Dhaka ০২:০৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৭ জুন ২০২৫, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দ্বিগুণ-তিনগুণ ভাড়ায় ঢাকা ছাড়ছেন মানুষ, ট্রাক-পিকআপেও চাপ

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৫:৪১:৫৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৬ জুন ২০২৫
  • 17

চরম ভোগান্তি নিয়ে ঈদুল আজহার আগের দিনও রাজধানী ছাড়ছেন অসংখ্য মানুষ। সকাল থেকেই দূরপাল্লার প্রায় বাসেই দেখা গেছে উপচেপড়া ভিড়, সেই সঙ্গে ভাড়াও দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ পর্যন্ত বেশি। এমন অবস্থায় অনেকেই আবার বাসে জায়গা না পেয়ে পরিবার নিয়ে উঠছেন ট্রাক, পিকআপ বা প্রাইভেটকারে। বেশি নৈরাজ্য দেখা গেছে ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ অভিমুখে যাত্রা করা বাসগুলোতে।

বৃহস্পতিবার (৬ জুন) ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ঘুরে দেখা গেছে, রাস্তার পাশে দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে মানুষ অপেক্ষা করছেন গাড়ির জন্য। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত বাস মিলছে না। ফলে, ঘণ্টার পর ঘণ্টা সড়কেই অপেক্ষা করতে হচ্ছে। আবার যেসব বাস পাওয়া যাচ্ছে সেগুলোও নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে দ্বিগুণ আবার কেউ তিনগুণ বেশি ভাড়া চাইছেন।

যাত্রীরা অভিযোগ করেন, ঈদের আগে ভাড়ায় লাগাম নেই। অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করেই চলেছে বেশিরভাগ পরিবহন। ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ, শেরপুর, নালিতাবাড়ীসহ আশপাশের জেলাগামী বাসগুলোতে ভাড়ার অস্বাভাবিক বৃদ্ধি সবচেয়ে বেশি চোখে পড়েছে। সাধারণ সময়ে ঢাকা থেকে শেরপুরগামী বাসগুলো ভাড়া নেয় ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা। কিন্তু ঈদের এই মৌসুমে তা বাড়িয়ে নেওয়া হচ্ছে ৬৫০ থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত।

আবার ময়মনসিংহ ও হালুয়াঘাটের বাসের একাধিক চালক ও হেলপার স্পষ্ট করে বলছেন, ঈদের সময় একটু বাড়তি তো নিতেই হয়।

তবে ভাড়ার এই অতিরিক্ত আদায় নিয়ে বিআরটিএ বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো তদারকি চোখে পড়েনি।

শেরপুরের বাসের জন্য অপেক্ষায় থাকা ফিরোজ আলম নামে এক যাত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমরা গরিব মানুষ, বছরে একবার পরিবার নিয়ে ঈদ করতে বাড়ি ফিরি। কিন্তু বাসে উঠতেই তিনগুণ ভাড়া গুনতে হচ্ছে।

অনেকে ট্রাক-পিকআপেই ফিরছেন বাড়ি

বাসে সিট নেই, ভাড়াও হাতের নাগালে নয়—এমন পরিস্থিতিতে অনেকেই বাধ্য হয়ে ট্রাক, পিকআপে করেই বাড়ি ফিরছেন। গাজীপুর, টঙ্গী, মহাখালী ও উত্তরা এলাকা ঘুরে দেখা গেছে—বেসরকারি ট্রান্সপোর্ট কোম্পানির খোলা ট্রাক বা ছোট পিকআপে গাদাগাদি করে চড়েছেন নারী-শিশুসহ বহু মানুষ।

শেরপুরগামী রফিকুল ইসলাম নামের এক যাত্রী বলেন, বাসে ভাড়া চায় ১২০০ টাকা, অথচ আগে এই পথে ৫০০ টাকা ভাড়া ছিল। সঙ্গে বউ-বাচ্চা, তাই বাধ্য হয়ে ৪ হাজার টাকা দিয়ে একটা পিকআপ ভাড়া করেছি, যাতে ১০ জনে ভাগ করে যাচ্ছি।

সাব্বির আহমেদ নামের আরেক যাত্রী বলেন, সড়কে কোনো ভাড়া নিয়ন্ত্রণ নেই। বিআরটিএ বা পুলিশের তেমন কোনো তদারকি চোখে পড়ছে না।

তবে ফিরতি পথেও ভোগান্তির আশঙ্কা করে অনেক যাত্রী বলছেন, এবার বাড়ি যেতে যেমন কষ্ট হচ্ছে, তেমনি ফিরতি পথেও আরও বেশি ভোগান্তির আশঙ্কা রয়েছে। কারণ, ঈদের পরপরই কর্মস্থলে ফিরতে সবার একসঙ্গে ঢাকায় প্রবেশের চাপ তৈরি হবে।

উল্লেখ্য, পবিত্র ঈদুল আজহা সামনে রেখে বৃহস্পতিবার (৫ জুন) থেকে শুরু হয়েছে টানা ১০ দিনের সরকারি ছুটি। শনিবার (৭ জুন) উদযাপিত হবে ঈদ। এই ছুটি প্রযোজ্য হয়েছে সচিবালয়সহ সব সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধাস্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

Popular Post

দ্বিগুণ-তিনগুণ ভাড়ায় ঢাকা ছাড়ছেন মানুষ, ট্রাক-পিকআপেও চাপ

Update Time : ০৫:৪১:৫৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৬ জুন ২০২৫

চরম ভোগান্তি নিয়ে ঈদুল আজহার আগের দিনও রাজধানী ছাড়ছেন অসংখ্য মানুষ। সকাল থেকেই দূরপাল্লার প্রায় বাসেই দেখা গেছে উপচেপড়া ভিড়, সেই সঙ্গে ভাড়াও দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ পর্যন্ত বেশি। এমন অবস্থায় অনেকেই আবার বাসে জায়গা না পেয়ে পরিবার নিয়ে উঠছেন ট্রাক, পিকআপ বা প্রাইভেটকারে। বেশি নৈরাজ্য দেখা গেছে ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ অভিমুখে যাত্রা করা বাসগুলোতে।

বৃহস্পতিবার (৬ জুন) ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ঘুরে দেখা গেছে, রাস্তার পাশে দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে মানুষ অপেক্ষা করছেন গাড়ির জন্য। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত বাস মিলছে না। ফলে, ঘণ্টার পর ঘণ্টা সড়কেই অপেক্ষা করতে হচ্ছে। আবার যেসব বাস পাওয়া যাচ্ছে সেগুলোও নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে দ্বিগুণ আবার কেউ তিনগুণ বেশি ভাড়া চাইছেন।

যাত্রীরা অভিযোগ করেন, ঈদের আগে ভাড়ায় লাগাম নেই। অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করেই চলেছে বেশিরভাগ পরিবহন। ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ, শেরপুর, নালিতাবাড়ীসহ আশপাশের জেলাগামী বাসগুলোতে ভাড়ার অস্বাভাবিক বৃদ্ধি সবচেয়ে বেশি চোখে পড়েছে। সাধারণ সময়ে ঢাকা থেকে শেরপুরগামী বাসগুলো ভাড়া নেয় ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা। কিন্তু ঈদের এই মৌসুমে তা বাড়িয়ে নেওয়া হচ্ছে ৬৫০ থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত।

আবার ময়মনসিংহ ও হালুয়াঘাটের বাসের একাধিক চালক ও হেলপার স্পষ্ট করে বলছেন, ঈদের সময় একটু বাড়তি তো নিতেই হয়।

তবে ভাড়ার এই অতিরিক্ত আদায় নিয়ে বিআরটিএ বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো তদারকি চোখে পড়েনি।

শেরপুরের বাসের জন্য অপেক্ষায় থাকা ফিরোজ আলম নামে এক যাত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমরা গরিব মানুষ, বছরে একবার পরিবার নিয়ে ঈদ করতে বাড়ি ফিরি। কিন্তু বাসে উঠতেই তিনগুণ ভাড়া গুনতে হচ্ছে।

অনেকে ট্রাক-পিকআপেই ফিরছেন বাড়ি

বাসে সিট নেই, ভাড়াও হাতের নাগালে নয়—এমন পরিস্থিতিতে অনেকেই বাধ্য হয়ে ট্রাক, পিকআপে করেই বাড়ি ফিরছেন। গাজীপুর, টঙ্গী, মহাখালী ও উত্তরা এলাকা ঘুরে দেখা গেছে—বেসরকারি ট্রান্সপোর্ট কোম্পানির খোলা ট্রাক বা ছোট পিকআপে গাদাগাদি করে চড়েছেন নারী-শিশুসহ বহু মানুষ।

শেরপুরগামী রফিকুল ইসলাম নামের এক যাত্রী বলেন, বাসে ভাড়া চায় ১২০০ টাকা, অথচ আগে এই পথে ৫০০ টাকা ভাড়া ছিল। সঙ্গে বউ-বাচ্চা, তাই বাধ্য হয়ে ৪ হাজার টাকা দিয়ে একটা পিকআপ ভাড়া করেছি, যাতে ১০ জনে ভাগ করে যাচ্ছি।

সাব্বির আহমেদ নামের আরেক যাত্রী বলেন, সড়কে কোনো ভাড়া নিয়ন্ত্রণ নেই। বিআরটিএ বা পুলিশের তেমন কোনো তদারকি চোখে পড়ছে না।

তবে ফিরতি পথেও ভোগান্তির আশঙ্কা করে অনেক যাত্রী বলছেন, এবার বাড়ি যেতে যেমন কষ্ট হচ্ছে, তেমনি ফিরতি পথেও আরও বেশি ভোগান্তির আশঙ্কা রয়েছে। কারণ, ঈদের পরপরই কর্মস্থলে ফিরতে সবার একসঙ্গে ঢাকায় প্রবেশের চাপ তৈরি হবে।

উল্লেখ্য, পবিত্র ঈদুল আজহা সামনে রেখে বৃহস্পতিবার (৫ জুন) থেকে শুরু হয়েছে টানা ১০ দিনের সরকারি ছুটি। শনিবার (৭ জুন) উদযাপিত হবে ঈদ। এই ছুটি প্রযোজ্য হয়েছে সচিবালয়সহ সব সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধাস্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে।