নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারাদেশে পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের বংশানুক্রমে চাকরিতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
সেই সঙ্গে পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের কাছ থেকে তাদের জন্য নির্মিতব্য ফ্ল্যাটের ভাড়া না নিয়ে শুধুমাত্র রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় নিতে নির্দেশ দিয়েছেন সরকারপ্রধান।
মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ‘পৌরসভায় পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের জন্য আবাসিক ভবন নির্মাণ’ প্রকল্প নিয়ে আলোচনার সময় প্রধানমন্ত্রী এসব নির্দেশনা দেন।
গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সভায় যুক্ত হন একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানান।
সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, বৈঠকে পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের জন্য আবাসিক ভবন নির্মাণ প্রকল্পটি নিয়ে আলোচনার সময় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের প্রতি প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন যে, পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা যেন বংশানুক্রমে কাজ (চাকরি) পায়। এ সময় বৈঠকে উপস্থিত স্থানীয় সরকার মন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর এই নির্দেশনায় সম্মতি জানান।
মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রায় ৭ হাজার ৫৮৯ কোটি ৭২ লাখ টাকা ব্যয় সংবলিত ৮টি প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৫ হাজার ৯ কোটি ৭২ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক ঋণ ২ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা।
৮টি বিভাগের ৫৯টি জেলার ৬৬টি উপজেলার ৬৬টি পৌরসভায় প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে। ১৫ দশমিক ৬১ একর ভূমিতে ৩ হাজার ৪০টি আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হবে। ফ্ল্যাটে পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের কাছ থেকে ভাড়া না নেওয়ার জন্য বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রকল্পের উদ্দেশ্য হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ পৌরসভায় কর্মরত পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের আবাসন সমস্যা সমাধান। জানুয়ারি ২০২১ থেকে ডিসেম্বর ২০২৪ মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। প্রকল্পের আওতায় ৬৬টি সুয়ারেজ পরিশোধন ও গ্রাউন্ড রিচার্জসহ রেইন ওয়াটার হারভেস্টিং, ১টি ডাবল কেবিন পিকআপ ও ৪০টি মোটরসাইকেল ক্রয় এবং পরামর্শ সেবা ক্রয় ইত্যাদি করা হবে।
প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে দেশের গুরুত্বপূর্ণ পৌরসভায় কর্মরত পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের আবাসন সমস্যা সমাধানের মাধ্যমে সমাজের অবহেলিত ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন করা সম্ভব হবে। ঢাকার চারপাশ সাজানো প্রকল্পের ব্যয় বাড়িয়ে ১ হাজার ১৮১ কোটি টাকা করা হচ্ছে। প্রকল্পের মূল ব্যয় ছিল ৮৪৮ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রকল্প ব্যয় বাড়ছে ৩৩২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা।
বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, শীতলক্ষ্যা ও বালু নদীর তীরভূমির অবৈধ দখল রোধ এবং দখলমুক্ত অংশের সৌন্দর্য বর্ধন; নদীর উভয় তীরের পরিবেশগত উন্নয়ন; নদীর দখলমুক্ত তীরভূমিতে অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে।
প্রকল্পটি একনেক সভায় অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৮০ কোটি ৬১ লাখ টাকা ব্যয়ে হিলি-বুড়িমারী-বাংলাবান্ধা এলসি স্টেশনের ভৌত অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। এটি বাস্তবায়ন হলে আমদানি-রপ্তানি শুল্ক আদায় বৃদ্ধি করে অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আহরণ জোরদার হবে।
রংপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার স্থাপন, অ্যাকসিলাটেরিং অ্যান্ড স্ট্রেনদেনিং স্কিলস ফর ইকোনোমিক ট্রান্সফরমেশন প্রকল্পটি একনেক সভায় অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
আঞ্চলিক ডাল গবেষণা কেন্দ্র, মাদারীপুরের সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং বৃহত্তর বরিশাল, ফরিদপুর অঞ্চলে ডাল ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি, ‘সিরাজগঞ্জ জেলায় যমুনা নদী হতে পুনরুদ্ধারকৃত ভূমির উন্নয়ন এবং প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক অঞ্চল রক্ষা (প্রথম সংশোধিত)’ প্রকল্প, এবং ‘সাতক্ষীরা জেলার পোল্ডার নম্বর ১৫ পুনর্বাসন’ প্রকল্প একনেক সভায় অনুমোদন পেয়েছে।