দেশে হাইব্রিড উন্নত জাত উদ্ভাবন ও চাষের মাধ্যমে তুলা উৎপাদন দিন দিন বাড়ছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। তিনি আজ রাজধানীর খামারবাড়ি সড়কে তুলা উন্নয়ন বোর্ড ভবন ‘তুলা ভবন’র ভিত্তি প্রস্তরের ফলক উম্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা জানান।
আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সারা বিশ্বেই তুলা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অর্থকরী ফসল। বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ৮০ থেকে ৮৬ লাখ বেল তুলা আমদানি করে থাকে। সেখানে দেশে তুলার উৎপাদন মাত্র ২ লাখ বেলের মতো। আগে ১ লাখ বেলের কম তুলা উৎপাদন হতো। তিনি বলেন, এই বিপুল পরিমাণ তুলা আমদানিতে বছরে ২৪ থেকে ৩০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়। যদিও আমদানি করা তুলা ভ্যালু অ্যাডের মাধ্যমে সুতা ও কাপড়ের আকারে বিদেশে রপ্তানি হয়ে থাকে। তিনি বলেন, এসব তুলা দেশে উৎপাদন করতে পারলে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করা সম্ভব হতো।
মন্ত্রী বলেন, অন্যান্য ফসলের মতো তুলা উৎপাদনের ওপরও সরকার অত্যন্ত গুরুত্ব প্রদান করেছে। কারণ তুলা উন্নয়ন বোর্ড হওয়া মানে এই ফসল উৎপাদনে গুরুত্বারোপ করা। তিনি বলেন, তুলা উন্নয়ন বোর্ডকে সবদিক দিয়ে শক্তিশালী করেছে সরকার। ভৌত অবকাঠামো, যন্ত্রপাতি, ল্যাবরোটরি স্থাপন ও দক্ষ জনবল নিয়োগ দেয়া হয়েছে। যাতে করে দেশের আবহাওয়া ও জলবায়ুর উপযোগী নতুন জাত উদ্ভাবন করে তুলা উৎপাদন ত্বরান্বিত ও লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা যায়।
আব্দুর রাজ্জাক বলেন, দেশে প্রায় ৭৪ ভাগ জমিতে ধানের আবাদ হয়। এদেশের কৃষি উৎপাদন ও ফসল ব্যবস্থা মূলত ধানকেন্দ্রিক। ইদানিং চালের কনজাম্পশন কমে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকলে অনেক জমি অনাবাদী হয়ে পড়ে থাকবে। সেখানে শাক-সবজি, ফলমূল ও তুলার মতো উচ্চ মূল্যের অর্থকরী ফসল উৎপাদন করা যাবে।
সেই লক্ষ্য নিয়ে তুলা উন্নয়ন বোর্ডকে শক্তিশালী করা হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, রপ্তানির ক্ষেত্রে শুধু গার্মেন্টস নির্ভরতা নয়, বরং রপ্তানিকে বহুমুখীকরণ করতে হবে। কৃষি মানুষের আহার পুষ্টি জাতীয় খাবারের যোগানের পাশাপাশি শিল্পের কাঁচামালেরও যোগান দেয়।
তিনি আরও বলেন, আগামী দিনে কৃষি বহুমুখীকরণ হবে, রপ্তানি বহুমুখীকরণ হবে এবং প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হবে। তুলা উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী পরিচালক মো. ফরিদ উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি সচিব মো. নাসিরুজ্জামান।