সারাদিনের ক্লান্তি কাটাতে এক কাপ কালো কফি, হালকা গান আর প্রিয় বইয়ের পাতা ওল্টানো। কিন্তু শুধু পান করাই বা কেন? কফির আরও নানা গুণ রয়েছে। দোকানে যে কফির গুঁড়ো কিনতে পাওয়া যায় সেগুলি এবং কফি বিনস বা কফির বীজের রয়েছে নানা গুণ। আসুন জেনে নেওয়া যাক কফির নানা ব্যবহার্য গুন।

ত্বক পরিচর্যা:
ত্বকের জন্য কফি খুবই উপকারি। বলিরেখা দূর করে, মৃত কোষ দূর করে, এমনকি অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট হিসাবেও কফি কাজ করে। এক চা চামচ বেকিং সোডার সঙ্গে কফি পাউডার মেশান। তারপর মিশ্রণটা মুখে লাগিয়ে কিছুক্ষণ রেখে ভালো করে ধুয়ে নিন।

কেশ পরিচর্যা:
শ্যাম্পু করে নেওয়ার পর কোল্ড কফি মাথায় ঢেলে কিছুক্ষণ রেখে তারপর মাথা ধুয়ে নিন। কন্ডিশনার হিসেবে কফি দারুণ কাজ করে।

সুগন্ধী হিসেবে:
রেফ্রিজারেটরের দুর্গন্ধের সঙ্গে আমরা কম বেশি সকলেই পরিচিত। রেফ্রিজারেটরের ভিতরে একটা কাপে কিছুটা কফি রেখে দিন। কফি সমস্ত দুর্গন্ধ টেনে নেবে। রেফ্রিজারেটরকে দুর্গন্ধ মুক্ত রাখবে।

আলমারির মধ্যে জামা কাপড় ঠাসা। এ দিকে লকডাউনে সারাক্ষণই বাড়িতে বসে। ভ্যাপসা গন্ধ আর আর্দ্রভাব দূর করতে টিস্যু কাগজে মুড়ে আলমারি বা ড্রয়ার কিংবা ওয়ার্ডরোবের তাকে রেখে দিন কফি বীজ বা কফি বিনস। এমনই জানান অন্দরসজ্জাবিদ উর্বশী বসু।

কীটনাশক কফি:
# কফির কড়া গন্ধ পোষ্যকে পোকামাকড় থেকে নিরাপদ রাখবে।
# কফির কড়া গন্ধে রান্নাঘরেও পোকামাকড়ের উপদ্রব কমবে। কফি খেতে খেতে তলানির অংশ তুলোতে ভিজিয়ে রান্নাঘরের কোণে রাখতে পারেন।
# কফির গুঁড়ো টিস্যু কাগজে মুড়ে কিংবা কফির বীজ ব্যবহারের পর সেই অংশও পরিষ্কার কাপড়ে মুড়ে পুঁটলি করে রান্নাঘরের কোণে রাখা যেতে পারে।

পান করবেন না হাতে লাগাবেন?
# কফির একটা তরতাজা সুগন্ধ রয়েছে। আর এই সুগন্ধকেই কাজে লাগান হাতে। মানে? হাতের সুগন্ধী হিসাবে ব্যবহার করে দেখতে পারেন।
# সারাদিন নানা কাজ করে আপনার হাতও কিন্তু ক্লান্ত। হাতে অনেক সময় খারাপ গন্ধও হয়। তাদের এই পদ্ধতি খুব কাজে লাগবে। সামান্য জলের সঙ্গে কফি পাউডার হাতে ঘষে নিলেই যথেষ্ট। এমনকি হাতে পিঁয়াজ রসুনের গন্ধ থাকলে কিংবা মাছ কেটে আঁশটে গন্ধ দূর করতে হলেও একই ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।

অন্দর সজ্জাতেও কফির ব্যবহার:
# নিজের বাগানের গাছেরও যত্ন নিতে পারেন কফি দিয়ে। জলের সঙ্গে মিশিয়ে বা জৈব সারের সঙ্গে মিশিয়েও দিতে পারেন। এতে মাটির মধ্যে নাইট্রোজেনের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। গাছের বৃদ্ধিও ভাল হয়। তবে কফির মাত্রা যেন খুব বেশি না হয়, সেটাও দেখতে হবে।
# কফি দিয়ে কাঠের আসবাবপত্রও খুব ভালভাবে পরিষ্কার করা যায়। কফি জলে ফুটিয়ে তারপর ঠান্ডা করে একটি কাপড়ের সাহায্যে সেটি কাঠের আসবাবের উপরে লাগিয়ে দিন। পরিষ্কারও যেমন হবে, একই সঙ্গে আসবাবের রংও ফিরে পাবেন। জেল্লা ফিরে পাবে পুরনো আসবাব।
# এমন কি রুম ফ্রেশনার হিসেবেও কফির সিরাপ স্প্রে করে ব্যবহার করা যেতে পারে। কফি বীজ কাচের পাত্রে রেখে দিতে পারেন। হালকা এবং গাঢ় রঙের বীজের ব্যবহারে অন্য রকম মাত্রা পেতে পারে পাত্রটি। দিব্যি রেখে দিন টেবিলে। তার উপরে কৃত্রিম ফুলও রেখে দিতে পারেন। দেখতেও লাগবে চমৎকার।

মাছ ও মাংসের ম্যারিনেশনেও হতে পারে কফির ব্যবহার: 
পাত্র কড়াইতে বসিয়ে তাতে মাঝারি আকারের একটা পিঁয়াজ, চার কোয়া রসুন, ২৪০ মিলিগ্রাম কফি, ৬০ মিলিগ্রাম বালসামিক ভিনিগার, ৫৫ মিলিগ্রাম ব্রাউন সুগার, ৬০ মিলিগ্রাম সর্ষে বাটা, তিন টেবিল চামচ অলিভ অয়েল, গোলমরিচ আর নুনের গুঁড়ো যোগ করুন। একটু নেড়ে গ্যাস বন্ধ করে দিন। এই মিশ্রণটা মাছ-মাংসে মাখিয়ে ঘণ্টা দুই রেখে দিয়ে তারপর রান্না করে দেখুন। রসনা কিন্তু তৃপ্তই হবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে