Dhaka ১২:৪১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৯ মে ২০২৫, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দুর্নীতি কমলে বৈষম্য কমবে : দুদক চেয়ারম্যান

  • Reporter Name
  • Update Time : ১২:৫১:৪৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫
  • ২৯ Time View

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন বলেছেন, ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বরে দেশ স্বাধীনের পর একটা বাহিনীর উদ্ভব ঘটলো- ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা। ৫ আগস্টের পর আরেকটার উদ্ভব ঘটলো- ভুয়া সমন্বয়ক। চলুন আমরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করি এই ভুয়া দিয়ে। প্রথমটা শুরু হোক দুদকের ভুয়া চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। এমনকি দুদকের প্রকৃত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে তাকেও ধরবেন।

রোববার (১৮ মে) সকালে মৌলভীবাজার শিল্পকলা একাডেমিতে দুর্নীতি দমন কমিশন আয়োজিত গণশুনানিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন বলেন, মিথ্যাচার থেকে দুর্নীতির শুরু। আমাদের জনবল খুব কম। এখন দাবি ওঠে জনবল বাড়ানোর। জনবল না বাড়ালে কীভাবে আমরা দুর্নীতি কমাবো। আমাদের জনবল যত বাড়বে, আমাদের বেতন তত বাড়বে, আপনাদের ট্যাক্সও বাড়বে। আমরা দুর্নীতি দমন কমিশনকে বড় করবো না দুর্নীতি কমাবো? দুর্নীতি যত কমবে, আমাদের বেতন তত কমে আসবে।

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, আজকের গণশুনানির উদ্দেশ্য কোনোভাবেই কাউকে খাটো করা বা বড় করা নয়। সেটা অস্বীকার আমরা করি না আমাদের মধ্যে কমবেশি দুর্নীতি রয়েছে। ঘুষ, জ্ঞাত-অজ্ঞাতে, কেউ দ্রব্যে গ্রহণ করে থাকি।

তিনি আরও বলেন, দুর্নীতির দুটি দিক রয়েছে। একটি ডিমান্ড সাইট অপরটি সাপ্লাই সাইট। ডিমান্ড সাইট বলবে আমাকে কিছু ঘুষ দিতে হবে আর সাপ্লাই সাইট বলবে আমি কিছু ঘুষ দেব আমাকে কাজটা করে দেন। সবার আগে সাপ্লাই সাইটটা বন্ধ করতে হবে। সাপ্লাই সাইট বন্ধ হয়ে গেলে ডিমান্ড সাইট বন্ধ না হয়ে কোনো উপায় নেই। আর দুর্নীতি বৈষম্যের সৃষ্টি করে। দুর্নীতি যত কমবে বৈষম্য তত কমবে।

আবদুল মোমেন বলেন, আপনার অফিসে, আমার অফিসে দুই একজন দুর্নীতিবাজ যে নেই তা আমরা অস্বীকার করব না। সেই দুর্নীতিবাজদের কারণে আমরা সেবাগ্রহীতার কাছে নিন্দনীয় হবো- বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে। আর প্রতিটি অফিসে সপ্তাহে না হলেও মাসে একবার গণশুনানির আয়োজন করেন। এই গণশুনানির মাধ্যমে অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।

জেলা প্রশাসক মো. ইসরাঈল হোসেনের সভাপতিত্বে গণশুনানিতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন দুদকের কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) হাফিজ আহসান ফরিদ, দুর্নীতি দমন কমিশনের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন, পুলিশ সুপার এম কে এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন দুর্নীতি দমন কমিশনের সমন্বিত জেলা কার্যালয় হবিগঞ্জের উপপরিচালক মো. এরশাদ মিয়া।

গণশুনানিতে পাসপোর্ট অফিস, বিআরটিএ, ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট মৌলভীবাজার সদর হাসপাতাল, ভূমি অফিসসহ বেশ কিছু সরকারি অফিসের দুর্ভোগের কথা তুলে ধরেন ভুক্তভোগীরা। এ সময় তার জবাব দেন অফিস প্রধানরা। কিছু ঘটনায় ভুল স্বীকার করে তার প্রতিকার করার উদ্যোগ নেবেন বলেও জানান তারা।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

দুর্নীতি কমলে বৈষম্য কমবে : দুদক চেয়ারম্যান

Update Time : ১২:৫১:৪৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন বলেছেন, ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বরে দেশ স্বাধীনের পর একটা বাহিনীর উদ্ভব ঘটলো- ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা। ৫ আগস্টের পর আরেকটার উদ্ভব ঘটলো- ভুয়া সমন্বয়ক। চলুন আমরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করি এই ভুয়া দিয়ে। প্রথমটা শুরু হোক দুদকের ভুয়া চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। এমনকি দুদকের প্রকৃত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে তাকেও ধরবেন।

রোববার (১৮ মে) সকালে মৌলভীবাজার শিল্পকলা একাডেমিতে দুর্নীতি দমন কমিশন আয়োজিত গণশুনানিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন বলেন, মিথ্যাচার থেকে দুর্নীতির শুরু। আমাদের জনবল খুব কম। এখন দাবি ওঠে জনবল বাড়ানোর। জনবল না বাড়ালে কীভাবে আমরা দুর্নীতি কমাবো। আমাদের জনবল যত বাড়বে, আমাদের বেতন তত বাড়বে, আপনাদের ট্যাক্সও বাড়বে। আমরা দুর্নীতি দমন কমিশনকে বড় করবো না দুর্নীতি কমাবো? দুর্নীতি যত কমবে, আমাদের বেতন তত কমে আসবে।

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, আজকের গণশুনানির উদ্দেশ্য কোনোভাবেই কাউকে খাটো করা বা বড় করা নয়। সেটা অস্বীকার আমরা করি না আমাদের মধ্যে কমবেশি দুর্নীতি রয়েছে। ঘুষ, জ্ঞাত-অজ্ঞাতে, কেউ দ্রব্যে গ্রহণ করে থাকি।

তিনি আরও বলেন, দুর্নীতির দুটি দিক রয়েছে। একটি ডিমান্ড সাইট অপরটি সাপ্লাই সাইট। ডিমান্ড সাইট বলবে আমাকে কিছু ঘুষ দিতে হবে আর সাপ্লাই সাইট বলবে আমি কিছু ঘুষ দেব আমাকে কাজটা করে দেন। সবার আগে সাপ্লাই সাইটটা বন্ধ করতে হবে। সাপ্লাই সাইট বন্ধ হয়ে গেলে ডিমান্ড সাইট বন্ধ না হয়ে কোনো উপায় নেই। আর দুর্নীতি বৈষম্যের সৃষ্টি করে। দুর্নীতি যত কমবে বৈষম্য তত কমবে।

আবদুল মোমেন বলেন, আপনার অফিসে, আমার অফিসে দুই একজন দুর্নীতিবাজ যে নেই তা আমরা অস্বীকার করব না। সেই দুর্নীতিবাজদের কারণে আমরা সেবাগ্রহীতার কাছে নিন্দনীয় হবো- বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে। আর প্রতিটি অফিসে সপ্তাহে না হলেও মাসে একবার গণশুনানির আয়োজন করেন। এই গণশুনানির মাধ্যমে অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।

জেলা প্রশাসক মো. ইসরাঈল হোসেনের সভাপতিত্বে গণশুনানিতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন দুদকের কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) হাফিজ আহসান ফরিদ, দুর্নীতি দমন কমিশনের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন, পুলিশ সুপার এম কে এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন দুর্নীতি দমন কমিশনের সমন্বিত জেলা কার্যালয় হবিগঞ্জের উপপরিচালক মো. এরশাদ মিয়া।

গণশুনানিতে পাসপোর্ট অফিস, বিআরটিএ, ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট মৌলভীবাজার সদর হাসপাতাল, ভূমি অফিসসহ বেশ কিছু সরকারি অফিসের দুর্ভোগের কথা তুলে ধরেন ভুক্তভোগীরা। এ সময় তার জবাব দেন অফিস প্রধানরা। কিছু ঘটনায় ভুল স্বীকার করে তার প্রতিকার করার উদ্যোগ নেবেন বলেও জানান তারা।