আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

পাকিস্তানের কোয়েটা শহরে একটি বিলাসবহুল হোটেলে বোমা বিস্ফোরণে অন্তত চারজন নিহত এবং ১২ জন আহত হয়েছেন।

ধারণা করা হচ্ছে, পাকিস্তানে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূতকে লক্ষ্য করে সেরিনা হোটেলের গাড়ি পার্কিং এলাকায় এই বোমা হামলা হয়েছে। 

স্থানীয় সময় বুধবার (২১ এপ্রিল) রাত ১০টা ১৫ মিনিটে ওই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এর পর পরই ঘটনাস্থলে পৌঁছায় দমকল, উদ্ধার কর্মকর্তা এবং নিরাপত্তা বাহিনী। কাউকেই ঘটনাস্থলে যেতে দেয়া হয়নি।

এই বোমা হামলার ভিডিও ফুটেজ সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করা হয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, হোটেলের গাড়ি পার্কিং এলাকায় আগুন জ্বলছে।

পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ রশিদ আহমেদ স্থানীয় একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে বলেছেন, বিস্ফোরক বোঝাই একটি গাড়ি সে হোটেলে বিস্ফোরণ ঘটায়। এই ঘটনাকে ‘সন্ত্রাসী কাজ’ হিসেবে বর্ণনা করেন তিনি।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের কাছে তালেবানের একজন মুখপাত্র নিশ্চিত করেছেন যে, এটি ছিল একটি আত্মঘাতি বোমা হামলা এবং একটি গাড়ি ভর্তি বিস্ফোরক নিয়ে ওই হোটেলে হামলা চালানো হয়েছে।

এদিকে পাকিস্তানী তালেবান বলেছে, এই হামলা তারাই চালিয়েছে। এর বাইরে বিস্তারিত আর কিছুই বলেনি তারা।

কোয়েটা শহরের সেরিনা হোটেল বেশ সুপরিচিত। সরকারি কর্মকর্তা এবং সে এলাকা সফররত পদস্থ ব্যক্তিরা সেরিনা হোটেলে অবস্থান করেন।

জানা যায়, পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশে আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী কোয়েটা শহরে অবস্থান করছেন চীনের রাষ্ট্রদূত। তবে হামলার সময় রাষ্ট্রদূত হোটেলে ছিলেন না।

পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কোয়েটা সফররত চীনের রাষ্ট্রদূত আরেকটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। সেজন্য হামলার সময় তিনি সে হোটেলে ছিলেন না।

এই হামলার পরেও চীনের রাষ্ট্রদূতে মনোবল অটুট রয়েছে এবং বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সেখানে তার সফর অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন বেলুচিস্তান প্রদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

বেলুচিস্তান হচ্ছে পাকিস্তানের অন্যতম দরিদ্র এলাকা এবং এখানে বেশ কিছু সশস্ত্র গোষ্ঠী, বিচ্ছিন্নতাবাদী এবং ইসলামী চরমপন্থিরা সক্রিয় রয়েছে। বিচ্ছিন্নতাবাদীরা বেলুচিস্তানকে পাকিস্তান থেকে আলাদা করতে চায় এবং সে অঞ্চলে চীনের তৈরি অবকাঠামোর বিরোধিতা করছে তারা।

বিচ্ছিন্নতাবাদীরা মনে করে, পাকিস্তানের সরকার এবং চীন একত্রিত হয়ে বেলুচিস্তানের গ্যাস এবং খনিজ সম্পদ স্থানীয় জনগণের কাজে না লাগিয়ে সেগুলোর অপব্যবহার করছে।

সম্প্রতি পাকিস্তানী তালেবান এবং অন্যান্য জঙ্গি সংগঠনগুলো আফগানিস্তান সীমান্তে উপজাতীয় এলাকায় তাদের হামলা বৃদ্ধি করেছে।

সূত্র :  বিবিসি বাংলা

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে