ক্রীড়া ডেস্ক :

২০১৫ ওয়ানডে বিশ্বকাপ ফাইনালেরই যেন পুনরাবৃতি ঘটল দুবাইয়ে। সেবার নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে ওয়ানডে শিরোপা জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া। তাই এবার নিউজিল্যান্ডের সামনে সুযোগ ছিল হিসাব বরাবর করার। কিন্তু পারল না তাঁরা।

কেন উইলিয়ামসনদের আরও একবার হতাশার সাগরে ডুবিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম শিরোপাটা ঘরে তুলল অজিরাই।

রোববার (১৪ নভেম্বর) দুবাইয়ে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে অধিনায়কের অনবদ্য ব্যাটিংয়ে চড়ে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৭২ রানের স্কোর গড়ে নিউজিল্যান্ড। জবাবে ফিঞ্চ-ওয়ার্নারকে হারিয়ে ৭ বল হাতে রেখেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় অস্ট্রেলিয়া। ৮ উইকেটের বড় জয়ে শিরোপা জিতে নিল ফিঞ্চের দল।

প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা ঘরে তোলার লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো করলেও তা ধরে রাখতে পারেনি কিউয়িরা। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে ২৮ রান তুলতেই সেমিফাইনালের নায়ক ড্যারিল মিচেলকে হারায় দলটি। ম্যাক্সওয়েলকে ছক্কা হাঁকিয়ে ৮ বলে ১১ করা মিচেল হ্যাজলউডের শিকার হন উইকেটের পিছনে ক্যাচ দিয়ে।

সেইসাথে থমকে যায় নিউজিল্যান্ডের রানের চাকাও। ছয় ওভারে ৩২ রান সংগ্রহ করা কিউয়িরা তাদের প্রথম দশ ওভারে আর কোনও উইকেট না হারালেও তুলতে পারে মাত্র ৫৭টি রান। তবে ১১তম ওভারে স্টার্ককে সামনে পেয়েই যেন রান উৎসবে মেতে ওঠেন উইলিয়ামসন। এক নো-বলসহ তিন বাউন্ডারি হজম করে মোট ১৯ রান দেন স্টার্ক।

যদিও ওভারটির চতুর্থ বলেই আউট হয়ে সাজঘরে ফেরাতে পারতেন কিউয়ি ক্যাপ্টেনকে। তবে সীমানায় তাঁর ক্যাচটি ফেলে তা বাউন্ডারিতে রূপ দেন হ্যাজলউড। ফলে ২১ রানে জীবন ফিরে পেয়ে ম্যাক্সির ওভারে পরপর দুটি ছক্কা হাঁকিয়ে মাত্র ৩২ বলেই ফিফটি আদায় করেন উইলিয়ামসন।

তাঁর আগেই অবশ্য গাপ্টিলকে তুলে নেন অ্যাডাম জাম্পা। যাতে ভেঙে যায় শুরুর ধাক্কা সামাল দেয়া ৪৫ বলে ৪৮ রানের জুটি। স্টয়নিসের হাতে ধরা পড়ে ফেরার আগে ৩৫ বলে ২৮ করেন কিউয়ি ওপেনার। এরপর ফিলিপসকে সঙ্গী করে রীতিমত বিস্ফোরক হয়ে ওঠেন কেন। স্টার্কের তৃতীয় ওভার থেকে পাঁচ বাউন্ডারিতে ২২ রান তোলেন একাই।

সেইসঙ্গে তৃতীয় উইকেটে মাত্র ৩৭ বলে গড়ে তোলেন ৬৮ রানের অনবদ্য জুটি। একটি করে চার-ছয় হাঁকিয়ে ১৭ বলে ১৮ করা ফিলিপস ১৮তম ওভারে হ্যাজলউডের দ্বিতীয় শিকার হলে ভাঙে এই জুটি। আরও একটি চার হাঁকিয়ে ওই ওভারেই আউট হন উইলিয়ামসন। যাতে থেমে যায় তাঁর ৪৮ বলে ৮৫ রানের মারকুটে ইনিংসটি। যে ইনিংসে ছিল ১০টি দর্শনীয় চারের সঙ্গে তিনটি বিশাল বিশাল ছয়ের মার।

ফলে ১৪৯ রানে চতুর্থ উইকেট হারানো নিউজিল্যান্ড শেষ দুই ওভারে আর মাত্র ২০ রান নিতে পারলে দলটির স্কোর গিয়ে পৌঁছে ১৭০-এ। জিমি নিশাম মাত্র ৪ বলে ৯ রানে এবং টিম সেইফার্ট ২ বলে ২ রান করে অপরাজিত থাকেন। চার ওভারে মাত্র ১৬ রান দিয়ে ৩টি উইকেট নিয়ে কিউয়িদের লাগাম টেনে ধরেন অজি পেসার জস হ্যাজলউড।

সাম্প্রতিক সময়ে নিউজিল্যান্ড অবশ্য আইসিসি ইভেন্টে ধারাবাহিকতা দেখিয়েছে। তারা ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালে ওঠে। কয়েক মাস আগেই বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের খেতাব ঘরে তোলে নিউজিল্যান্ড।

নিউজিল্যান্ড একাদশ
মার্টিন গাপ্টিল, ড্যারিল মিচেল, কেন উইলিয়ামসন (অধিনায়ক), টিম সেইফার্ট (উইকেটকিপার), গ্লেন ফিলিপস, জিমি নিশাম, মিচেল স্যান্টনার, অ্যাডাম মিলনে, টিম সাউদি, ট্রেন্ট বোল্ট ও ইশ সোধি।

অস্ট্রেলিয়া একাদশ
ডেভিড ওয়ার্নার, অ্যারন ফিঞ্চ (অধিনায়ক), মিচেল মার্শ, স্টিভ স্মিথ, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, মার্কাস স্টয়নিস, ম্যাথিউ ওয়েড (উইকেটকিপার), প্যাট কামিন্স, মিচেল স্টার্ক, অ্যাডাম জাম্পা ও জস হ্যাজলউড।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে