Dhaka ১২:০৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পাকিস্তানি গোয়েন্দার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা, গ্রেপ্তার ভারতীয় নারী ইউটিউবার

  • Reporter Name
  • Update Time : ০১:৪৩:২১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ মে ২০২৫
  • ৪৩ Time View

পাকিস্তানের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে জ্যোতি মালহোত্রা নামে ভারতের জনপ্রিয় এক ইউটিউবারকে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির পুলিশ। এ ছাড়াও তার সহযোগী আরও পাঁচজন গ্রেপ্তার হয়েছেন। তারা মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইএসের কাছে তথ্য পাচার করতেন বলে দাবি ভারতীয় গোয়েন্দাদের। এ ছাড়া, জ্যোতির বিরুদ্ধে পাকিস্তানি এক এজেন্টের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে জড়ানোর তথ্যও পাওয়া গেছে বলে দাবি তাদের।  

শনিবার (১৭ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে হিন্দুস্তান টাইমস।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারতের হরিয়ানাভিত্তিক ভ্রমণ ব্লগার জ্যোতি মালহোত্রা। ইউটিউবে ‘ট্রাভেল উইথ জো’ নামে একটি চ্যানেল আছে তার। তিন লাখ ৭৭ হাজারেরও বেশি সাবস্ক্রাইবার সেই চ্যানেলে। ভ্রমণ সংক্রান্ত ভিডিও বানিয়ে নিজের ওই চ্যানেলে আপলোড করতেন জ্যোতি। এ ছাড়াও নয়াদিল্লির পাকিস্তান দূতাবাসের কর্মকর্তা এহসান উর রহিম ওরফে দানিসের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠতা ছিল এ নারী ভ্লগারের। সেই সূত্র ধরে দানিসের উদ্যোগে ২০২৩ সালে ভিসা নিয়ে পাকিস্তানেও গিয়েছিলেন তিনি।

পুলিশের বরাতে হিন্দুস্তান টাইমস বলছে, পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থাকে সংবেদনশীল তথ্য সরবরাহের কথা ইতোমধ্যে স্বীকার করেছেন জ্যোতি। তার বিরুদ্ধে ১৯২৩ সালের অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের ৩ ও ৫ ধারা এবং ভারতীয় ন্যায় সংহিতা আইনের ১৫২ ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩ সালে দুবার পাকিস্তান সফর করেছিলেন ট্র্যাভেল ব্লগার জ্যোতি মালহোত্রা। হরিয়ানা ও পাঞ্জাবজুড়ে একটি গুপ্তচর নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। 

অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে দিল্লিতে পাকিস্তান হাইকমিশনে যান জ্যোতি। সেখানে তিনি নয়াদিল্লিতে পাকিস্তান হাইকমিশনের (পিএইচসি) কর্মী এহসান-উর-রহিম ওরফে দানিশের সংস্পর্শে আসেন। দানিশের সঙ্গে যোগাযোগের কথা স্বীকারও করেছেন জ্যোতি। তার মাধ্যমেই পাকিস্তানে ভ্রমণে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে এহসান ওরফে দানিশ তাকে পরিচয় করিয়ে দেন পাকিস্তানি নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের সঙ্গে। 

তদন্তকারীরা বলছেন, নিয়মিত যোগাযোগের সূত্র ধরে পাকিস্তানি একজন গোয়েন্দা সদস্যের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কেও জড়িয়ে পড়েন জ্যোতি মালহোত্রা। এমনকি তার সঙ্গে ইন্দোনেশিয়ার বালিতেও ভ্রমণ করেছিলেন তিনি।

হরিয়ানা পুলিশ জানিয়েছেন, যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের ফোন-সহ অন্যান্য ব্যবহৃত ডিভাইস ঘেটে দেখা হচ্ছে। কার কার সঙ্গে তারা যোগাযোগ রাখতেন, কী তথ্য আদান-প্রদান হতো, সব কিছু খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জ্যোতি ছাড়াও কৈথাল, পানিপথ, নুহ, চিকা গ্রাম থেকে আরও কিছু লোককে গুপ্তচরবৃত্তির জন্য গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এদিকে, নয়াদিল্লির পাকিস্তান দূতাবাসের কর্মকর্তা এহসান-উর-রহিম ভারত সরকার কর্তৃক অবাঞ্ছিত ব্যক্তি হিসেবে ঘোষিত হয়েছেন। গত ১৩ মে ভারত থেকে তাকে চলে যেতেও নির্দেশ জারি করা হয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

পাকিস্তানি গোয়েন্দার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা, গ্রেপ্তার ভারতীয় নারী ইউটিউবার

Update Time : ০১:৪৩:২১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ মে ২০২৫

পাকিস্তানের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে জ্যোতি মালহোত্রা নামে ভারতের জনপ্রিয় এক ইউটিউবারকে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির পুলিশ। এ ছাড়াও তার সহযোগী আরও পাঁচজন গ্রেপ্তার হয়েছেন। তারা মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইএসের কাছে তথ্য পাচার করতেন বলে দাবি ভারতীয় গোয়েন্দাদের। এ ছাড়া, জ্যোতির বিরুদ্ধে পাকিস্তানি এক এজেন্টের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে জড়ানোর তথ্যও পাওয়া গেছে বলে দাবি তাদের।  

শনিবার (১৭ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে হিন্দুস্তান টাইমস।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারতের হরিয়ানাভিত্তিক ভ্রমণ ব্লগার জ্যোতি মালহোত্রা। ইউটিউবে ‘ট্রাভেল উইথ জো’ নামে একটি চ্যানেল আছে তার। তিন লাখ ৭৭ হাজারেরও বেশি সাবস্ক্রাইবার সেই চ্যানেলে। ভ্রমণ সংক্রান্ত ভিডিও বানিয়ে নিজের ওই চ্যানেলে আপলোড করতেন জ্যোতি। এ ছাড়াও নয়াদিল্লির পাকিস্তান দূতাবাসের কর্মকর্তা এহসান উর রহিম ওরফে দানিসের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠতা ছিল এ নারী ভ্লগারের। সেই সূত্র ধরে দানিসের উদ্যোগে ২০২৩ সালে ভিসা নিয়ে পাকিস্তানেও গিয়েছিলেন তিনি।

পুলিশের বরাতে হিন্দুস্তান টাইমস বলছে, পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থাকে সংবেদনশীল তথ্য সরবরাহের কথা ইতোমধ্যে স্বীকার করেছেন জ্যোতি। তার বিরুদ্ধে ১৯২৩ সালের অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের ৩ ও ৫ ধারা এবং ভারতীয় ন্যায় সংহিতা আইনের ১৫২ ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩ সালে দুবার পাকিস্তান সফর করেছিলেন ট্র্যাভেল ব্লগার জ্যোতি মালহোত্রা। হরিয়ানা ও পাঞ্জাবজুড়ে একটি গুপ্তচর নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। 

অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে দিল্লিতে পাকিস্তান হাইকমিশনে যান জ্যোতি। সেখানে তিনি নয়াদিল্লিতে পাকিস্তান হাইকমিশনের (পিএইচসি) কর্মী এহসান-উর-রহিম ওরফে দানিশের সংস্পর্শে আসেন। দানিশের সঙ্গে যোগাযোগের কথা স্বীকারও করেছেন জ্যোতি। তার মাধ্যমেই পাকিস্তানে ভ্রমণে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে এহসান ওরফে দানিশ তাকে পরিচয় করিয়ে দেন পাকিস্তানি নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের সঙ্গে। 

তদন্তকারীরা বলছেন, নিয়মিত যোগাযোগের সূত্র ধরে পাকিস্তানি একজন গোয়েন্দা সদস্যের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কেও জড়িয়ে পড়েন জ্যোতি মালহোত্রা। এমনকি তার সঙ্গে ইন্দোনেশিয়ার বালিতেও ভ্রমণ করেছিলেন তিনি।

হরিয়ানা পুলিশ জানিয়েছেন, যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের ফোন-সহ অন্যান্য ব্যবহৃত ডিভাইস ঘেটে দেখা হচ্ছে। কার কার সঙ্গে তারা যোগাযোগ রাখতেন, কী তথ্য আদান-প্রদান হতো, সব কিছু খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জ্যোতি ছাড়াও কৈথাল, পানিপথ, নুহ, চিকা গ্রাম থেকে আরও কিছু লোককে গুপ্তচরবৃত্তির জন্য গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এদিকে, নয়াদিল্লির পাকিস্তান দূতাবাসের কর্মকর্তা এহসান-উর-রহিম ভারত সরকার কর্তৃক অবাঞ্ছিত ব্যক্তি হিসেবে ঘোষিত হয়েছেন। গত ১৩ মে ভারত থেকে তাকে চলে যেতেও নির্দেশ জারি করা হয়েছে।