ক্রীড়া ডেস্ক :
চলমান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বাঁচা-মরার লড়াইয়ে পাপুয়া নিউগিনির মুখোমুখি বাংলাদেশ।
সুপার টুয়েলভে যেতে হলে ‘বি’ গ্রুপের এই ম্যাচে জয়ের বিকল্প নেই টাইগারদের। কম করে হলেও অন্তত ৩ রানের জয় পেলেই নিশ্চিত হবে টাইগারদের সুপার টুয়েলভ। সেই লক্ষ্যে খেলতে নেমে পিএনজিকে ৮৪ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়েই পরের রাউন্ড নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ।
প্রথমে ব্যাট করে ১৮১ রানের বিশাল স্কোর গড়ে বাংলাদেশ। পরে জবাব দিতে নামা পাপুয়া নিউগিনিকে মাত্র ৯৭ রানেই গুটিয়ে দেয় টাইগার বোলাররা। ব্যাটে-বলে অলরাউন্ড নৈপুণ্য দেখানোয় এদিনও ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছেন সাকিব আল হাসান। ব্যাট হাতে ৪৬ রান করার পর বল হাতে মাত্র ৯ রানে নিয়েছেন ৪টি উইকেট।
টাইগারদের করা ওই বিশাল স্কোরের জবাব দিতে নেমে শুরুটা দেখেশুনে করলেও সাইফুদ্দিন-তাসকিন-সাকিবের বোলিং তোপে মাত্র ২৯ রানেই ৭টি উইকেট খুইয়ে রীতিমত ধুঁকতে থাকে বিশ্বকাপের নবাগত সদস্য পাপুয়া নিউগিনি।
তবে সেখান থেকে ৪৬ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে দলের স্কোরকে একশ রানের কাছে নিয়ে যান ৮ নম্বরে নামা কিপলিন ডোরিগো। তাঁর ৩৪ বলের এই ইনিংসে ছিল দুটি করে চার ও ছক্কার মার। এছাড়া দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১১ রান আসে ৯ নম্বরে নামা চাঁদ সোপারের ব্যাট থেকে। এই দুজন ছাড়া পিএনজির বাকিরা ছিলেন আসা-যাওয়ার মিছিলে।
এদিন মাত্র ৯ রান দিয়ে ৪টি উইকেট নিয়ে আরেকটি অনন্য রেকর্ড স্পর্শ করলেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ৩৯টি উইকেট নিয়ে এতদিন এই রেকর্ডের মালিক ছিলেন ৩৪ ম্যাচ খেলা পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক শহীদ আফ্রিদি।
মাত্র ২৮ ম্যাচেই তাঁর এই রেকর্ডে ভাগ বসালেন সাকিব। সমান ৩৯টি করে উইকেট নিয়ে বিশ্বকাপে এখন যৌথভাবে সেরা উইকেটশিকারী সাকিব। আজ অবশ্য এককভাবেই সেরা হওয়ার সুযোগ ছিল টাইগার তারকার। তবে সেটা আর হতে দেননি পিএনজি ব্যাটার কিপলিন ডোরিগা। যাইহোক, পরের ম্যাচেই অবশ্য এককভাবে মুকুট নিজের মাথায় পরবেন সাকিব।
এছাড়া দুটি করে উইকেট নিয়েছেন মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন ও তাসকিন আহমেদ। আর মাহেদী হাসান একটি উইকেট নিলেও ৩৪ রান দিয়ে উইকেটশূন্য থাকেন দলের মূল বোলার মুস্তাফিজুর রহমান।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) মাস্কাটের আল আমেরাতে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ব্যাট করতে নেমেও নেতৃত্ব দেন সামনে থেকেই। সমান তিনটি করে চার-চক্কা হাঁকিয়ে মাত্র ২৭ বলে ফিফটি হাঁকানো মাহমুদউল্লাহ আউটও হন পরের বলেই।
এছাড়া দলের সেরা তারকা সাকিব আল হাসানের ব্যাট থেকে আসে মূল্যবান ৪৬টি রান। ৩৯ বল মোকাবেলায় সাকিবের অনন্য মাইলফলক স্পর্শ করা এই ইনিংসে ছিল কেবল ৩টি ছক্কার মার। যে ইনিংসে এদিন তিনি লঙ্কান গ্রেট কুমার সাঙ্গাকারা ও ভারতের ভবিষ্যৎ অধিনায়ক রোহিত শর্মাকে টপকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেরা রান সংগ্রাহকের তালিকায় চার নম্বরে অবস্থান করে নিয়েছেন।
এছাড়া তৃতীয় সর্বোচ্চ ২৯ রান আসে ক্রমাগত ব্যর্থ হওয়া ওপেনার লিটন দাসের ব্যাট থেকে। আর শেষ দিকে আফিফের ১৪ বলে ২১ এবং মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনের মাত্র ৬ বলে ১৯ রানের ক্যামিও ইনিংসে নির্ধারিত ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৮১ রানের বিশাল স্কোর গড়ে বাংলাদেশ।
প্রতিপক্ষ পাপুয়া নিউগিনির পক্ষে ২টি করে উইকেট লাভ করেন কাবুয়া মোরেয়া, ড্যামিয়েন রাভু ও অধিনায়ক আসাদ ভালা। বাকি উইকেটটি ঝুলিতে ভরেন মাত্র একটি ওভার করে ছয় রান দেয়া সাইমন আতাই।