Dhaka ১০:৩০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নাগর নদীর মোহনায় বাঁধ অপসারণের দাবি

  • Reporter Name
  • Update Time : ১২:৪৪:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০
  • ১৬৪ Time View

আশরাফুল ইসলাম, সিংড়া,নাটোর:

নাটোরের সিংড়ায় গুড় নদীর অববাহিকায় তেমুখ নওগাঁ এলাকার নাগর নদীর সংযোগ স্থলে বাঁধ অপসারণের দাবি জানিয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। দীর্ঘদিন আগে অপরিকল্পিতভাবে বাঁধ দিয়ে একদিকে নদীর চলমান প্রবাহ রোধ করা হয়েছে অপরদিকে নদীর সৌন্দর্য বিনষ্ট হয়েছে। বন্ধ হয়েছে অত্র এলাকার নৌ চলাচল। এজন্য পাউবো ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে বাঁধ অপসারণের দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহলসহ সর্বস্তরের মানুষ।

স্থানীয়রা জানায়, এক সময় এই নদীর পথ দিয়ে তাজপুর ইউনিয়নের শত শত মানুষ নৌকা যোগে শিববাড়ি ও নওগাঁ বাজারে আসতো। কিন্তু বাঁধ দেয়ার পর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। সম্প্রতি দুটি ইউনিয়নের মানুষের চলাচলের জন্য পাকা রাস্তা নির্মিত হয়েছে।

জানা যায়, সিংড়া উপজেলা দিয়ে ৫টি নদী প্রবাহিত। এর মধ্যে রয়েছে আত্রাই, গুরনই, বারনই, নাগর ও গোদাই নদী। সিংড়া দহ থেকে উত্তরে নাগর নদী পশ্চিমে গুড় নদী। গুড় নদী শেরকোল ইউনিয়নের নওগাঁ বাজারে মিলিত হয়েছে। এই মোহনায় নাগর নদীর সাথে সংযুক্ত। ১৯৯৬ সালে তৎকালিন সময়ে রাতারাতি নদীর মোহনায় বাঁধ দেয়া হয়। অপরদিকে ধাপে ধাপে আত্রাই নদীর নুরপুর, বিজয় নগর ও কালিনগর এলাকায় বাঁধ দেয়ায় চলনবিলের সিংড়া অংশে অনেকটা পানি শূন্য হয়ে পড়ে। প্রতিবছর বন্যায় আত্রাই নদীর পানি নেমে যেতে না পাড়ায় নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করে। এতে করে প্রতি বছর প্রবল বন্যায় রুপ নিচ্ছে। এতে করে শত শত পুকুর ভেসে যাচ্ছে, ফসলহানি এবং ঘরবাড়ি বিনষ্ট হচ্ছে।
স্থানীয়দের দাবি, নাগর নদীর মোহনায় বাঁধ না দিলে বন্যায় এমন ভয়াবহ রুপ নিতো না।

স্থানীয়রা জানায়, তেমুখ নওগাঁ বাজার সংলগ্ন রবীন্দ্রনাথের স্মৃতি বিজড়িত লেখা কবিতা (আমাদের ছোট নদী) অর্থাৎ নাগর নদীর মোহনায় অবৈধভাবে ক্লোজার বাঁধ দেয়ায় প্রতিবছর আগাম বন্যা দেখা দেয়। বন্যায় নদীর পাড়ের সহস্রাধিক মানুষের জীবনমান হুমকির মুখে এবং অনেক আবাদী জমির ফসল ডুবে যাচ্ছে, এতে করে অত্র এলাকার কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ।

মৎস্য চাষী রুস্তম আলী জানান, প্রতি বছর বন্যায় শতাধিক পুকুর ভেসে যায়, বারবার ক্ষতিগ্রস্ত হয় মৎস্য চাষীরা। এজন্য তারা অবৈধ ক্লোজার বাঁধ দ্রুত অপসারনের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, স্হানীয় সংসদ সদস্য ও প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, নাটোরের জেলা প্রশাসক ও সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য রঞ্জু মন্ডল জানান, এ বছর অকাল বন্যায় প্রচুর ক্ষতিসাধন হয়েছে। বিশেষ করে নদীর পাড়ে পরিবারগুলোর ঘরবাড়ি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মানুষ গৃহহীন হয়েছে। এবার আশ্রয় কেন্দ্রেও পানি ঢুকে পড়েছিলো।
ত্রান সামগ্রী নৌকা যোগে পাঠানো হয়েছে। আবার অনেক পরিবার দূর্দশার মাঝে নিদারুন কষ্টে বাড়িতে বসবাস করতে বাধ্য হয়েছে। এ বাঁধ অপসারণ হলে লক্ষ লক্ষ মানুষ উপকৃত হবে।

শেরকোল ইউপি চেয়ারম্যান লুৎফল হাবিব রুবেল জানান, প্রবাহমান নদীতে বাঁধ দেয়া হয়েছে। বাঁধের কারণে অকাল বন্যায় ক্ষয়ক্ষতি বেশি হচ্ছে। তাছাড়া চলমান নদীতে বাঁধ দেয়ায় নৌ চলাচল বন্ধ আছে। দ্রুত নিরসনে তিনি সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি কামনা করেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

Popular Post

নাগর নদীর মোহনায় বাঁধ অপসারণের দাবি

Update Time : ১২:৪৪:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০

আশরাফুল ইসলাম, সিংড়া,নাটোর:

নাটোরের সিংড়ায় গুড় নদীর অববাহিকায় তেমুখ নওগাঁ এলাকার নাগর নদীর সংযোগ স্থলে বাঁধ অপসারণের দাবি জানিয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। দীর্ঘদিন আগে অপরিকল্পিতভাবে বাঁধ দিয়ে একদিকে নদীর চলমান প্রবাহ রোধ করা হয়েছে অপরদিকে নদীর সৌন্দর্য বিনষ্ট হয়েছে। বন্ধ হয়েছে অত্র এলাকার নৌ চলাচল। এজন্য পাউবো ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে বাঁধ অপসারণের দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহলসহ সর্বস্তরের মানুষ।

স্থানীয়রা জানায়, এক সময় এই নদীর পথ দিয়ে তাজপুর ইউনিয়নের শত শত মানুষ নৌকা যোগে শিববাড়ি ও নওগাঁ বাজারে আসতো। কিন্তু বাঁধ দেয়ার পর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। সম্প্রতি দুটি ইউনিয়নের মানুষের চলাচলের জন্য পাকা রাস্তা নির্মিত হয়েছে।

জানা যায়, সিংড়া উপজেলা দিয়ে ৫টি নদী প্রবাহিত। এর মধ্যে রয়েছে আত্রাই, গুরনই, বারনই, নাগর ও গোদাই নদী। সিংড়া দহ থেকে উত্তরে নাগর নদী পশ্চিমে গুড় নদী। গুড় নদী শেরকোল ইউনিয়নের নওগাঁ বাজারে মিলিত হয়েছে। এই মোহনায় নাগর নদীর সাথে সংযুক্ত। ১৯৯৬ সালে তৎকালিন সময়ে রাতারাতি নদীর মোহনায় বাঁধ দেয়া হয়। অপরদিকে ধাপে ধাপে আত্রাই নদীর নুরপুর, বিজয় নগর ও কালিনগর এলাকায় বাঁধ দেয়ায় চলনবিলের সিংড়া অংশে অনেকটা পানি শূন্য হয়ে পড়ে। প্রতিবছর বন্যায় আত্রাই নদীর পানি নেমে যেতে না পাড়ায় নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করে। এতে করে প্রতি বছর প্রবল বন্যায় রুপ নিচ্ছে। এতে করে শত শত পুকুর ভেসে যাচ্ছে, ফসলহানি এবং ঘরবাড়ি বিনষ্ট হচ্ছে।
স্থানীয়দের দাবি, নাগর নদীর মোহনায় বাঁধ না দিলে বন্যায় এমন ভয়াবহ রুপ নিতো না।

স্থানীয়রা জানায়, তেমুখ নওগাঁ বাজার সংলগ্ন রবীন্দ্রনাথের স্মৃতি বিজড়িত লেখা কবিতা (আমাদের ছোট নদী) অর্থাৎ নাগর নদীর মোহনায় অবৈধভাবে ক্লোজার বাঁধ দেয়ায় প্রতিবছর আগাম বন্যা দেখা দেয়। বন্যায় নদীর পাড়ের সহস্রাধিক মানুষের জীবনমান হুমকির মুখে এবং অনেক আবাদী জমির ফসল ডুবে যাচ্ছে, এতে করে অত্র এলাকার কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ।

মৎস্য চাষী রুস্তম আলী জানান, প্রতি বছর বন্যায় শতাধিক পুকুর ভেসে যায়, বারবার ক্ষতিগ্রস্ত হয় মৎস্য চাষীরা। এজন্য তারা অবৈধ ক্লোজার বাঁধ দ্রুত অপসারনের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, স্হানীয় সংসদ সদস্য ও প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, নাটোরের জেলা প্রশাসক ও সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য রঞ্জু মন্ডল জানান, এ বছর অকাল বন্যায় প্রচুর ক্ষতিসাধন হয়েছে। বিশেষ করে নদীর পাড়ে পরিবারগুলোর ঘরবাড়ি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মানুষ গৃহহীন হয়েছে। এবার আশ্রয় কেন্দ্রেও পানি ঢুকে পড়েছিলো।
ত্রান সামগ্রী নৌকা যোগে পাঠানো হয়েছে। আবার অনেক পরিবার দূর্দশার মাঝে নিদারুন কষ্টে বাড়িতে বসবাস করতে বাধ্য হয়েছে। এ বাঁধ অপসারণ হলে লক্ষ লক্ষ মানুষ উপকৃত হবে।

শেরকোল ইউপি চেয়ারম্যান লুৎফল হাবিব রুবেল জানান, প্রবাহমান নদীতে বাঁধ দেয়া হয়েছে। বাঁধের কারণে অকাল বন্যায় ক্ষয়ক্ষতি বেশি হচ্ছে। তাছাড়া চলমান নদীতে বাঁধ দেয়ায় নৌ চলাচল বন্ধ আছে। দ্রুত নিরসনে তিনি সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি কামনা করেন।