Dhaka ০৪:২০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দীর্ঘ ১২ বছর পর স্বামীর সন্ধান, সন্তানদের পিতৃ পরিচয়ের দাবিতে অনশন করছেন ময়মনসিংহের লায়লা

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৩:০২:৩৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ মার্চ ২০২১
  • ১০৯ Time View

সোহেল রানা, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধিঃ

কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার নাজিমখাঁন এলাকায় পিতৃ পরিচয়ের দাবিতে স্ত্রী- সন্তানদের আমরন অনশন।

১ মার্চ সোমবার সকাল ১০ টায় নাজিমখাঁন ইউপির রামসিং বাইশেরপাড় এলাকায় পিতৃ পরিচয়ের দাবিতে শ্রী পরেশ চন্দ্র মন্ডল এর বাড়িতে এ অনশন করছেন স্ত্রী লায়লা বেগম ও তার সন্তানরা।

সরেজমিনে জানা যায়,ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়ীয়া উপজেলার ধামর গ্রামের নজরুল ইসলামের কন্যা মোছা: লায়লা বেগম(৩৩) এর সাথে ২০০৩ সালে রাজারহাট উপজেলার নাজিমখান ইউনিয়নের রামসিং বাইশেরপাড় এলাকার মৃত নরেন্দ্র নাথ মন্ডল এর পুত্র শ্রী পরেশ চন্দ্র মন্ডল হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহন করে মো:আব্দুল হামিদ নামে কোর্ট এফিট এফিটর মাধ্যমে মুসলিম হন। পরে ফুলবাড়ীয়ার নজরুল ইসলামের বাড়িতে থেকে ঢাকার সাভারে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করেন। এক সময় নজরুল ইসলাম তার সাথে পারিবারিকভাবে লায়লা বেগমের সাথে বিবাহ দেন। তারপর তিনি ৫ বছর ঘর সংসার করেন। আব্দুল হামিদ (শ্রী পরেশ চন্দ্র) মন্ডল বিভিন্ন প্রাইভেট কম্পানিতে চাকুরি করেন। দাম্পত্য জিবনে তাদের ৫ ডিসেম্বর ২০০৫ সালে একটি পুত্র সন্তান ও ৫ অক্টোবর ২০০৭ সালে একটি কন্যা সন্তান জম্ম হয়। পরবর্তীতে ২০০৮ সালে আব্দুল হামিদ পূর্ব নাম পরেশ চন্দ্র মন্ডল চাকুরির বদলির কথা বলে কুমিল্লা চলে য়ায়। কুমিল্লা যাওয়ার পরে থেকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করেন পরিবারের সাথে। এরপর মোছা: লায়লা বেগম তার সন্তানদের নিয়ে স্বামীকে খুজাঁখুজির পর দেখা না পেয়ে চরম বিপাকে পড়ে যান। পরে কোনমতে সন্তানদের নিয়ে গাজীপুর সদর উপজেলার রাতুল গলীর নুর ভিলা নামে একটি বাড়ীতে ২ সন্তান ও বৃদ্ধ বাবা-মায়ের সাথে মানবেতর জীবন যাপন শুরু করেন। কিছুদিন আগে লায়লা বেগম পরেশ চন্দ্র মন্ডল এর এইচ .সি পাশের একটি মার্কশীট খুজে পায়। এরই সূত্র ধরে ১ র্মাচ সোমবার সকালে লায়লা বেগম পরেশ চন্দ্র মন্ডল এর বাড়িতে ছেলে-মেয়েকে নিয়ে চলে আসেন এবং অনশন করেন। এ বিষয়টি নিয়ে এলাকায় চাঞ্চলের সৃষ্টি হয়েছে। অপরদিকে লায়লা বেগমের আসার খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন কৌশলে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়।

এ বিষয়ে অনশনরত লায়লা বেগম বলেন- আমি ১২বছর ধরে আমার সন্তানদের বাবার পরিচয় দিতে পারছি না। এতদিন পর আমি স্বামীর বাড়ির ঠিকানা পেয়েছি। এসে দেখি বাড়িতে কেউ নেই। তাই আমার স্বামী না আসা পর্যন্ত অনশন করবো। মরণের আগ পর্যন্ত।

লায়লা বেগমের সন্তান মেহেদী হাসান রিপন (১৬) ও নুশরাত জাহান ইলমা (১৪) বলেন- আমরা জন্মের পর থেকে বাবাকে দেখিনি। আজ মা ও আমরা বাবার ঠিকানা খুঁেজ পেয়েছি তাই বাবাকে না দেখা পর্যন্ত আমরা যাব না। বাবা যদি না আসে এবং আমাদের পিতৃ পরিচয় না দেয় তাহলে আমার এখানেই আতœহত্যা করবো।

এ ব্যাপরে অভিযুক্ত পরেশ চন্দ্র মন্ডল এর সাথে ০১৭৩২৫৪৭৩৭৮ নম্বরে একাধিকবার ফোন করলে হে তিনি ফোন রিসিভ করেনি।

নাজিমখান ৩ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো: আজিজার রহমান জানান- শ্রী পরেশ চন্দ্র ২০০১ সালে একটি বিয়ে করে তাকে ডিভোর্স দেয়। এরপর কোথায় যায় জানি না। আজ জানলাম সে মুসলিম হয়ে বিয়ে করেছে। আবার ২০০৯ সালে রংপুর গঙ্গাচড়া এলাকায় শ্রী হরিশংকর এর কন্যা শ্রী কল্পানা রাণীকে বিয়ে করে ঘর সংসার করছেন।

এ বিষয়ে রাজারহাট থানার ওসি রাজু সরকার বলেন-মোছা: লায়লা বেগম থানায় এসেছে। অভিযোগ শুনে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

Popular Post

দীর্ঘ ১২ বছর পর স্বামীর সন্ধান, সন্তানদের পিতৃ পরিচয়ের দাবিতে অনশন করছেন ময়মনসিংহের লায়লা

Update Time : ০৩:০২:৩৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ মার্চ ২০২১

সোহেল রানা, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধিঃ

কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার নাজিমখাঁন এলাকায় পিতৃ পরিচয়ের দাবিতে স্ত্রী- সন্তানদের আমরন অনশন।

১ মার্চ সোমবার সকাল ১০ টায় নাজিমখাঁন ইউপির রামসিং বাইশেরপাড় এলাকায় পিতৃ পরিচয়ের দাবিতে শ্রী পরেশ চন্দ্র মন্ডল এর বাড়িতে এ অনশন করছেন স্ত্রী লায়লা বেগম ও তার সন্তানরা।

সরেজমিনে জানা যায়,ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়ীয়া উপজেলার ধামর গ্রামের নজরুল ইসলামের কন্যা মোছা: লায়লা বেগম(৩৩) এর সাথে ২০০৩ সালে রাজারহাট উপজেলার নাজিমখান ইউনিয়নের রামসিং বাইশেরপাড় এলাকার মৃত নরেন্দ্র নাথ মন্ডল এর পুত্র শ্রী পরেশ চন্দ্র মন্ডল হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহন করে মো:আব্দুল হামিদ নামে কোর্ট এফিট এফিটর মাধ্যমে মুসলিম হন। পরে ফুলবাড়ীয়ার নজরুল ইসলামের বাড়িতে থেকে ঢাকার সাভারে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করেন। এক সময় নজরুল ইসলাম তার সাথে পারিবারিকভাবে লায়লা বেগমের সাথে বিবাহ দেন। তারপর তিনি ৫ বছর ঘর সংসার করেন। আব্দুল হামিদ (শ্রী পরেশ চন্দ্র) মন্ডল বিভিন্ন প্রাইভেট কম্পানিতে চাকুরি করেন। দাম্পত্য জিবনে তাদের ৫ ডিসেম্বর ২০০৫ সালে একটি পুত্র সন্তান ও ৫ অক্টোবর ২০০৭ সালে একটি কন্যা সন্তান জম্ম হয়। পরবর্তীতে ২০০৮ সালে আব্দুল হামিদ পূর্ব নাম পরেশ চন্দ্র মন্ডল চাকুরির বদলির কথা বলে কুমিল্লা চলে য়ায়। কুমিল্লা যাওয়ার পরে থেকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করেন পরিবারের সাথে। এরপর মোছা: লায়লা বেগম তার সন্তানদের নিয়ে স্বামীকে খুজাঁখুজির পর দেখা না পেয়ে চরম বিপাকে পড়ে যান। পরে কোনমতে সন্তানদের নিয়ে গাজীপুর সদর উপজেলার রাতুল গলীর নুর ভিলা নামে একটি বাড়ীতে ২ সন্তান ও বৃদ্ধ বাবা-মায়ের সাথে মানবেতর জীবন যাপন শুরু করেন। কিছুদিন আগে লায়লা বেগম পরেশ চন্দ্র মন্ডল এর এইচ .সি পাশের একটি মার্কশীট খুজে পায়। এরই সূত্র ধরে ১ র্মাচ সোমবার সকালে লায়লা বেগম পরেশ চন্দ্র মন্ডল এর বাড়িতে ছেলে-মেয়েকে নিয়ে চলে আসেন এবং অনশন করেন। এ বিষয়টি নিয়ে এলাকায় চাঞ্চলের সৃষ্টি হয়েছে। অপরদিকে লায়লা বেগমের আসার খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন কৌশলে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়।

এ বিষয়ে অনশনরত লায়লা বেগম বলেন- আমি ১২বছর ধরে আমার সন্তানদের বাবার পরিচয় দিতে পারছি না। এতদিন পর আমি স্বামীর বাড়ির ঠিকানা পেয়েছি। এসে দেখি বাড়িতে কেউ নেই। তাই আমার স্বামী না আসা পর্যন্ত অনশন করবো। মরণের আগ পর্যন্ত।

লায়লা বেগমের সন্তান মেহেদী হাসান রিপন (১৬) ও নুশরাত জাহান ইলমা (১৪) বলেন- আমরা জন্মের পর থেকে বাবাকে দেখিনি। আজ মা ও আমরা বাবার ঠিকানা খুঁেজ পেয়েছি তাই বাবাকে না দেখা পর্যন্ত আমরা যাব না। বাবা যদি না আসে এবং আমাদের পিতৃ পরিচয় না দেয় তাহলে আমার এখানেই আতœহত্যা করবো।

এ ব্যাপরে অভিযুক্ত পরেশ চন্দ্র মন্ডল এর সাথে ০১৭৩২৫৪৭৩৭৮ নম্বরে একাধিকবার ফোন করলে হে তিনি ফোন রিসিভ করেনি।

নাজিমখান ৩ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো: আজিজার রহমান জানান- শ্রী পরেশ চন্দ্র ২০০১ সালে একটি বিয়ে করে তাকে ডিভোর্স দেয়। এরপর কোথায় যায় জানি না। আজ জানলাম সে মুসলিম হয়ে বিয়ে করেছে। আবার ২০০৯ সালে রংপুর গঙ্গাচড়া এলাকায় শ্রী হরিশংকর এর কন্যা শ্রী কল্পানা রাণীকে বিয়ে করে ঘর সংসার করছেন।

এ বিষয়ে রাজারহাট থানার ওসি রাজু সরকার বলেন-মোছা: লায়লা বেগম থানায় এসেছে। অভিযোগ শুনে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।