পারমাণবিক প্রযুক্তি উন্নয়নে এশিয়ার মুসলিম দেশ মালয়েশিয়াকে সহায়তা করার ঘোষণা দিয়েছে রাশিয়া।
শনিবার (২৮ জুন) সংবাদমাধ্যম দ্য স্টারের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
মালয়েশিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী দাতুক সেরি ফাদিল্লাহ ইউসুফ জানান, মালয়েশিয়ার সঙ্গে পারমাণবিক শক্তি উন্নয়নে দেশটির সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য সহযোগিতা চালিয়ে যেতে সম্মত হয়েছে রাশিয়া। প্রাতিষ্ঠানিক, মানবসম্পদ, কারিগরি, বাণিজ্যিক এবং আইনি দিকগুলোতে এ সহায়তার কথা জানিয়েছে দেশটি।
তিনি বলেন, রাশিয়ার পারমাণবিক শক্তিতে বিস্তৃত অভিজ্ঞতা মালয়েশিয়ার ভবিষ্যৎ শক্তি নিরাপত্তা বাড়ানোর ক্ষেত্রে বিবেচনা করা উচিত।
রাশিয়ায় চার দিনের সফর শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে ফাদিল্লাহ ইউসুফ বলেন, এই সফরের মূল উদ্দেশ্য ছিল দুই দেশের মধ্যে শক্তি সহযোগিতা জোরদার করা। সফরে রাশিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী আলেক্সি ওভারচুকের সঙ্গে পারমাণবিক শক্তির ক্ষেত্রে সহযোগিতার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছেন বলেও জানান তিনি।
মালয়েশিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাশিয়া শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক শক্তি ব্যবহারে উন্নত প্রযুক্তির অধিকারী। দেশটির পারমাণবিক শক্তি প্রযুক্তির অভিজ্ঞতা মালয়েশিয়ার জাতীয় শক্তি রূপান্তর রোডম্যাপের আকাঙ্ক্ষাকে সমর্থন করতে পারে।
মূলত, শুক্রবার (২৭ জুন) রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক সংস্থা রোসাটমের মহাপরিচালক আলেক্সি লিখাচেভের সঙ্গে একটি বৈঠক করেন মালয়েশিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী। এ বৈঠকে কারিগরি ও পরিচালন বিষয়, আইনি কাঠামো, প্রযুক্তি হস্তান্তর এবং কর্মী প্রশিক্ষণ নিয়ে আলোচনা হয়।
ফাদিল্লাহ বলেন, এই বৈঠক মালয়েশিয়ার কারিগরি সংস্থাগুলো এবং রোসাটমের মধ্যে পারমাণবিক সহযোগিতার সম্ভাব্য ক্ষেত্রগুলো মূল্যায়নের জন্য সরাসরি সংলাপের দ্বার উন্মোচন করেছে, যার মধ্যে রয়েছে বিদ্যুৎ গ্রিডের আধুনিকীকরণ ও শক্তিশালীকরণ, যা আসিয়ান পাওয়ার গ্রিড সহযোগিতার উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
তিনি বলেন, মালয়েশিয়ার মন্ত্রিসভা ইতোমধ্যে নীতিগতভাবে পারমাণবিক শক্তিকে ভবিষ্যতের জ্বালানি মিশ্রণের অংশ হিসেবে বিবেচনা করতে সম্মত হয়েছে। কারণ, বর্তমানে দেশের মূল ভিত্তিক (বেইসলোড) বিদ্যুৎ সরবরাহে ঘাটতি রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা কয়লা ও গ্যাসের ওপর নির্ভরতা কমাতে চাই, তবে বিদ্যুৎ সরবরাহ এখনো চ্যালেঞ্জের মুখে। হাইড্রো পাওয়ার উৎপাদনেও আমরা পানিসম্পদের সীমাবদ্ধতার কারণে সমস্যায় পড়ছি।
পারমাণবিক প্রযুক্তি বাস্তবায়নের আগে ব্যাপক গবেষণা ও জনসম্পৃক্ততা জরুরি উল্লেখ করে মালয়েশিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণের সমর্থন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, সংস্থা ও এনজিওদের সম্পৃক্ত করতে হবে। আন্তর্জাতিক চুক্তি স্বাক্ষর ও জনসমর্থন ছাড়া এটি এগিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়।