ভারতের দিল্লিতে ৪০ হাজার রুপিতে শিশু বিক্রির একটি চক্রের সন্ধান পেয়েছে রাজ্য পুলিশ। অভিযানে চারজনকে গ্রেফতারও করেছে। এ সময় দুই মাস বয়সী এক শিশুকে উদ্ধার করা হয়। শিশুটিকে এ পর্যন্ত তিন বার বিক্রি করা হয়েছে। শেষ পর্যন্ত দিল্লি পুলিশ এবং মহিলা কমিশনের তৎপরতায় উদ্ধার করা গেল শিশুটিকে। খবর ডয়চে ভেলে’র।
জানা যায়, বুধবার রাতে দিল্লির মহিলা কমিশন খবর পায় উত্তর দিল্লির কোনো এক এলাকায় একটি আড়াই মাসের শিশু কন্যাকে বিক্রি করা হয়েছে। মহিলা কমিশনের প্রধানরা সঙ্গে খবর দেন পুলিশকে। শুরু হয় তল্লাশি অভিযান। এক দিকে যখন অভিযান চলছে, অন্য দিকে তখন হাতে হাতে ঘুরছে শিশুটি। পুলিশ জানিয়েছে, প্রথমে শিশুটির বাবা এক নারীর কাছে তাকে ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেয়। এরপর সেই নারী এক ব্যক্তির কাছে ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেয় শিশুটিকে। সেই ব্যক্তি ফের তাকে আরও চড়া দামে বিক্রি করে বলে জানা গিয়েছে।
তদন্তে নেতৃত্ব দেন উত্তর দিল্লির ডেপুটি কমিশনার মণিকা ভরদ্বাজ। মহিলা কমিশনকে সঙ্গে নিয়ে প্রথমেই তাঁরা পৌঁছে যান শিশুটির বাবার কাছে। তাঁকে জেরা করেই একের পর এক অপরাধীর নাগাল মেলে। মণিকা জানিয়েছেন, শিশুটির বাবা জেরায় প্রথমে স্বীকার করে নেন যে তিনি তাঁর আড়াই মাসের শিশু কন্যাকে বিক্রি করেছেন। তাঁর দাবি, তাঁর আরও দুই কন্যা সন্তান আছে। এক জন প্রতিবন্ধি। তাদের দেখভালের জন্য প্রচুর অর্থের প্রয়োজন। তৃতীয় সন্তানকে মানুষ করার মতো অর্থ তাঁর কাছে ছিল না। বাকি দুই সন্তানকে যাতে মানুষ করতে পারেন সে জন্যই তৃতীয় সন্তানকে বিক্রি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যদিও মহিলা কমিশনের একটি সূত্র বলছে, কন্যা সন্তান বলেই বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ঐ ব্যক্তি।
শিশুটির বাবাকে জেরা করে পুলিশ মঞ্জু, সঞ্জয় মিত্তাল এবং মনীশার সন্ধান পায়। এদের হাতে হাতেই ঘুরছিল শিশুটি। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার মধ্যে এদের সকলকেই গ্রেফতার করা হয়। উদ্ধার হয় শিশুটিও। তাকে তার মায়ের কাছে রাখা হয়েছে। শিশুটির মা ঠিকে কাজ করেন।
দিল্লি মহিলা কমিশনের প্রধান স্বাতী মালিওয়াল বলেন, ‘শিশুটিকে বড় করার জন্য সব রকম ব্যবস্থা করবে মহিলা কমিশন। তাঁর মাকেও সাহায্য করা হবে। প্রয়োজনে শিশুটিকে কোনও হোমে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে। দিল্লিতে এমন ঘটনা যাতে আর না ঘটে, তা সুনিশ্চিত করতে হবে।’