্গি, একিন উইসডম, চিগোজি, ইভুন্দে গ্যাব্রিল ওবিনা, সেলেস্টাইন প্যাট্রিক ওবাইজুলু, মর্দি ন্যামডি কলিন্স, ওর্দু চুকুড স্যামি, ডুবুওকন সোমায়িনা, জেরেম প্রিসাস একিমি, ওক উইসডম চিকাওদো। এছাড়াও তাদের সহযোগী রাহাত আরা খানম ওরফে ফারজানা মহিউদ্দিনকেও গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি ভুয়া কাস্টমস কর্মকর্তা হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিতেন।

এ বিষয়ে সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি (ঢাকা মেট্রো) শেখ মো. রেজাউল হায়দার বলেন, ‘ভুক্তভোগী একজনের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে সিআইডি। তদন্তে দেখা গেছে, প্রতারকরা অভিনব কায়দায় বিপরীত লিঙ্গের ব্যক্তিদের সঙ্গে ফেসবুকে বন্ধুত্ব গড়ে তোলেন। একপর্যায়ে তারা একটি উপহার পাঠানোর প্রস্তাব দেয়। পরে মেসেঞ্জারে উপহার সামগ্রীর এয়ারলাইন বুকিংয়ের ভুয়া কাগজপত্র পাঠায়। উপহারের বাক্সে কয়েক মিলিয়ন ডলারের সামগ্রী থাকার কথা জানানো হয়।

তিনি আরো জানান, ভুক্তভোগীকে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের কাস্টমস গুদাম থেকে উপহারটি সংগ্রহ করতে বলেন। এরপর তাদের গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী রাহাত আরা খানম ওরফে ফারজানা মহিউদ্দিন নিজেকে কাস্টমস কমিশনার পরিচয় দিয়ে ভুক্তভোগীকে ফোন করেন। তিনি জানান, চার লাখ ২৫ হাজার টাকা শুল্ক পরিশোধ করে উপহার সামগ্রী নিতে হবে। কয়েকটি ব্যাংক হিসাবে ওই টাকা পরিশোধের জন্য চাপ দেওয়া হয়। আর উপহার সংগ্রহ না করলে আইনি জটিলতার ভয় দেখানো হয়। ফলে ভুক্তভোগী তাদের দেওয়া বিভিন্ন ব্যাংকের হিসাব নম্বরে তিন লাখ ৭৩ হাজার টাকা জমা দেন।’

এই ধরণের প্রতারণা এড়াতে রেজাউল হায়দার আরো বলেন, ‘বাড়ির মালিকরা বিদেশি নাগরিককে ভাড়া দেওয়ার আগে তাদের বৈধ কাগজপত্র ও পাসপোর্ট যাচাই করে নেবেন। ফেসবুক বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপরিচিত ব্যক্তির সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়া থেকে বিরত থাকুন। প্রতিবেশী বা এলাকায় কোনো বিদেশি ব্যক্তি বাসাভাড়া নিলে বা সন্দেহ হলে পুলিশে খবর দিন। কেউ যদি টেলিফোনে বা ফেসবুকে এমন উপহার পাঠানোর প্রস্তাব দেয় তাহলে পুলিশকে জানান।’

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে