Dhaka ০১:৫৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দ্বিতীয় ম্যাচই সাক্ষী থাকল সুপার ওভারের

  • Reporter Name
  • Update Time : ০২:০৫:৩৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০
  • ১২৪ Time View

নাটক। হ্যাঁ, চূড়ান্ত নাটক। পেণ্ডুলামের মতো ম্যাচ ঘুরল এদিক থেকে ওদিকে। কখনও দিল্লি এগিয়ে তো কখনও পাঞ্জাব। শেষপর্যন্ত স্কোরও এক হয়ে গেল। ফলে চলতি IPl-এর দ্বিতীয় ম্যাচই সাক্ষী থাকল সুপার ওভারের। একদিকে, স্টোইনিসের ঝোড়ো ব্যাটিং। অন্যদিকে, মায়াঙ্ক–শামির দুরন্ত পারফরম্যান্স। খাতায় কলমে উত্তর ভারতের ডার্বি হল আর পাঁচটি ডার্বি ম্যাচের মতোই। শেষপর্যন্ত অবশ্য সুপার ওভারে বাজিমাত করল দিল্লি ক্যাপিটালস।

আমিরশাহীর স্লো পিচে শুরুতে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন প্রীতি জিন্টার দলের অধিনায়ক কেএল রাহুল (KL Rahul)। অধিনায়কের আস্থার মর্যাদা দেন পাঞ্জাব বোলাররা। শুরুতেই পরপর তিন উইকেট পড়ে যায় দিল্লির। ধাওয়ান শূন্য রানে রান আউট হয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন। পৃথ্বী শ (‌৫) এবং সিমরন হেটমেয়ার (‌৭) শিকার হন মহম্মদ শামির। কিন্তু এরপরই ম্যাচে ফেরে দিল্লি। অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ার এবং ঋষভ পন্থ পালটা প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। শ্রেয়স করেন ৩৯ রান। অন্যদিকে, ঋষভের সংগ্রহ ৩১ রান। তবুও স্কোরবোর্ডে তখন কোনও গতি ছিল না। তবে শেষদিকে পালটা মারে দিল্লির রানকে দ্রুত গতিতে এগিয়ে নিয়ে মার্কাস স্টোইনিস। রানআউট হওয়ার আগে ২১ বলে ৫৩ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলেন তিনি। মারেন ৭টি চার, তিনটি ছয়। মূলত তাঁর দৌলতেই দিল্লির রান নির্ধারিত ২০ ওভারে আট উইকেটে ১৫৭ রানে পৌঁছায়।

পাঞ্জাব বোলারদের মধ্যে সেরা বোলিং করেন বাংলার মহম্মদ শামি। চার ওভার বল করে মাত্র ১৫ রান দিয়ে তিন উইকেট নেন তিনি। শুরুতে জোড়া ধাক্কা দেওয়ার পর দিল্লি অধিনায়ককেও আউট করেন শামি। এর আগে শামির সেরা বোলিং পারফরম্যান্স ছিল ২১/‌৩। যা তিনি কিংসদের হয়ে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে করেছিলেন। শামি ছাড়া দু’‌টি উইকেট পেয়েছেন শেলডন কটরেল এবং একটি পেয়েছেন রবি বিষ্ণোই।

এদিকে, ধীরে ধীরে আরও স্লো হয়ে যাওয়া উইকেটে ১৫০ এর উপরে যেকোনও রান তাড়া করা কঠিন চ্যালেঞ্জের। আর সেই চ্যালেঞ্জ জিততে গিয়ে শুরুতেই বেকায়দায় পড়ে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব। প্রথম পাঁচ ওভারে যেখানে তাঁদের রান ছিল ৩৩/‌১। সেখানে দশ ওভারে তাঁদের রান দাঁড়ায় ৫ উইকেটে ৫৫। অর্থাৎ ওই পাঁচ ওভারে ২২ রানের মধ্যেই চার উইকেট হারায় পাঞ্জাব। দিল্লি বোলারদের মাপা লাইন লেংথের সামনে ব্যর্থ হন করুন নায়ার (‌১)‌, নিকোলাস পুরান (০‌)‌ গ্লেন ম্যাক্সওয়েল (‌১)‌, সরফরাজ খান (‌১২)‌ প্রত্যেকেই। তবে অধিনায়ক কেএল রাহুল শুরুটা ভাল করলেও বেশিক্ষণ ক্রিজে থাকতে পারেননি। তিনি আউট হন ২১ রানে। দশ ওভারের পর সবাই যখন ধরে নিয়েছে ম্যাচ দিল্লির দখলে, তখনই জ্বলে ওঠেন মায়াঙ্ক আগরওয়াল। লোয়ার মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানদের নিয়েই পালটা লড়াই শুরু করেন। ৪৫ বলে নিজের অর্ধশতরান পূর্ণ করার পর খোলস ছেড়ে বেরোন। মোহিত শর্মার ১৮ তম ওভারে ১৭ রান নেন মায়াঙ্ক। মূলত স্টোইনিস যে ইনিংসটি পরের দিকে নেমে খেলেছিলেন, সেটিই খেলতে দেখা যায় তাঁকে। এর মধ্যেই আবার ১৯ তম ওভারে বাউন্ডারি লাইনে অধিনায়ক শ্রেয়সের হাত থেকেই পাঞ্জাব ওপেনারের সহজ ক্যাচও পড়ে যায়। বলতে গেলে একেবারে একক কৃতিত্বেই ম্যাচ একদম শেষপর্যন্ত টেনে নিয়ে আসেন আগরওয়াল। কিন্তু নাটক তখনও বাকি ছিল।

শেষ ওভারে জয়ের জন্য দরকার ছিল ১৩ রানের। প্রথম তিন বলে চলে আসে ১২ রান। পরের বলে কোনও রান হয় না। তখনও দরকার ছিল ২ বলে ১ রানের। কিন্তু পরপর দুই বলে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা মায়াঙ্ক এবং ক্রিস জর্ডনকে ফিরিয়ে দিল্লিকে ম্যাচে ফেরান স্টোইনিস। শেষপর্যন্ত ম্যাচ গড়ায় সুপার ওভারে। কিন্তু সেখানে বাজিমাত করেন কাগিসো রাবাডা। প্রথম বলে দু’‌রান দেওয়ার পর পরপর দু’‌বলে রাহুল এবং পুরানকে ফিরিয়ে দেন দক্ষিণ আফ্রিকান পেসার। আর মাত্র তিনরান তাড়া করতে নেমে সহজেই জিতে যায় দিল্লি। এর মধ্যেই অবশ্য সুপার ওভারে মায়াঙ্ককে ব্যাট করতে না নামানো নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন।এদিকে, ম্যাচ জিতলেও রবিচন্দ্রন অশ্বিনের চোট চিন্তায় রাখবে দিল্লিকে। একওভার বল করে মাত্র দু’‌রান দিয়ে দুই উইকেট নেন অশ্বিন। কিন্তু ম্যাচ শেষে তিনিই আবার দলের চিন্তা বাড়ালেন। কাঁধে চোট পাওয়ায় পুরো বোলিংও করতে পারলেন না। ফিরে যান প্যাভিলিয়নে। যদিও চোট কতটা গুরুতর তা এখনও জানা যায়নি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

Popular Post

দ্বিতীয় ম্যাচই সাক্ষী থাকল সুপার ওভারের

Update Time : ০২:০৫:৩৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০

নাটক। হ্যাঁ, চূড়ান্ত নাটক। পেণ্ডুলামের মতো ম্যাচ ঘুরল এদিক থেকে ওদিকে। কখনও দিল্লি এগিয়ে তো কখনও পাঞ্জাব। শেষপর্যন্ত স্কোরও এক হয়ে গেল। ফলে চলতি IPl-এর দ্বিতীয় ম্যাচই সাক্ষী থাকল সুপার ওভারের। একদিকে, স্টোইনিসের ঝোড়ো ব্যাটিং। অন্যদিকে, মায়াঙ্ক–শামির দুরন্ত পারফরম্যান্স। খাতায় কলমে উত্তর ভারতের ডার্বি হল আর পাঁচটি ডার্বি ম্যাচের মতোই। শেষপর্যন্ত অবশ্য সুপার ওভারে বাজিমাত করল দিল্লি ক্যাপিটালস।

আমিরশাহীর স্লো পিচে শুরুতে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন প্রীতি জিন্টার দলের অধিনায়ক কেএল রাহুল (KL Rahul)। অধিনায়কের আস্থার মর্যাদা দেন পাঞ্জাব বোলাররা। শুরুতেই পরপর তিন উইকেট পড়ে যায় দিল্লির। ধাওয়ান শূন্য রানে রান আউট হয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন। পৃথ্বী শ (‌৫) এবং সিমরন হেটমেয়ার (‌৭) শিকার হন মহম্মদ শামির। কিন্তু এরপরই ম্যাচে ফেরে দিল্লি। অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ার এবং ঋষভ পন্থ পালটা প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। শ্রেয়স করেন ৩৯ রান। অন্যদিকে, ঋষভের সংগ্রহ ৩১ রান। তবুও স্কোরবোর্ডে তখন কোনও গতি ছিল না। তবে শেষদিকে পালটা মারে দিল্লির রানকে দ্রুত গতিতে এগিয়ে নিয়ে মার্কাস স্টোইনিস। রানআউট হওয়ার আগে ২১ বলে ৫৩ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলেন তিনি। মারেন ৭টি চার, তিনটি ছয়। মূলত তাঁর দৌলতেই দিল্লির রান নির্ধারিত ২০ ওভারে আট উইকেটে ১৫৭ রানে পৌঁছায়।

পাঞ্জাব বোলারদের মধ্যে সেরা বোলিং করেন বাংলার মহম্মদ শামি। চার ওভার বল করে মাত্র ১৫ রান দিয়ে তিন উইকেট নেন তিনি। শুরুতে জোড়া ধাক্কা দেওয়ার পর দিল্লি অধিনায়ককেও আউট করেন শামি। এর আগে শামির সেরা বোলিং পারফরম্যান্স ছিল ২১/‌৩। যা তিনি কিংসদের হয়ে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে করেছিলেন। শামি ছাড়া দু’‌টি উইকেট পেয়েছেন শেলডন কটরেল এবং একটি পেয়েছেন রবি বিষ্ণোই।

এদিকে, ধীরে ধীরে আরও স্লো হয়ে যাওয়া উইকেটে ১৫০ এর উপরে যেকোনও রান তাড়া করা কঠিন চ্যালেঞ্জের। আর সেই চ্যালেঞ্জ জিততে গিয়ে শুরুতেই বেকায়দায় পড়ে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব। প্রথম পাঁচ ওভারে যেখানে তাঁদের রান ছিল ৩৩/‌১। সেখানে দশ ওভারে তাঁদের রান দাঁড়ায় ৫ উইকেটে ৫৫। অর্থাৎ ওই পাঁচ ওভারে ২২ রানের মধ্যেই চার উইকেট হারায় পাঞ্জাব। দিল্লি বোলারদের মাপা লাইন লেংথের সামনে ব্যর্থ হন করুন নায়ার (‌১)‌, নিকোলাস পুরান (০‌)‌ গ্লেন ম্যাক্সওয়েল (‌১)‌, সরফরাজ খান (‌১২)‌ প্রত্যেকেই। তবে অধিনায়ক কেএল রাহুল শুরুটা ভাল করলেও বেশিক্ষণ ক্রিজে থাকতে পারেননি। তিনি আউট হন ২১ রানে। দশ ওভারের পর সবাই যখন ধরে নিয়েছে ম্যাচ দিল্লির দখলে, তখনই জ্বলে ওঠেন মায়াঙ্ক আগরওয়াল। লোয়ার মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানদের নিয়েই পালটা লড়াই শুরু করেন। ৪৫ বলে নিজের অর্ধশতরান পূর্ণ করার পর খোলস ছেড়ে বেরোন। মোহিত শর্মার ১৮ তম ওভারে ১৭ রান নেন মায়াঙ্ক। মূলত স্টোইনিস যে ইনিংসটি পরের দিকে নেমে খেলেছিলেন, সেটিই খেলতে দেখা যায় তাঁকে। এর মধ্যেই আবার ১৯ তম ওভারে বাউন্ডারি লাইনে অধিনায়ক শ্রেয়সের হাত থেকেই পাঞ্জাব ওপেনারের সহজ ক্যাচও পড়ে যায়। বলতে গেলে একেবারে একক কৃতিত্বেই ম্যাচ একদম শেষপর্যন্ত টেনে নিয়ে আসেন আগরওয়াল। কিন্তু নাটক তখনও বাকি ছিল।

শেষ ওভারে জয়ের জন্য দরকার ছিল ১৩ রানের। প্রথম তিন বলে চলে আসে ১২ রান। পরের বলে কোনও রান হয় না। তখনও দরকার ছিল ২ বলে ১ রানের। কিন্তু পরপর দুই বলে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা মায়াঙ্ক এবং ক্রিস জর্ডনকে ফিরিয়ে দিল্লিকে ম্যাচে ফেরান স্টোইনিস। শেষপর্যন্ত ম্যাচ গড়ায় সুপার ওভারে। কিন্তু সেখানে বাজিমাত করেন কাগিসো রাবাডা। প্রথম বলে দু’‌রান দেওয়ার পর পরপর দু’‌বলে রাহুল এবং পুরানকে ফিরিয়ে দেন দক্ষিণ আফ্রিকান পেসার। আর মাত্র তিনরান তাড়া করতে নেমে সহজেই জিতে যায় দিল্লি। এর মধ্যেই অবশ্য সুপার ওভারে মায়াঙ্ককে ব্যাট করতে না নামানো নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন।এদিকে, ম্যাচ জিতলেও রবিচন্দ্রন অশ্বিনের চোট চিন্তায় রাখবে দিল্লিকে। একওভার বল করে মাত্র দু’‌রান দিয়ে দুই উইকেট নেন অশ্বিন। কিন্তু ম্যাচ শেষে তিনিই আবার দলের চিন্তা বাড়ালেন। কাঁধে চোট পাওয়ায় পুরো বোলিংও করতে পারলেন না। ফিরে যান প্যাভিলিয়নে। যদিও চোট কতটা গুরুতর তা এখনও জানা যায়নি।