নাটোর প্রতিনিধিঃ

নাটোরে পৈত্রিক সম্পত্তিতে মার্কেট করে বসবাস করছিলেন এক কৃষক পরিবার। কিন্তু স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যাক্তি প্রকাশ্যে ওই মার্কেট দিয়েছে ভেঙ্গে। এসময় তাদের নিষ্ঠুরতার থেকে রক্ষা পায়নি ৫০ টি আমগাছ। ভাংচুর থেকে রক্ষা পায়নি আ’লীগ অফিসও। শুধু তাই নয়,ওই মার্কেট ভাঙ্গার পর ওই পরিবারকে হুমকি-ধামকি দেয়া হয়।

এতে জীবন বাঁচাতে ১৮ দিন থেকে এলাকা ছাড়া ওই কৃষক পরিবার! এনিয়ে মামলা করলেও আজও জীবন ভয়ে এলাকায় ফিরতে পারেনি পরিবারটি।

তবে পুলিশ বলছে, বিষয়টি তদন্ত চলছে। সদর উপজেলার ছোটহরিশপুর এলাকায় ওই ঘটনা ঘটে।

সুলতান সরদারের মেয়ে ভুক্তভোগী শ্যামলী খাতুন জানান, শিবদূর্গা মৌজায় তার বাবা সুলতান সরদার ৭ দাগে ১ একর ২১ শতক জমি পান পৈত্রিকসূত্রে। নাটোর জেলা যুগ্ম জজ ১ম আদালতে বাটোয়ারা মোকদ্দমার চুড়ান্ত ডিক্রীর আলোকে (মামলা নং২/১৬) পুলিশ ২০১৬ সালে ওই দখল বুঝিয়ে দেন। ওই ৭ দাগের মধ্যে ২০৫ নং দাগে তার বাবা মার্কেট করেন। সেখানে ৯ টি দোকান করা হয়। স্থানীয় আ’লীগ নেতা-কর্মীরা একটি রুমে আ’লীগ অফিস করেন। পাশে লাগানো হয় ৫০ টি আমগাছ। কিন্তু কিছুদিন পর স্থানীয় প্রভাবশালী আশরাফ ওই জমির মালিকানা দাবী করে আদালতে মামলা করে (মামলা নং ৫৮/১৬)। মামলাটি বর্তমানে চলমান রয়েছে। ওই মামলায় শুনানি ছিল গত ২২ ফেব্রুয়ারী।

শ্যামলী জানান, এমন পরিস্থিতিতে গত ৯ ফেব্রুয়ারী পাশের অধিবাসী আশরাফ আলীসহ সঙ্গীয় লোকজন তাদের ওই মার্কেট প্রকাশ্যে ভেঙ্গে ফেলে। ভাংচুর করা হয় ওই আ’লীগ অফিস। কেটে ফেলা হয় ওই ৫০ টি গাছ।

এসময় তাদের বাধা দিলে তাদেরকেও জখম করা হয়। এবিষয়ে তিনি সদর থানায় আশরাফসহ ৫ জনের নামে অজ্ঞাত আরো ১৫/১৬ জনের বিরুদ্ধে ১৩ লাখ ১৭ হাজার টাকার ক্ষতি ও তাদের মারপিটের অভিযোগে মামলা দায়ের করলেও আজও আসামীদের হুমকিতে তারা এলাকা ছাড়া। এঘটনায় তিনি অনতিবিলম্বে আসামীদের গ্রেপ্তার, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও নিজ বাড়িতে নিরাপদে বসবাসের নিশ্চয়তা বিধানে পুলিশ, প্রশাসন ও প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন ।

দিঘাপতিয়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম বলেন, তারা ২০১৭ সালে ওই মার্কেটে শিব্দুরগ্রাম শেখ জামাল স্মৃতি সংঘ অফিস করেন। তিনি ওই স্মৃতি সংঘেরও সাধারন সম্পাদক। ঘটনার দিন আশরাফসহ বেশ কিছু লোকজন নিয়ে ওই মার্কেটের ৯টি দোকান ভেংগে ফেলে ও আ’লীগ অফিস তথা স্মৃতি সংঘের বারান্দাও ভাংগা হয়। এসময় ওই স্মৃতি সংঘের একটি ত্রিপলও নিয়ে যায়। বিষয়টি তিনি ইউনিয়ন আ’লীগ নেতৃবৃন্দকে জানিয়েছেন দাবী করে বলেন, আদালতে মামলা চলাকালীন সময়ে এভাবে মার্কেট ভাংচুর আইন বহির্ভূত, গর্হিত, নিন্দনীয় কাজ।

দোকানের জায়গা দখল নেয়ার জন্য তারা এমন কাজ করেছে যাতে আশরাফ দখল পায় এবং আদালতে প্রমাণ করতে এমন দাবী প্রতিষ্ঠিত করতেই ওই মার্কেট ভাংগা হতে পারে দাবী করে তিনি ঘটনার সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখি করার দাবী জানান।

এবিষয়ে জানতে চাইলে মামলার আইও এসআই আবুল কালাম আজাদ বলেন,মামলার পর কয়েকজন আসামীকে গ্রেপ্তার করা হলেও তারা জামিনে রয়েছে। বিষয়টি তদন্ত চলছে। তদন্তে মার্কেট ভাঙ্গার সত্যতা পাওয়া গেছে। তদন্ত শেষে আদালতে তিনি প্রতিবেদন দাখিল করবেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে