নিজস্ব প্রতিবেদক :
পাবনার রূপপুরে নির্মাণাধীন পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম নিউক্লিয়ার রি-অ্যাক্টর ভেসেল বা পারমাণবিক চুল্লি উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রোববার বেলা পৌনে ১২টার দিকে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নেন তিনি।
এই চুল্লি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ। যেখানে মূল জ্বালানি ‘ইউরেনিয়াম’ থাকবে। এটিকে বিদ্যুৎকেন্দ্রের হৃদপিণ্ডও বলা হয়ে থাকে।
চুল্লি স্থাপনের বিষয়টিকে একটি মাইলফলক হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। এই পারমাণবিক জ্বালানি পুড়িয়ে মূল শক্তি উৎপাদন হবে এবং সেখান থেকে এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হবে।
এই ইউনিটের রিঅ্যাক্টর গত বছর অক্টোবরে রাশিয়া থেকে দেশে এসে পৌঁছায় এবং নভেস্বরে সেটি রূপপুরে নেওয়া হয়। এ বছর আগস্টে দ্বিতীয় ইউনিটের রিঅ্যাক্টর এসেছে।
এই ভারী যন্ত্রগুলো রাশিয়ার ভলগা নদী থেকে প্রায় ১৪ হাজার কিলোমিটার সামুদ্রিক পথ পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশের মোংলা বন্দর দিয়ে রূপপুরের কাছে পদ্মায় এসে পৌঁছায়। এ রিয়্যাক্টর ভেসেলের ওজন ৩৩৩ দশমিক ৬ টন। যা বানাতে দুই বছরের বেশি সময় লাগে।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় জানায়, মোট দুই হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতার প্রথম ইউনিটটির নির্মাণকাজ ২০২৩ সালের মধ্যে শেষ হবে।
এই ইউনিট প্রতিদিন এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারবে এবং আসছে ২৪ সালের মধ্যে এটি বাণিজ্যিক উৎপাদনে যাবে।
সমান সক্ষমতার দ্বিতীয় ইউনিটটি ২৪ সালের শেষ দিকে বাণিজ্যিক উৎপাদনে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রকল্প সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, চুল্লিা বসানোর আগে অন্যান্য অবকাঠামোগত কাজগুলো শেষ করা হয়েছে। এখন বাকি যা কাজ রয়েছে তার প্রায় পুরোটাই যান্ত্রিক ও কারিগরি।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের খরচ নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকারও বেশি। যার বেশির ভাগ আসছে রাশিয়ান সরকারের ঋণ সহায়তা থেকে।
স্বাধীনতার পর গত ৫০ বছরের মধ্যে রূপপুর প্রকল্পই দেশের সবচেয়ে বড় এবং অর্থনৈতিক দিক থেকে সর্বাধিক ব্যয়বহুল প্রকল্প।
পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০২৩ সালে প্রথম ইউনিট থেকে ১২শ মেগাওয়াট এবং ২০২৪ সালে দ্বিতীয় ইউনিট থেকেও ১২শ মেগাওয়াট অর্থাৎ মোট ২ হাজার ৪শ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে।