দিনে রাতে পরিবহন জটে রাজধানীর উত্তরার মানুষ। প্রধান সড়ক ছেড়ে খোদ আবাসিক এলাকা ধরে চলছে বাস। কার্গো, ট্রাকসহ মালবাহী সব যান চলছে সেক্টরগুলোর রাস্তায়। সবমিলে উত্তরাবাসীর দৈনন্দিন জীবনে নাভিশ্বাস অবস্থা।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, রাত গভীর হলেও রেহাই নেই এখানকার বাসিন্দারের। আবাসিক এলাকা গলিয়ে চলছে সব ধরণের যানবাহন। ঘন্টার পর ঘন্টা লেগে আছে জট। প্রয়োজনে আসতে পারে না অ্যাম্বুলেন্স কিংবা ফায়ার সার্ভিস। কারণ মহাসড়ক ছেড়ে বাসা বাড়ির রাস্তায় উঠেছে এসব যানবাহন।
স্থানীয়রা বাসিন্দারা বলছেন, ‘বেপরোয়াভাবে গাড়িগুলো চলছে। এতে করে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে আমাদের। আগে শুধু প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাস ছিল কিন্তু এখন সবধরনের যানবাহন চলছে আবাসিক এলাকা দিয়ে। ফলে যানজটের আর শেষ নেই এ রাস্তায়। প্রধান সড়কগুলোর পাশাপাাশি ভেতরের রাস্তায় বাস ঢুকে পড়লে কোন গাড়ি আর যাওয়ার উপায় থাকে না।’
তারা বলছেন, ‘রাস্তার উভয় পাশেই গাড়ি পার্কিং করা হয়। গাড়িগুলোকে শুধু প্রধান সড়ক দিয়ে চলতে দিলে আমরা উত্তরাবাসী এসব দুর্ভোগ থেকে রেহাই পাই।’
অফিস ছুটির আগে-পরে যানজটের চেহারা ভয়ঙ্কর রূপ নেয়। উত্তরার এমন চেহারা আগে কখনো দেখেননি সাধারণ মানুষ। এমন অসহনীয় পরিবেশে চলতে গিয়ে স্বপ্নের স্যাটেলাইট শহরের প্রসঙ্গ ভুলে যায় জনগণ।
ভুক্তভোগীরা বলছেন, ‘উত্তরের এই সেক্টরের মধ্যে বাস ও কাভার্ডভ্যান চলার ফলে যানজট ও মোড়ে মোড়ে অধ্যাধিক পরিমাণ হর্ণ বাজে। যেখানে মানুষের জীবনযাত্রা দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে। যদি স্কুল, কলেজ খোলা থাকতো তাহলে প্রায়ই হয়তো দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটতো।’
তারা বলছেন, ‘উত্তরা রাজধানীর একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা, যা আবাসিক এলাকা নামে পরিচিত। বর্তমানে ব্যবসার অন্যতম কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। কিন্তু বর্তমানে উত্তরার পরিবেশ একেবারে অশান্ত। কারণ, বাস ও কাভার্ডভ্যানগুলো হাইওয়ে সড়ক ব্যবসার না করে সেক্টরের ভিতর দিয়ে চলছে। এতে করে আমাদের জীবনযাত্রার অনেক সমস্যা হচ্ছে। হাঁটা-চলা থেকে শুরু করে প্রাইভেটকার নিয়ে বের হলেও তীব্র যানজটে পড়তে হচ্ছে।’
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রিং রোড বাস্তবায়ন না হলে সমস্যা আরও বাড়বে। জানতে চাইলে আইইবির প্রেসিডেন্ট ও রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান প্রকৌশরী নূরুল হুদা বলেন, ‘গোটা ঢাকা এরিয়ায় তিনটি রিংরোড রয়েছে। ইতিমধ্যে দুটির প্রপোজাল দেয়া হয়েছে। সেসব রিং রোড, মেট্রো রেল ও অন্যান্য যেসকল সড়ক ঠিক করতে উদ্যোগ নিয়েছে তা বাস্তবায়ন হলে যানজট অনেকাংশে কমে যাবে।’
তিনি বলেন, ‘রিং রোডগুলো বাস্তবায়ন হলে রাজধানীর সঙ্গে সব জেলার যোগাযোগ এ ব্যবস্থায় হবে। ফলে বাহিরের কোন সড়ক ব্যবহার হবে না। বিশেষ করে ট্রাক, কাভার্ডভ্যান ও লরি ঢাকা শহরের ভিতরে প্রবেশ না করে সরাসরি গন্তব্যস্থলে পৌঁছাবে।