Dhaka ০৬:২২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পেঁয়াজ সুন্দরী : হাবিবুর রহমান

  • Reporter Name
  • Update Time : ০১:৪৫:৩৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ অগাস্ট ২০২০
  • ২২০ Time View
গল্পঃপেঁয়াজ সুন্দরী,,,,,,,,,
কবি হাবিবুর রহমান
দীঘল গ্রাম। রাস্তা অনেক সুন্দর। গ্রামও অনেক উন্নত। স্কুল কলেজ মাদ্রাসা সবি আছে। অমিতকে সবাই বখাটে ভাবে আসলে সে বখাটে নয়।
তার মনে প্রেম।
তার মনের ঘরের প্রিয়তমা,তাকে শুধু প্রেম শেখায়। অমিত গোলাপ ফুল নিয়ে বের হলো। লাল টকটকে সে ফুল। রুমি,তার ভালো লাগা ও ভালোবাসার প্রথমা রমনী রুমি।
রুমির বান্ধবী তিন্নি বলল,”বকাটা আবার আসে রে,মনে হয় পাগল হয়েছে। “
রুমি উত্তরে বলল,”আসতে দে। “
অমিত কাছে এলো। কিছু বলার সাহস পাচ্ছে না।
তিন্নি বলল,” ভাইয়া কিছু বলবেন কি? “
অমিতের হাত কাঁপছে। গোলাপ ফুল কাঁপছে। তিন্নি হাত কাঁপা দেখে হেসে ফেলল।
রুমি বলল,”গোলাপ দিলেই প্রেম হবে তাইনা,এই গোলাপের দাম কয় টাকা। “
অমিত এবার ঘামছে, রুমাল বের করে ঘাম মুছে নিয়ে বলল,” ত্রিশ টাকা। “
এবার রুমি বলল,”এই তিন্নি ত্রিশটা টাকা বের করে দে তো দোস্ত যত সব মিচকিন প্রেমিক। “
তিন্নি ত্রিশ টাকা বের করে অমিতের হাতে গুজে দিল।
তারপর তিন্নি রুমিকে বলল,”ফুলটি,,,,,,,,,,,,,,,,,,। “
রুমি বলল,”নিয়ে নে, গোলাপ জলে  ডুবিয়ে রেখে, তাজা করে আবার দিবে-পুরুষ মানুষকে চিনি। “
তিন্নি বলল,”অমিত ভাই বকা বকা লাগলেও আপনি চালাক তো। “
রুমি বলল,”গোলাপের বদলে যদি পেঁয়াজ দিত তাও এক পারছেন্ট ভেবে দেখতাম সই,চল যাই। “
দুই বান্ধবী চলে গেল। পিছনে রইলো অমিত।
গ্রাম হলেও এখানে শহরের ছোয়া লেগেছে। বড় বড় দালান। কলেজ গুলো অনেক উন্নত। বাহিরের ছেলে মেয়ে এখানে এসে লেখা পড়া করে।
রুমি ও তিন্নি মেসে থাকে। রুমিকে দেখতে মাঝে মাঝে
অমিত জানালার পাশে এসে দাড়ায়। আজ অমিত আসেনি।
রুমি জানালার দিকে তাকিয়েছিল। জানালার ও পাশটা ফাঁকা।
পাখি ডাকছে,সুন্দর একটি সকাল। রুমি ও তিন্নি প্রাইভেট পড়তে বের হলো। রাস্তায় অমিত দাড়িয়ে,তার হাতে নেট আর সে নেটের মধ্যে পেঁয়াজ।
তিন্নি বলল,”দোস্ত তোর সামনে  পেঁয়াজ দাঁড়িয়ে। “
অমিত কে উদ্দেশ্য করে তিন্নি বলল,” আপেলের চেয়েও দামি। “
রুমি বলল,”নিয়ে নে। “
তিন্নি বলল,”টাকাটা,,,,,,,,,,,।”
উত্তরে রুমি বলল,”তাকে বলে দে,মেয়েদের অনেক গুলো গুন আছে,বেশি টাকা তারা কখনও ফেরত দেয়না। “
বান্ধবীরা পেঁয়াজ নিয়ে চলে গেল। সেই থেকে প্রতি সকালে অমিত নেট ভর্তি পেঁয়াজ দেয় গোলাপের পরিবর্তে।
আবার তাদের দেখা হলো। রুমি বলল,”পেঁয়াজ ছাড়া আর কি কিছুই নেই চোখে পড়েনা আপনার। “
তিন্নি বলল,”যেমন ধরুন,আদা, রসূন,আলু, বেগুন, মাছ,মুলা,ঢেরস, পটল, টমেটো। “
অমিত বলল,”আর বলতে হবেনা বুঝতে পেরেছি। “
সেই থেকে নিয়মিত অমিত রুমিকে বাঁজার করে খাওয়ায়। ভালোবাসা পাওয়ার জন্য। বলতে পারেন গোলাপের পরিবর্তে। আর পেয়াজ তো আছেই। কলেজের বান্ধবীরা রুমিকে পেঁয়াজ সুন্দরী বলে ডাকে। রুমির শুনতে ভালোই লাগে। অমিতের জন্য সে একটি সুন্দর নাম পেয়েছে। পেঁয়াজ সুন্দরী।
একদিন তিন্নি বলল,”রুমি তুই কি অমিতকে সত্যই ভালোবাসিস?”
রুমি বলল,”অবশ্যই,,,,,,,,।”
তিন্নি বলল,”বাঁজার করে নিচ্ছিস এর মানে কি? “
রুমি বলল,”আমি তার পরীক্ষা নিলাম আসলে সে সংসার চালাতে পারবে কিনা,আমার কথা মত চলতে পারবে কিনা। “
তিন্নি বলল,”এখন তোর কি মনে হচ্ছে?”
রুমি বলল,”সে তো এ প্লাস,চল তার বাড়িতে যাব। “
দীর্ঘ দু’বছর ধরে অমিত তার বাগান সাজিয়েছে। তরীতরকারীতে ভড়া সে বাগান। নিজে খায়,রুমিকে দেয় বাঁজারে বিক্রি করে। প্রতিদিন দশজন লোক তার সবজি বাগানে কাজ করে। আছে পুুকুর ভড়া মাছ। গোয়ালে গরু।
রুমি ও তিন্নি পৌছে গেল,তারা দেখতে লাগলো অমিতের সৃষ্টি। পেঁপে গাছটার তলে অমিত দাঁড়িয়ে। গায়ে কাদা,আর ঘাড়ে গামছা,ঘামে ভিঁজেছে শরীল। রুমি নিজেকে সামলাতে পারলোনা। জড়িয়ে ধরলো অমিতকে। অমিত ভালোবাসার ভূখন্ড পেয়ে তাকে জড়িয়ে ধরলো। প্রিয়তমাকে পেয়ে অমিত আকাশের চাঁদ পেল।
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

Popular Post

পেঁয়াজ সুন্দরী : হাবিবুর রহমান

Update Time : ০১:৪৫:৩৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ অগাস্ট ২০২০
গল্পঃপেঁয়াজ সুন্দরী,,,,,,,,,
কবি হাবিবুর রহমান
দীঘল গ্রাম। রাস্তা অনেক সুন্দর। গ্রামও অনেক উন্নত। স্কুল কলেজ মাদ্রাসা সবি আছে। অমিতকে সবাই বখাটে ভাবে আসলে সে বখাটে নয়।
তার মনে প্রেম।
তার মনের ঘরের প্রিয়তমা,তাকে শুধু প্রেম শেখায়। অমিত গোলাপ ফুল নিয়ে বের হলো। লাল টকটকে সে ফুল। রুমি,তার ভালো লাগা ও ভালোবাসার প্রথমা রমনী রুমি।
রুমির বান্ধবী তিন্নি বলল,”বকাটা আবার আসে রে,মনে হয় পাগল হয়েছে। “
রুমি উত্তরে বলল,”আসতে দে। “
অমিত কাছে এলো। কিছু বলার সাহস পাচ্ছে না।
তিন্নি বলল,” ভাইয়া কিছু বলবেন কি? “
অমিতের হাত কাঁপছে। গোলাপ ফুল কাঁপছে। তিন্নি হাত কাঁপা দেখে হেসে ফেলল।
রুমি বলল,”গোলাপ দিলেই প্রেম হবে তাইনা,এই গোলাপের দাম কয় টাকা। “
অমিত এবার ঘামছে, রুমাল বের করে ঘাম মুছে নিয়ে বলল,” ত্রিশ টাকা। “
এবার রুমি বলল,”এই তিন্নি ত্রিশটা টাকা বের করে দে তো দোস্ত যত সব মিচকিন প্রেমিক। “
তিন্নি ত্রিশ টাকা বের করে অমিতের হাতে গুজে দিল।
তারপর তিন্নি রুমিকে বলল,”ফুলটি,,,,,,,,,,,,,,,,,,। “
রুমি বলল,”নিয়ে নে, গোলাপ জলে  ডুবিয়ে রেখে, তাজা করে আবার দিবে-পুরুষ মানুষকে চিনি। “
তিন্নি বলল,”অমিত ভাই বকা বকা লাগলেও আপনি চালাক তো। “
রুমি বলল,”গোলাপের বদলে যদি পেঁয়াজ দিত তাও এক পারছেন্ট ভেবে দেখতাম সই,চল যাই। “
দুই বান্ধবী চলে গেল। পিছনে রইলো অমিত।
গ্রাম হলেও এখানে শহরের ছোয়া লেগেছে। বড় বড় দালান। কলেজ গুলো অনেক উন্নত। বাহিরের ছেলে মেয়ে এখানে এসে লেখা পড়া করে।
রুমি ও তিন্নি মেসে থাকে। রুমিকে দেখতে মাঝে মাঝে
অমিত জানালার পাশে এসে দাড়ায়। আজ অমিত আসেনি।
রুমি জানালার দিকে তাকিয়েছিল। জানালার ও পাশটা ফাঁকা।
পাখি ডাকছে,সুন্দর একটি সকাল। রুমি ও তিন্নি প্রাইভেট পড়তে বের হলো। রাস্তায় অমিত দাড়িয়ে,তার হাতে নেট আর সে নেটের মধ্যে পেঁয়াজ।
তিন্নি বলল,”দোস্ত তোর সামনে  পেঁয়াজ দাঁড়িয়ে। “
অমিত কে উদ্দেশ্য করে তিন্নি বলল,” আপেলের চেয়েও দামি। “
রুমি বলল,”নিয়ে নে। “
তিন্নি বলল,”টাকাটা,,,,,,,,,,,।”
উত্তরে রুমি বলল,”তাকে বলে দে,মেয়েদের অনেক গুলো গুন আছে,বেশি টাকা তারা কখনও ফেরত দেয়না। “
বান্ধবীরা পেঁয়াজ নিয়ে চলে গেল। সেই থেকে প্রতি সকালে অমিত নেট ভর্তি পেঁয়াজ দেয় গোলাপের পরিবর্তে।
আবার তাদের দেখা হলো। রুমি বলল,”পেঁয়াজ ছাড়া আর কি কিছুই নেই চোখে পড়েনা আপনার। “
তিন্নি বলল,”যেমন ধরুন,আদা, রসূন,আলু, বেগুন, মাছ,মুলা,ঢেরস, পটল, টমেটো। “
অমিত বলল,”আর বলতে হবেনা বুঝতে পেরেছি। “
সেই থেকে নিয়মিত অমিত রুমিকে বাঁজার করে খাওয়ায়। ভালোবাসা পাওয়ার জন্য। বলতে পারেন গোলাপের পরিবর্তে। আর পেয়াজ তো আছেই। কলেজের বান্ধবীরা রুমিকে পেঁয়াজ সুন্দরী বলে ডাকে। রুমির শুনতে ভালোই লাগে। অমিতের জন্য সে একটি সুন্দর নাম পেয়েছে। পেঁয়াজ সুন্দরী।
একদিন তিন্নি বলল,”রুমি তুই কি অমিতকে সত্যই ভালোবাসিস?”
রুমি বলল,”অবশ্যই,,,,,,,,।”
তিন্নি বলল,”বাঁজার করে নিচ্ছিস এর মানে কি? “
রুমি বলল,”আমি তার পরীক্ষা নিলাম আসলে সে সংসার চালাতে পারবে কিনা,আমার কথা মত চলতে পারবে কিনা। “
তিন্নি বলল,”এখন তোর কি মনে হচ্ছে?”
রুমি বলল,”সে তো এ প্লাস,চল তার বাড়িতে যাব। “
দীর্ঘ দু’বছর ধরে অমিত তার বাগান সাজিয়েছে। তরীতরকারীতে ভড়া সে বাগান। নিজে খায়,রুমিকে দেয় বাঁজারে বিক্রি করে। প্রতিদিন দশজন লোক তার সবজি বাগানে কাজ করে। আছে পুুকুর ভড়া মাছ। গোয়ালে গরু।
রুমি ও তিন্নি পৌছে গেল,তারা দেখতে লাগলো অমিতের সৃষ্টি। পেঁপে গাছটার তলে অমিত দাঁড়িয়ে। গায়ে কাদা,আর ঘাড়ে গামছা,ঘামে ভিঁজেছে শরীল। রুমি নিজেকে সামলাতে পারলোনা। জড়িয়ে ধরলো অমিতকে। অমিত ভালোবাসার ভূখন্ড পেয়ে তাকে জড়িয়ে ধরলো। প্রিয়তমাকে পেয়ে অমিত আকাশের চাঁদ পেল।