দেবাঞ্জনা ব্যানার্জী, বিশেষ প্রতিনিধি,বারাসাত :
রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে অনেকদিন ধরেই সরব বিরোধীরা। ইতিমধ্যে কলকাতা হাইকোর্ট এই বিষয়ে রাজ্য সরকারকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে।
এছাড়াও মানবাধিকার কমিশনকে কমিটি গড়ে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। এবার বাংলার ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে ময়দানে নামল দেশের শীর্ষ আদালতও। কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনে নোটিশ পাঠালো সুপ্রিম কোর্ট।
পশ্চিমবঙ্গের ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে এমনিতেই রাজ্যে চলছিলো টালমাটাল, পরবর্তীতে একটি জনস্বার্থ মামলার পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্য সরকার এবং নির্বাচন কমিশনকে নোটিশ পাঠাল সুপ্রিম কোর্ট।
মামলার বয়ানে রয়েছে, ‘ পশ্চিমবঙ্গের ভোটের পর থেকেই বিজেপি সমর্থকদের উপর হামলা করানোর অভিযোগ উঠেছে । এছাড়াও বলা হয়েছে ভোটের ফলাফল ঘোষণার বিজেপি সমর্থকদের বাড়িঘরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়, তাঁদের সম্পত্তি লুঠ করা হয়। শুধুমাত্র বিজেপি দলের সমর্থক হওয়ার জন্য তাদের উপর চলছে অত্যাচার।’ এবং বলাইবাহুল্য অভিযোগের আঙুল উঠেছে শাসকদলের দিকে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বাংলার ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে শীর্ষ আদালতে একাধিক মামলা দায়ের হয়েছে। এছাড়াও গোটা দেশের ২ হাজারের বেশি মহিলা আইনজীবী সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিকে চিঠি লিখে বাংলায় ভোট পরবর্তী হিংসার পর নারী নির্যাতনের মামলা নিয়ে সরব হয়েছিলেন। আরেকদিকে, দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোভিন্দকে চিঠি লিখে বাংলার হিংসা নিয়ে অবগত করিয়েছিলেন।
অন্যদিকে এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে মনে করছে তৃনমূল শিবির । তৃনমূল সুপ্রিমো , তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন , ‘ বিজেপি নিজেদের পরাজয় মেনে নিতে পারছে না। তাই এসব করছে।’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেন, ‘এটা বিজেপির-র রাজনৈতিক নাটক। আমাদের কর্মীদের হত্যা করা হয়েছে, বিজেপির নয়। মানুষকে বিভ্রান্ত করছে ওরা।’
হাইকোর্ট অবশ্য দ্রুত তিন পক্ষকেই দ্রুত সঠিক তথ্য পেশ করার নির্দেশ দিয়েছেন ।
আজ অর্থাৎ ২রা জুলাই , শুক্রবার , এই মামলার শুনানিতে উঠে আসে আরো চাঞ্চল্যকর তথ্য, মানবাধিকার কমিশনকে তরফে অভিযোগ করা হয়, এই বিষয়ক তদন্ত করতে গিয়ে, যাদবপুর অঞ্চলে, হামলাকারীদের হাতে আক্রান্ত হয় তাঁরা। এছাড়াও ওই পুলিশের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ করেছেন তাঁরা।
এই বিষয়ে প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দলের নেতৃত্বাধীন ৫ বিচারপতির বেঞ্চ এই ঘটনায় কলকাতা পুলিশের ডিসি এসএসবি রশিদ মুনির খানের জবাবদিহি চেয়েছেন। তারই সাথে সংশ্লিষ্ট ওই অঞ্চলের পুলিশকর্তার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে মামলার পক্ষে সওয়াল করেছেন অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর
শুক্রবার শুনানি-পর্বে পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়েছেন , যাদবপুর সহ বেশ কিছু অঞ্চলের জেলাশাসক ও পুলিশ কর্তাদের বিরুদ্ধে শো-কজের নোটিস জারি করা হবে । আগামী ১৩ জুলাই এই মামলার পরবর্তী শুনানি। এখন সেই দিকেই তাকিয়ে বঙ্গবাসী।