মোঃ সাইদুল ইসলাম, নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি:

নওগাঁর বদলগাছীতে ব্রীজ থাকলেও নেই সংযোগ রাস্তা। যার কারণে রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী পথচারীদের কোন কাজে আসছে না লাখ টাকার এই ব্রীজটি।

উপজেলার ছোট যমুনা নদীর দেউলিয়া (চারমাথা) কাদিবাড়ী ঘাটের ওপর নির্মিত ব্রীজের বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। কিন্তু প্রকল্পের সময় সংযোগ সড়ক নির্মাণে জমি অধিগ্রহনের কোন বরাদ্দ দেয়া হয়নি। স্থানীয় সাংসদ নিজ থেকে প্রয়োজনের তুলনায় কম টাকা দিতে চাওয়ায় জমির মালিকরা তা প্রত্যাখান করেছেন। জমি জটিলতায় ব্রীজটি যেন কোন কাজে আসছে না। মোটরসাইকেল আরোহীরা ব্রীজে উঠতে গিয়ে প্রায় দূর্ঘটনায় শিকার হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলা ছোট যমুনা নদীর ওপর দেউলিয়া (চারমাথা) কাদিবাড়ী ঘাটে প্রায় ৯০ মিটার দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট একটি ব্রীজ নির্মাণ করা হয়েছে। ব্রীজটির প্রাক্কলিত মূল্য ধরা হয়েছে পাঁচ কোটি ২১ লাখ ২৭৭ টাকা। কাজটি করেছেন নওগাঁ শহরের ‘ইথেন-পিএমপিএল জয়েন ভেঞ্চার’ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। প্রায় ছয়মাস আগে ব্রীজটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। কিন্তু ব্রীজের পূর্বপাশে প্রায় ১০০ মিটার দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট (এক বিঘা ৫ কাঠা) জমি জটিতলায় সংযোগ সড়কটির কাজ থেমে আছে।

ব্রীজের পূর্বপাশ থেকে দেউলিয়া মোড় পর্যন্ত সরকারি সরু রাস্তা আছে। রাস্তাটি অনেকটাই বাঁকা। আবার রাস্তা প্রশস্থ করতে হলে রাস্তার দুইপাশে ব্যক্তিমালিকানা পাঁচজনের জমির ওপর পড়বে। ব্রীজ নির্মাণের বরাদ্দ দেয়া হলেও রাস্তা নির্মাণে জমি অধিগ্রহনের কোন বরাদ্দ রাখা হয়নি। রাস্তার কোন বরাদ্দ না থাকায় স্থানীয় সাংসদ ছলিম উদ্দিন তরফদার নিজ থেকে এক বিঘা ৫ কাঠা জমির জন্য মালিকদের ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা দিতে চেয়েছে। কিন্তু বাজারমূল্য অনেক কম হওয়ায় জমির মালিকরা আগ্রহ দেখাননি। তবে দূত সমস্যা সমাধান করে রাস্তা নির্মাণ করে চলাচলের উপযোগী করার দাবী জানিয়েছেন নদীর দুইপাড়ের বাসীন্দারা।

জমির মালিক রিয়াজ উদ্দিন বলেন, ইঞ্জিনিয়ার অফিস থেকে জরিপ করা হয়েছে ব্রীজ থেকে দেউলিয়া মোড় পর্যন্ত কয়েকজন মালিকের প্রায় এক বিঘা ৫ কাঠা জমি পড়েছে। সেখানে আমারও ৫ কাঠা জমি আছে। বর্তমানে জমির মূল্য প্রায় ৬ লাখ টাকা বিঘা। কিন্তু স্থানীয় সংসদ সদস্য সেলিম উদ্দিন তরফদার আমাদের মোট জমির ওপর ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা দিতে চেয়েছেন। আমরা সরকারি মূল্যে জমি দিতে চাই। আর এ কারণে রাস্তার কাজ বন্ধ হয়ে আছে।

ব্রীজের পাশে চা দোকানদার বকুল হোসেন বলেন, প্রায় ৬মাস আগে ব্রীজ তৈরী হয়েছে। কিন্তু পূর্বপাশে ব্রীজে উঠার রাস্তা তৈরী করা হয়নি। অনেকে উঁচু ব্রীজে মোটরসাইকেল নিয়ে উঠতে গিয়ে উল্টে পড়ে যায়। আমরা গিয়ে তাদের উদ্ধার করি। প্রতিদিনই এমন দূর্ঘটনা ঘটে।

উপজেলা প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান বলেন, ওই ব্রীজের জন্য ডেভলোপমেন্ট প্রজেক্ট প্রোপ্রোজাল (ডিপিপি) এর সময় এপ্রোচ সড়ক নির্মাণে জমি অধিগ্রহনের জন্য কোন বরাদ্দ দেয়া হয়নি। ব্রীজের পূর্বপাশে সরকারি যে রাস্তা আছে তার ওপর দিয়েই রাস্তা নির্মাণ করা হবে। এছাড়া রাস্তা প্রশস্থ করতে হলে কিছু ব্যক্তিগত জমির ওপরও যাবে। এ বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য জমির মালিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন। এছাড়া ঠিকাদার অন্য জায়গায় কাজ করছেন। সেখানে কাজ শেষ হলেই ওই ব্রীজের সংযোগ কাজ দ্রুত শুরু করবেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে