সুবীর মণ্ডল ,বাঁকুড়া জেলা প্রতিনিধি:

সমগ্র  বাঁকুুুড়া জেলা সহ  দক্ষিণ বাঁকুড়ার  ৮ টি   ব্লক জুড়ে একটানা বৃষ্টিতে জলস্তর  বেড়েছে, তলিয়ে গেছে বহু  ফলন্ত ধানের  জমি। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বিপুল। বহু কাঁচা বাড়ি  ভেঙে গেছে। জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।

দক্ষিণ বাঁকুড়ার  প্রধান  প্রধান  নদী  শিলাবতী, কংসাবতী, জয়পণ্ডা, ভৈরবী বাকিঁর জলস্তর  বিপদসীমার  উপরে  বইছে। সমস্ত কজওয়ে  জলের তলায়। যোগাযোগ ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙ্গে পড়েছে।  প্রশাসনিক কর্মকর্তারা উদ্ধারকাজে  নেমে পড়েছে।  শিলাবতী নদীর জল বিপদ সীমার উপর বইছে। ঝাড়গ্রাম ও বাঁকুড়াগামী রাস্তার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন।

সিমলাপাল ব্লকের  সঙ্গে  খাতড়া  মহকুমা শহর বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। কালো মেঘে ঢেকে আছে  আকাশ। জনজীবন অতি ভারী বৃষ্টিতে   চরম  বিপর্যয়ের মুখে।  এই মুহূর্তে সমগ্র বাঁকুুুড়া জেলার বিভিন্ন  ব্লকসহ দক্ষিণ বাঁকুড়া স্তব্ধ। নদীর তীরবর্তী এলাকায়  আতঙ্ক বিরাজ করছে। পাকা স্কুল বাড়িতে  এলাকার মানুষকে রাখা হয়েছে।  বিশেষ সূত্র থেকে  জানা যায় যে মহকুমা  প্রশাসন  সব ধরনের  বিপর্যয় মোকাবিলায়  প্রস্তুত।   সতর্ক বার্তা   জানাল হাওয়া অফিস। এদিন সকাল থেকেই আকাশের মুখ ভার। দক্ষিণবঙ্গের সব জেলা ভারী বৃষ্টিতে ভিজছে। বৃষ্টি আরও বাড়বে দক্ষিণবঙ্গে। বাঁকুুুড়া জেলার সমস্ত ব্লকের  অবস্থা খারাপ।  খাতড়া শহরের সমস্ত দোকানপাট বন্ধ। রাস্তায়  শুনশান। বাজার  বসেনি।  ঘরবন্দি মানুষ।  সবজি চাষে ব্যাপক  ক্ষয়ক্ষতি। বহু চাষের জমিতে জল জমেছে। পুজোর মুখে  চাষে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি। ধান চাষের জমি তলিয়ে গেছে। বহু মানুষের  দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ।মুকুটমণিপুরের ড্যাম  জলে ভরে গেছে।

জল না ছাড়লে  বিপর্যয় নামতে পারে। কংসাবতী জলাধার  কর্তৃপক্ষ থেকে  সতর্কতা জারি করা হয়েছে। কলকাতা সহ প্রায় গোটা দক্ষিণবঙ্গেই বৃষ্টির পূর্বাভাস জারি করল আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর। গতকাল থেকে আজও   সারাদিন ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত হবে বলে জানানো হয়েছে মৌসুম ভবন তরফে। আগামী 24 ঘন্টায় জারি থাকবে এই পূর্বাভাস। এছাড়াও বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর সহ বেশ কিছু জেলায় প্রবল বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

তবে রাজ্যে সেভাবে প্রভাব না পড়লেও নিম্নচাপে প্রবল বৃষ্টি হবে.যার জেরে ফের ভারী বৃষ্টি হবে । এই কদিনের বৃর্ষ্টিতে জলমগ্ন পরিস্থিতি হয়েছিল শহরের একাধিক জায়গায়। এদিকে আজ সকাল থেকেই কলকাতায় বৃষ্টি নেমেছে। কলকাতার তাপমাত্রা ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ঘোরাফেরা করবে।

আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৬.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। স্বাভাবিকের চেয়ে ১ ডিগ্রি বেশি। গতকাল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিকের চেয়ে ১ ডিগ্রি কম। বাতাসে জলীয়বাষ্পের সর্বোচ্চ পরিমাণ ৯৭ শতাংশ। ইতিমধ্যে নবান্নের কন্ট্রোল রুম খোলা রাখা হয়েছে।এদিকে সমুদ্রে যাওয়ার নিষেধাজ্ঞা করা হয়েছে।এখন দেখার কতটা প্রভাব পড়তে চলেছে এই ঝড়ের।

দেশের পূর্ব ও পশ্চিম উপকূলবর্তী এলাকায় ফের নতুন করে আবহাওয়া বিগড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, শুক্রবার আরব সাগরের উপর ঘূর্ণিঝড় শাহিন তৈরি হতে পারে। এর জেরে প্রবল বৃষ্টি ও ঝড়ের সম্ভাবনা রয়েছে। অন্যদিকে ঘূর্ণিঝড় গুলাবের অবশিষ্ট অংশ বর্তমানে উত্তর-মধ্য মহারাষ্ট্র ও দক্ষিণ-পশ্চিম মধ্যপ্রদেশের উপর অবস্থান করছে। এরপর এটি উত্তর পশ্চিম দিকে চলে যেতে পারে। উত্তর পূর্ব আরবসাগরের উপর আগামীকাল ৩০ সেপ্টেম্বর নিম্নচাপ তৈরি হতে পারে। এরপর এটি উত্তর পশ্চিম দিকে বাঁক নিয়ে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় সাইক্লোনের আকার নিতে পারে। এরপর এটি ভারতীয় উপকূল ছেড়ে পাকিস্তানে মাকরান উপকূলের দিকে যেতে

মুকুটমনিপুর জলাশয় থেকে ছাড়া জলে ,সেই সঙ্গে সঙ্গে ঘূর্ণাবর্তের জোড়া ফলায় কাঁসাই, শিলাই(শিলাবতী) সহ  দক্ষিণ বাঁকুড়ার স্হানীয় খাল, দীঘি,পুকুর জলের তলায়। টানা বৃষ্টি, বাঁকুড়ায় রাজ্য সড়কে বন্ধ যান চলাচল।

Simlapal Bikrampur road এর shilaboti নদীর ব্রীজের উপর বন্যার জল । সতীঘাট জলমগ্ন হয়ে  পড়েছে। গন্ধেশ্বরীর উপর দিয়ে বইছে জল  প্রবলভাবে। এ-একটা  অশনিসংকেত বলে মনে হয়।

বিভিন্ন জায়গায়    যান চলাচল বন্ধ ।প্রশাসন ও  রাজ্য সড়ক কতৃপক্ষ   সজাগ।   ২৩টি ব্লকের কয়েক হাজার বিঘা  ধানের  জমি জলের তলায়।জেলার  বহু   মৌজায়   বেশ  ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে   ।এইভাবেই চললে হয়তো      প্রাণহানির  ঘটনা ঘটতে পারে বলে মনে করছে  স্থানীয় প্রশাসন।

এই ভাবে চললে আঠাত্তোর(১৯৭৮)এর ভয়ংকর বন্যকেও ছাপিয়ে যাবে!

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে