যমুনা টেলিভিশনের রিপোর্টার নাজমুল হোসেনের বই কেলেঙ্কারিতে ক্ষুব্ধ প্রকাশকরা। মেধাসত্ব চুরিসহ নানা জালিয়াতির অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। লেখক-সম্পাদকের নাম ফেলে দিয়ে নিজের নাম বসিয়ে দেয়া রীতিমতো অপরাধ বলেই মনে করছেন ভুক্তভোগীরা।
বই কেলেঙ্কারি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রীতিমতো সমালোচনার ঝড়। বঙ্গবন্ধু কর্ণারের ৩০ কোটি টাকার ৮টি বইয়ের মধ্যে শুধু নাজমুলের প্রকাশনা সংস্থার ৩টি বই কিনতে খরচ ২০ কোটি টাকারও বেশি। এখানেই শেষ নয় আছে জাল জালিয়াতির আরও ঘটনা।
বঙ্গবন্ধু মানেই স্বাধীনতা বইটির প্রকাশক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। সম্পাদক অমিতাভ দেউরী। কিন্তু এবার বইটি হয়ে গেলো নাজমুলের। বঙ্গবন্ধু মানেই স্বাধীনতা বইয়ের লেখক ও সম্পাদকন অমিতাভ দেউরী একুশে টেলিভিশনকে বলেন, ‘তিনটি সংস্করণে আমাকে না জানিয়ে যতবার পরিবর্তন করা হয়েছে, যে অসাদু চক্র এ কাজ করেছে তারা বইয়ের ভেতরে ছবি পরিবর্তন করেছে কিনা, নতুন ছবি সংযোজন করেছে কিনা, লেখায় কোন পরিবর্তন করেছে কিনা সেটা তো আমি জানি না। বিষয়টি টাকা পয়সা না রয়েলিটির বিষয়টা। বিষয়টি মেধাস্বত্ত্বের।’
৩০৫৩ দিন বইটি প্রকাশ করেছিল কারা কর্তৃপক্ষ। কাউকে কিছু না বলে বইটি নাজমুল নিজের প্রকাশনা সংস্থা জার্নি মাল্টিমিডিয়া লিমিটেডের নামে চালিয়ে দেন। আর অধ্যাপক নাসরিন আহমাদ সম্পাদিত অমর শেখ রাসেল গ্রন্থটি বাণিজ্যিক প্রকাশের বিষয়ে তাকে কিছুই জানানো হয়নি।
এসব কিছুতে ক্ষুব্ধ লেখক-প্রকাশকরা। তারা বলছেন, যা হয়েছে তা রীতিমতো অপরাধ। কপিরাইট বোর্ড বাংলাদেশের সদস্য কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা বলেন, ‘এইভাবে বই প্রণয়ন এবং বিক্রি কোনটাই করা যাবে না। তাহলে আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের প্রতি অসম্মান করব। আর কেউ এমন করে থাকলে তাকে আইনের আওতায় আনা শতভাগ জরুরী। কারণ বঙ্গবন্ধু আমাদের সকলে, বঙ্গবন্ধু কোন একজনের না। এক ব্যক্তি বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ব্যবসা করবে তা আমরা চাই না।’
বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজণশীল প্রকাশক সমিতির সভাপতি ফরিদ আহমেদ বলেন, ‘সেই তদন্ত প্রতিবেদনে বর্তমান বিষয়টি যদি না এসে থাকে তাহলে আবারও তদন্ত কমিটি গঠন করে নতুন করে তদন্ত করে সেই প্রতিবেদন জনসম্মুখে প্রকাশ করা হোক। এটা শুধু প্রকাশক নয় লেখক ও সংস্কৃতিমনা সকলেরই দাবি।’
যে নাজমুলের বিরুদ্ধে এতো অভিযোগ তার বক্তব্য জানতে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।