নিজস্ব প্রতিবেদক:

দেশবাসীসহ বিশ্বের সকল মুসলিম উম্মাহকে ঈদুল আযহার শুভেচ্ছা জানিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, ‘কোরবানি আমাদের মাঝে আত্মদান ও আত্মত্যাগের মানসিকতা সঞ্চারিত করে, আত্মীয়স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীর সাথে আনন্দ-বেদনা ভাগাভাগি করে নেয়ার মনোভাব ও সহিষ্ণুতার শিক্ষা দেয়’।

আজ (রোববার) ঈদের নামাজ আদায় শেষে বঙ্গভবনে দেশবাসীর উদ্দেশে শুভেচ্ছা বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে আমি দেশবাসীসহ বিশ্বের সকল মুসলিম ভাইবোনদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ। মহান আল্লাহর প্রতি গভীর আনুগত্য ও সর্বোচ্চ ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর পবিত্র ঈদুল আযহা। এই উৎসবের সাথে মিশে আছে চরম ত্যাগ ও প্রভুপ্রেমের পরাকাষ্ঠা। কোরবানি আমাদের মাঝে আত্মদান ও আত্মত্যাগের মানসিকতা সঞ্চারিত করে, আত্মীয়স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীর সাথে আনন্দ-বেদনা ভাগাভাগি করে নেয়ার মনোভাব ও সহিষ্ণুতার শিক্ষা দেয়’।

আব্দুল হামিদ বলেন, ‘বিগত দুই বছরের করোনা মহামারির ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই এর সাথে এখন যুক্ত হয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন সংকট। এসব যুদ্ধ-সংঘাতের কারণে বৈশ্বিক অর্থনীতি চাপের মুখে পড়েছে, বেড়েছে মূল্যস্ফীতির চাপ। সরকার এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে বিভিন্ন প্যাকেজ প্রণোদনা প্রদানসহ বহুমুখী কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। কৃষি ও শিল্পসহ উৎপাদনশীল প্রতিটি খাতের কার্যক্রম অব্যাহত রাখতেও সরকার সর্বাত্মক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। দেশের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বন্যা মোকাবিলায় বন্যাদুর্গত, অস্বচ্ছল ও নিম্নআয়ের মানুষের দুর্ভোগ লাঘবেও বিভিন্ন সহায়তা কার্যক্রম অব্যাহত আছে। এ ক্ষেত্রে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি পর্যায়েও উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে’।

No description available.পদ্মা সেতুর কথা তুলে ধরে আবদুল হামিদ বলেন, এবারের ঈদের আগেই দেশবাসীর কাছে মহাখুশির উপলক্ষ্য হয়ে এসেছে গৌরবের নিদর্শন পদ্মা সেতুর শুভ উদ্বোধন। এর মাধ্যমে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য অঞ্চলের সঙ্গে দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের ২১ জেলার তিন কোটি মানুষের বহুমুখী যোগাযোগের অপার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। আগামী বছর সেতুতে রেল সংযোগ স্থাপিত হলে দেশের সার্বিক যোগাযোগ ব্যবস্থায় এক নতুন মাত্রা যোগ হবে। পদ্মা সেতুর ফলে দেশের অর্থনীতিতে যে ইতিবাচক অগ্রগতির সুযোগ সৃষ্টি হলো তা সমগ্র দেশবাসীর জন্যই বিশেষ আনন্দের বিষয়।

রাষ্ট্রপতি আরো বলেন, সকল সংকট মোকাবিলা করে নতুন সম্ভাবনা নিয়ে এগিয়ে যাবে আমাদের দেশ – এ প্রত্যাশা সবার। কিন্তু এর জন্য দরকার সকলের সম্মিলিত প্রয়াস। বিশেষ করে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে যথাযথ সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে; সঠিকভাবে মাস্ক পরা ও সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে হবে। পবিত্র ঈদুল আযহার মর্মার্থ অনুধাবন করে সমাজে শান্তি ও কল্যাণের পথ রচনা করতে আমাদের সংযম ও ত্যাগের মানসিকতায় উজ্জীবিত হতে হবে।

সকলকে সরকার নির্ধারিত স্থানে কুরবানি সম্পন্ন এবং যথাসময়ে কুরবানির বর্জ্য অপসারণে সচেষ্ট থাকার আহ্বান এবং সকলের সুস্বাস্থ্য ও কল্যাণ কামনা করেন রাষ্ট্রপতি। এর আগে সকালে বঙ্গভবনে দরবার হলে পরিবারের সদস্য এবং বঙ্গভবনের কর্মকর্তাদেও সাথে পবিত্র ঈদুল আযহার নামাজ আদায় করেন রাষ্ট্রপতি। নামাজ শেষে দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনায় বিশেষ মোনাজাত করা হয়। বঙ্গভবন জামে মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা সাইফুল কাবীর মোনাজাত পরিচালনা করেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে