Dhaka ১১:৩১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ মে ২০২৫, ২৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পাঁচ সচিবকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা : পদত্যাগ না করলে অফিস ঘেরাও কর্মসূচি

  • Reporter Name
  • Update Time : ১২:৫৮:০৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ মে ২০২৫
  • ১১ Time View

ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের সুবিধাভোগী কর্মকর্তা দাবি করে পানি সম্পদ সচিব নাজমুল আহসান, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব (চলতি দায়িত্ব) মো. তোফাজ্জল হোসেনসহ পাঁচ সচিবকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে বৈষম্যবিরোধী কর্মচারী ঐক্য ফোরাম। একইসঙ্গে তাদের যেখানে পাওয়া যাবে সেখানেই প্রতিহত করাসহ পর্যায়ক্রমে তাদের অফিস ঘেরাও করে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হবে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি।

সম্প্রতি গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব কথা জানানো হয়েছে। এর আগে সংগঠনটির নির্বাহী কমিটির তৃতীয় সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। গণমাধ্যমে পাঠানো ওই বিবৃতিতে সই করেছেন সংগঠনটির সভাপতি এ বি এম আব্দুস সাত্তার।

সভায় যে ১৪টি সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে–

১. সরকার, বিভিন্ন কমিশন/সংস্কার কমিশন এবং জনপ্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের নিয়োগ/পদায়নকৃত বিদেশি নাগরিকদের নিয়োগ/পদায়ন বাতিল চেয়ে সর্বোচ্চ আদালতে রিট দায়ের।

২. নাজমুল আহসান, সচিব, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়; মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়া, সচিব, কৃষি মন্ত্রণালয়; জাহেদা পারভীন, সচিব, সমন্বয় ও সংস্কার, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ; মো. মফিদুর রহমান, সচিব, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং মো. তোফাজ্জল হোসেন, সচিব, (চলতি দায়িত্ব), মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়কে অবাঞ্ছিত ঘোষণা এবং তাদের যেখানে পাওয়া যাবে সেখানেই প্রতিহত করা। পর্যায়ক্রমে তাদের অফিস ঘেরাও করে তাদেরকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা।

৩. চুক্তিভিত্তিক নিয়োগকৃত বিতর্কিত কর্মকর্তা ও প্রশাসনে এখনো কর্মরত স্বৈরাচারের দোসর দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারাই রাষ্ট্রীয় প্রশাসনে অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। বিতর্কিত চুক্তিভিত্তিক নিয়োজিত কর্মকর্তাদের চুক্তি বাতিল ও স্বৈরাচারের দোসর কর্মকর্তাদের অপসারণ করার দাবিতে আগামী ১২ মে মঙ্গলবার সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে ফোরামের সদস্যরা উপস্থিত হবেন। আগামী ১৫ মে কালো পতাকা মিছিল কর্মসূচি। মিছিলটি বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাব থেকে শুরু হয়ে দৈনিক বাংলা মোড়-জিরো পয়েন্ট-রেলভবন হয়ে পুনরায় প্রেসক্লাবে শেষ হবে।

৪. সচিবালয় নিয়োগ বিধিমালা অনুযায়ী সহকারী সচিব (নন-ক্যাডার)-এর ফিডার পদে পদোন্নতি যোগ্য প্রশাসনিক/ব্যক্তিগত কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে কমপক্ষে ৩০০ জনকে সুপার নিউমারারি পদ সৃষ্টিপূর্বক সহকারী সচিব পদে পদোন্নতি প্রদানে জোরালো ভূমিকা পালন।

৫. সচিবালয় ও মাঠ পর্যায়ে কর্মরত সকল নন-ক্যাডার কর্মচারীদের রেশন সুবিধা চালু করতে পদক্ষেপ গ্রহণ।

৬. বিধিবহির্ভূতভাবে গঠিত জনপ্রশাসন, স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জন্য বদলি ও পদোন্নতি বিষয়ক উপদেষ্টা কমিটি অবিলম্বে বাতিল করা না হলে পরবর্তীতে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণার প্রস্তুতি গ্রহণ।

৭. ৫ আগস্ট, ২০২৪-এর পূর্বে পদোন্নতি প্রাপ্ত দুর্নীতিবাজ-আওয়ামী দোসর যুগ্ম সচিব/অতিরিক্ত সচিবদের পদোন্নতি দেওয়া এবং তাদের কাউকে সচিব/সংস্থার প্রধান হিসেবে নিয়োগ প্রদান নিষিদ্ধ করার দাবিতে কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করা।

৮. ৫ আগস্টের পর ওএসডি অথবা অপসারণের পর আবারও কোনো কোনো কর্মকর্তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এ প্রক্রিয়ায় জড়িত কর্মকর্তা/পৃষ্ঠপোষকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

৯. জুলাই গণআন্দোলনের পর ৫০০ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও ১৩০ জন সিনিয়র পুলিশ অফিসারকে বিভিন্ন দপ্তরে সংযুক্ত করা হয়েছে। তাদেরকে অবিলম্বে চাকরিচ্যুত করা। এসব কর্মকর্তা ঢাকায় একত্রে অবস্থান করে সরকার ও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে নানা ধরনের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তাদের ক্ষেত্রমতে বাধ্যতামূলক অবসর এবং দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে পদায়নের ব্যবস্থা করা।

১০. জেলা প্রশাসক নিয়োগে ঘুষ কেলেঙ্কারিতে জড়িত জনপ্রশাসন সচিব, যুগ্ম সচিব আলী আজম ও ড. জিয়াসহ সংশ্লিষ্ট সবার বিরুদ্ধে অবিলম্বে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ নিশ্চিত করা। এ বিষয়ে তিনজন উপদেষ্টার সমন্বয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্ট প্রকাশ করা।

১১. প্রশাসনে উচ্চ পর্যায়ে পদোন্নতির ক্ষেত্রে একটি গ্রহণযোগ্য নীতিমালা অনুসরণ করা হয়। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার চাকরিকালীন সময়ে তার কর্মকাণ্ড, বার্ষিক গোপনীয় অনুবেদন ইত্যাদি পর্যালোচনা এবং নির্ধারিত বেঞ্চ মার্ক আছে কি না যাচাই করা ইত্যাদি। সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার এসব বিষয় সঠিক থাকলে কোনো গোয়েন্দা প্রতিবেদন বিবেচনা করা সমীচীন নয়। ডিজিএফআইর প্রতিবেদন সিভিল অফিসারদের বেলায় নিতান্তই অবান্তর। কোনো বিশেষ ক্ষেত্রে যদি গোয়েন্দা প্রতিবেদন প্রয়োজন হয় সেক্ষেত্রে এনএসআইর প্রতিবেদন চাইলেও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা যেন সামাজিকভাবে হেয় না হন বা কোনো প্রকার হয়রানির শিকার না হন সে বিষয়টি নিশ্চিত করা। বর্তমান এনএসআই অধিকাংশ আওয়ামী অনুগত ও নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারী দ্বারা পরিচালিত। সে কারণে এনএসআই পুনর্গঠিত না হওয়া পর্যন্ত এ সংস্থার প্রতিবেদন চাওয়া থেকে বিরত থাকা নিশ্চিত করা। সম্প্রতি দেখা গেছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত ২০২২-২৩ সালের গোয়েন্দা প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে ২৪ ব্যাচের যুগ্ম সচিব পদে পদোন্নতির কালে ব্যাচের সর্বশেষ কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেওয়া হলেও ১৮৫ জন কর্মকর্তাকে পদোন্নতি বঞ্চিত করা হয়েছে। বঞ্চিত এসব কর্মকর্তাদের বিষয়টি রিভিউ করে অবিলম্বে ন্যায় বিচার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ নিশ্চিত করা।

১২. ইতোমধ্যে যেসব জেলা প্রশাসক যুগ্ম সচিব হিসেবে পদোন্নতি প্রাপ্ত হয়েছেন তাদের স্থলে ২৫ ও ২৭ ব্যাচের নিরপেক্ষ এবং দক্ষ কর্মকর্তাদের জেলা প্রশাসক হিসেবে পদায়ন নিশ্চিত করা। কোনোভাবেই আওয়ামী দোসর কাউকে জেলা প্রশাসক পদে নিয়োগ দেওয়া যাবে না। এক্ষেত্রে সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা।

১৩. জনপ্রশাসনে শৃঙ্খলা রক্ষার নামে অভিন্ন নিয়োগ বিধিমালা প্রণয়ন করে কর্মচারীদের হয়রানি করা এবং কোনো প্রকার কারণ না দর্শিয়ে আট দিনে চাকরিচ্যুত করা ইত্যাদি মৌলিক অধিকার পরিপন্থি ‘কালো আইন’ তৈরি করা থেকে সরকারকে বিরত রাখার লক্ষ্যে কঠোর আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত থাকা।

১৪. ফোরামের সদস্যদের ঐক্যবদ্ধ থাকা এবং ফোরামের গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন আন্দোলনে সবার সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

পাঁচ সচিবকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা : পদত্যাগ না করলে অফিস ঘেরাও কর্মসূচি

Update Time : ১২:৫৮:০৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ মে ২০২৫

ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের সুবিধাভোগী কর্মকর্তা দাবি করে পানি সম্পদ সচিব নাজমুল আহসান, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব (চলতি দায়িত্ব) মো. তোফাজ্জল হোসেনসহ পাঁচ সচিবকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে বৈষম্যবিরোধী কর্মচারী ঐক্য ফোরাম। একইসঙ্গে তাদের যেখানে পাওয়া যাবে সেখানেই প্রতিহত করাসহ পর্যায়ক্রমে তাদের অফিস ঘেরাও করে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হবে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি।

সম্প্রতি গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব কথা জানানো হয়েছে। এর আগে সংগঠনটির নির্বাহী কমিটির তৃতীয় সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। গণমাধ্যমে পাঠানো ওই বিবৃতিতে সই করেছেন সংগঠনটির সভাপতি এ বি এম আব্দুস সাত্তার।

সভায় যে ১৪টি সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে–

১. সরকার, বিভিন্ন কমিশন/সংস্কার কমিশন এবং জনপ্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের নিয়োগ/পদায়নকৃত বিদেশি নাগরিকদের নিয়োগ/পদায়ন বাতিল চেয়ে সর্বোচ্চ আদালতে রিট দায়ের।

২. নাজমুল আহসান, সচিব, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়; মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়া, সচিব, কৃষি মন্ত্রণালয়; জাহেদা পারভীন, সচিব, সমন্বয় ও সংস্কার, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ; মো. মফিদুর রহমান, সচিব, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং মো. তোফাজ্জল হোসেন, সচিব, (চলতি দায়িত্ব), মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়কে অবাঞ্ছিত ঘোষণা এবং তাদের যেখানে পাওয়া যাবে সেখানেই প্রতিহত করা। পর্যায়ক্রমে তাদের অফিস ঘেরাও করে তাদেরকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা।

৩. চুক্তিভিত্তিক নিয়োগকৃত বিতর্কিত কর্মকর্তা ও প্রশাসনে এখনো কর্মরত স্বৈরাচারের দোসর দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারাই রাষ্ট্রীয় প্রশাসনে অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। বিতর্কিত চুক্তিভিত্তিক নিয়োজিত কর্মকর্তাদের চুক্তি বাতিল ও স্বৈরাচারের দোসর কর্মকর্তাদের অপসারণ করার দাবিতে আগামী ১২ মে মঙ্গলবার সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে ফোরামের সদস্যরা উপস্থিত হবেন। আগামী ১৫ মে কালো পতাকা মিছিল কর্মসূচি। মিছিলটি বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাব থেকে শুরু হয়ে দৈনিক বাংলা মোড়-জিরো পয়েন্ট-রেলভবন হয়ে পুনরায় প্রেসক্লাবে শেষ হবে।

৪. সচিবালয় নিয়োগ বিধিমালা অনুযায়ী সহকারী সচিব (নন-ক্যাডার)-এর ফিডার পদে পদোন্নতি যোগ্য প্রশাসনিক/ব্যক্তিগত কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে কমপক্ষে ৩০০ জনকে সুপার নিউমারারি পদ সৃষ্টিপূর্বক সহকারী সচিব পদে পদোন্নতি প্রদানে জোরালো ভূমিকা পালন।

৫. সচিবালয় ও মাঠ পর্যায়ে কর্মরত সকল নন-ক্যাডার কর্মচারীদের রেশন সুবিধা চালু করতে পদক্ষেপ গ্রহণ।

৬. বিধিবহির্ভূতভাবে গঠিত জনপ্রশাসন, স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জন্য বদলি ও পদোন্নতি বিষয়ক উপদেষ্টা কমিটি অবিলম্বে বাতিল করা না হলে পরবর্তীতে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণার প্রস্তুতি গ্রহণ।

৭. ৫ আগস্ট, ২০২৪-এর পূর্বে পদোন্নতি প্রাপ্ত দুর্নীতিবাজ-আওয়ামী দোসর যুগ্ম সচিব/অতিরিক্ত সচিবদের পদোন্নতি দেওয়া এবং তাদের কাউকে সচিব/সংস্থার প্রধান হিসেবে নিয়োগ প্রদান নিষিদ্ধ করার দাবিতে কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করা।

৮. ৫ আগস্টের পর ওএসডি অথবা অপসারণের পর আবারও কোনো কোনো কর্মকর্তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এ প্রক্রিয়ায় জড়িত কর্মকর্তা/পৃষ্ঠপোষকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

৯. জুলাই গণআন্দোলনের পর ৫০০ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও ১৩০ জন সিনিয়র পুলিশ অফিসারকে বিভিন্ন দপ্তরে সংযুক্ত করা হয়েছে। তাদেরকে অবিলম্বে চাকরিচ্যুত করা। এসব কর্মকর্তা ঢাকায় একত্রে অবস্থান করে সরকার ও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে নানা ধরনের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তাদের ক্ষেত্রমতে বাধ্যতামূলক অবসর এবং দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে পদায়নের ব্যবস্থা করা।

১০. জেলা প্রশাসক নিয়োগে ঘুষ কেলেঙ্কারিতে জড়িত জনপ্রশাসন সচিব, যুগ্ম সচিব আলী আজম ও ড. জিয়াসহ সংশ্লিষ্ট সবার বিরুদ্ধে অবিলম্বে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ নিশ্চিত করা। এ বিষয়ে তিনজন উপদেষ্টার সমন্বয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্ট প্রকাশ করা।

১১. প্রশাসনে উচ্চ পর্যায়ে পদোন্নতির ক্ষেত্রে একটি গ্রহণযোগ্য নীতিমালা অনুসরণ করা হয়। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার চাকরিকালীন সময়ে তার কর্মকাণ্ড, বার্ষিক গোপনীয় অনুবেদন ইত্যাদি পর্যালোচনা এবং নির্ধারিত বেঞ্চ মার্ক আছে কি না যাচাই করা ইত্যাদি। সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার এসব বিষয় সঠিক থাকলে কোনো গোয়েন্দা প্রতিবেদন বিবেচনা করা সমীচীন নয়। ডিজিএফআইর প্রতিবেদন সিভিল অফিসারদের বেলায় নিতান্তই অবান্তর। কোনো বিশেষ ক্ষেত্রে যদি গোয়েন্দা প্রতিবেদন প্রয়োজন হয় সেক্ষেত্রে এনএসআইর প্রতিবেদন চাইলেও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা যেন সামাজিকভাবে হেয় না হন বা কোনো প্রকার হয়রানির শিকার না হন সে বিষয়টি নিশ্চিত করা। বর্তমান এনএসআই অধিকাংশ আওয়ামী অনুগত ও নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারী দ্বারা পরিচালিত। সে কারণে এনএসআই পুনর্গঠিত না হওয়া পর্যন্ত এ সংস্থার প্রতিবেদন চাওয়া থেকে বিরত থাকা নিশ্চিত করা। সম্প্রতি দেখা গেছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত ২০২২-২৩ সালের গোয়েন্দা প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে ২৪ ব্যাচের যুগ্ম সচিব পদে পদোন্নতির কালে ব্যাচের সর্বশেষ কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেওয়া হলেও ১৮৫ জন কর্মকর্তাকে পদোন্নতি বঞ্চিত করা হয়েছে। বঞ্চিত এসব কর্মকর্তাদের বিষয়টি রিভিউ করে অবিলম্বে ন্যায় বিচার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ নিশ্চিত করা।

১২. ইতোমধ্যে যেসব জেলা প্রশাসক যুগ্ম সচিব হিসেবে পদোন্নতি প্রাপ্ত হয়েছেন তাদের স্থলে ২৫ ও ২৭ ব্যাচের নিরপেক্ষ এবং দক্ষ কর্মকর্তাদের জেলা প্রশাসক হিসেবে পদায়ন নিশ্চিত করা। কোনোভাবেই আওয়ামী দোসর কাউকে জেলা প্রশাসক পদে নিয়োগ দেওয়া যাবে না। এক্ষেত্রে সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা।

১৩. জনপ্রশাসনে শৃঙ্খলা রক্ষার নামে অভিন্ন নিয়োগ বিধিমালা প্রণয়ন করে কর্মচারীদের হয়রানি করা এবং কোনো প্রকার কারণ না দর্শিয়ে আট দিনে চাকরিচ্যুত করা ইত্যাদি মৌলিক অধিকার পরিপন্থি ‘কালো আইন’ তৈরি করা থেকে সরকারকে বিরত রাখার লক্ষ্যে কঠোর আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত থাকা।

১৪. ফোরামের সদস্যদের ঐক্যবদ্ধ থাকা এবং ফোরামের গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন আন্দোলনে সবার সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা।