নারায়ণগঞ্জে অপহরণ মামলায় নারীসহ ৬ জনের কারাভোগ ও মৃত যুবক জীবিত ফিরে আসার ঘটনায় পুলিশ ও সিআইডির ৩ কর্মকর্তাকে আগামী ৫ নভেম্বর স্বশরীরে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন আদালতে।

এর আগে আসামি পক্ষের আইনজীবী ভূয়া মামলার বিষয়টি উপস্থাপন করে আদালতে মামলাটি নিষ্পত্তি ও ৬ জনকে মামলা থেকে অব্যহতি দেয়ার আবেদন করেন। 

রোববার (১ নভেম্বর) দুপুরে নারায়ণগঞ্জের চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফারহানা ফেরদৌস-এর আদালতে হাজির হন ভুক্তভোগী ওই ৬ জন এবং যুবক মামুন। আদালত শুনানি শেষে এই নির্দেশ দেন।

২০১৪ সালে নিখোঁজ হলেও ২০১৬ সালের ৯ মে ছেলেকে অপহরণ করে হত্যার উদ্দেশ্যে গুম করা হয়েছে অভিযোগ এনে ফতুল্লা থানায় মামলা করেন মামুনের বাবা আবুল কালাম। সেই মামলায় আসামি করা হয় গার্মেন্টসকর্মী তাসলিমা, তার বাবা রহমত উল্লাহ, ভাই রফিক, খালাতো ভাই সাগর, সোহেল ও ছাত্তার মোল্লাকে। অপহরণ মামলায় নারীসহ ৬ জন কারাভোগ করেছে।

পুলিশের তদন্ত রিপোর্ট বলছে- আসামিরা মামুনকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে লাশ শীতলক্ষ্যা নদীতে ফেলে দেয়া হয়। তবে আসামিপক্ষের আইনজীবী ভূয়া মামলার বিষয়টি উপস্থাপন করে আদালতে মামলাটি নিষ্পত্তি ও ৬ জনকে মামলা থেকে অব্যহতি দেয়ার আবেদন করেন।

এর আগে মামুন আদালতে জানান, অপহরণ মামলায় জবানবন্দি দেয়া ওই স্বাক্ষীর প্ররোচনায় পড়ে তার বাবা মামলাটি করেছিলেন। তিনি নিখোঁজের ৬ বছর পর ফিরে এসে এ ঘটনা জানতে পারেন। তিনি নিজেও এ ঘটনায় দোষীর শাস্তি চান।

জানা যায়, চার বছর আগে মামুন নামের এই যুবককে অপহরণ করে হত্যার অভিযোগে ফতুল্লা থানায় মামলা করেছিলো তার বাবা। প্রথমে তদন্ত করে ছয় জনের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ এনে আদালতে প্রতিবেদন দেন ফতুল্লা থানার এস আই মিজানুর রহমান। এর আগে গার্মেন্টসকর্মী তাসলিমাসহ কয়েকজনকে রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করেন তিনি।

এদিকে, দীর্ঘদিন ধরে এই মামলায় আদালতে হাজিরা দিচ্ছেন তাসলিমাসহ ওই ৬ জনের পরিবার। তারা বলেন, আদালত ন্যায় বিচার করবেন, আমরা আর হাজিরা দিতে চাই না। এই মিথ্যা মামলায় আমাদের বলাতে চেয়েছে যে- আমরা খুনি করেছি। কিন্তু আমরা মিথ্যা স্বিকার করিনি। আমাদের এই মামলা থেকে মুক্তসহ যারা হয়রানি করিয়েছে তাদের শাস্তি চাই।

উল্লেখ্য, ৩০ সেপেম্বর আদালতে হাজির হয় মামুন নামের সেই যুবক। এ ঘটনায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হলে আদালত মামলার ৩ তদন্ত কর্মকর্তাকে লিখিত ব্যাখ্যা দেয়ার নির্দেশ দেন। পরে ৩ কর্মকর্তা লিখিত প্রতিবেদন জমা দিলে ১ নভেম্বর শুনানির দিন ধার্য করেন আদালত।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে