Dhaka ১০:২৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫, ২০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ডিক্রি জারির করে নিজের বেতন দ্বিগুণ করলেন পেরুর প্রেসিডেন্ট

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৮:০৭:১৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৪ জুলাই ২০২৫
  • 28

দক্ষিণ আমেরিকার দেশ পেরুর প্রেসিডেন্ট দিনা বলুয়ার্তে নিজেই নিজের বেতন বাড়াতে একটি ডিক্রি জারি করেছেন। ডিক্রি জারির মাধ্যমে নিজের বেতন দ্বিগুণ করে দিয়েছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পেরুর প্রেসিডেন্ট দিনা বলুয়ার্তে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে কম জনপ্রিয়তা থাকা সত্ত্বেও নিজের বেতন দ্বিগুণ করে নিয়েছেন। আর তার এই সিদ্ধান্ত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। প্রেসিডেন্ট এখন থেকে প্রতি মাসে ৩৫ হাজার ৫০০ সোল (১০ হাজার মার্কিন ডলার) বেতন পাবেন, যা আগের তুলনায় দ্বিগুণ।

পেরুর অর্থমন্ত্রী রাউল পেরেজ রেয়েস জানিয়েছেন, আঞ্চলিক অন্যান্য দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

তবে এই যুক্তি পেরুর সাধারণ মানুষকে সন্তুষ্ট করতে পারেনি। কারণ প্রেসিডেন্ট বলুয়ার্তের জনসমর্থন মাত্র ২ শতাংশ, যা পেরুর ইতিহাসে সবচেয়ে কম। দেশটিতে ন্যূনতম মাসিক মজুরি এক হাজার ২৫ সোল (মাত্র ২৮৮ ডলার)। যার থেকে প্রেসিডেন্টের নতুন বেতন ৩৫ গুণ বেশি।

এদিকে বলুয়ার্তের বেতন বৃদ্ধিকে অনেকেই বলেছেন, অমানবিক এবং মানুষের যন্ত্রণার প্রতি বধিরতার প্রকাশ। কেউ কেউ লিখেছেন— যেখানে মানুষ খেতে পারছে না, সেখানে নিজের বেতন বাড়ানো অপরাধ।

অনেকে আবার আরেকুইপা শহরে প্রেসিডেন্টের গাড়িতে পাথর ও ডিম ছোড়ার ভিডিও শেয়ার করে বলেন, মানুষের ক্ষোভ স্পষ্ট, তবুও তিনি অনড়।

অবশ্য দিনা বলুয়ার্তে নির্বাচিত হয়ে পেরুর প্রেসিডেন্ট হননি। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে প্রেসিডেন্ট পেদ্রো কাস্তিলো অভিশংসনের মাধ্যমে অপসারিত হলে, সেসময়ের ভাইস-প্রেসিডেন্ট বলুয়ার্তে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

তবে তার শাসনামলে সামনে এসেছে একাধিক বিতর্ক। দামি উপহার গোপন রাখা, নাকের অস্ত্রোপচারের সময় দেশে কাউকে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট না রেখে বিদেশে যাওয়ার মতো বিষয়ও বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। দেশে অপরাধ বৃদ্ধির বিরুদ্ধে কিছু করতে না পারার অভিযোগে তার জনপ্রিয়তাও ক্রমাগত কমছে। যদিও এই অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেছেন।

দক্ষিণ আমেরিকার এই দেশটির সরকার বলছে, বলুয়ার্তের আগের বেতন দক্ষিণ আমেরিকার ১২টি দেশের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন ছিল। একমাত্র বলিভিয়ার প্রেসিডেন্ট তার থেকে কম বেতন পান।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

ডিক্রি জারির করে নিজের বেতন দ্বিগুণ করলেন পেরুর প্রেসিডেন্ট

Update Time : ০৮:০৭:১৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৪ জুলাই ২০২৫

দক্ষিণ আমেরিকার দেশ পেরুর প্রেসিডেন্ট দিনা বলুয়ার্তে নিজেই নিজের বেতন বাড়াতে একটি ডিক্রি জারি করেছেন। ডিক্রি জারির মাধ্যমে নিজের বেতন দ্বিগুণ করে দিয়েছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পেরুর প্রেসিডেন্ট দিনা বলুয়ার্তে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে কম জনপ্রিয়তা থাকা সত্ত্বেও নিজের বেতন দ্বিগুণ করে নিয়েছেন। আর তার এই সিদ্ধান্ত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। প্রেসিডেন্ট এখন থেকে প্রতি মাসে ৩৫ হাজার ৫০০ সোল (১০ হাজার মার্কিন ডলার) বেতন পাবেন, যা আগের তুলনায় দ্বিগুণ।

পেরুর অর্থমন্ত্রী রাউল পেরেজ রেয়েস জানিয়েছেন, আঞ্চলিক অন্যান্য দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

তবে এই যুক্তি পেরুর সাধারণ মানুষকে সন্তুষ্ট করতে পারেনি। কারণ প্রেসিডেন্ট বলুয়ার্তের জনসমর্থন মাত্র ২ শতাংশ, যা পেরুর ইতিহাসে সবচেয়ে কম। দেশটিতে ন্যূনতম মাসিক মজুরি এক হাজার ২৫ সোল (মাত্র ২৮৮ ডলার)। যার থেকে প্রেসিডেন্টের নতুন বেতন ৩৫ গুণ বেশি।

এদিকে বলুয়ার্তের বেতন বৃদ্ধিকে অনেকেই বলেছেন, অমানবিক এবং মানুষের যন্ত্রণার প্রতি বধিরতার প্রকাশ। কেউ কেউ লিখেছেন— যেখানে মানুষ খেতে পারছে না, সেখানে নিজের বেতন বাড়ানো অপরাধ।

অনেকে আবার আরেকুইপা শহরে প্রেসিডেন্টের গাড়িতে পাথর ও ডিম ছোড়ার ভিডিও শেয়ার করে বলেন, মানুষের ক্ষোভ স্পষ্ট, তবুও তিনি অনড়।

অবশ্য দিনা বলুয়ার্তে নির্বাচিত হয়ে পেরুর প্রেসিডেন্ট হননি। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে প্রেসিডেন্ট পেদ্রো কাস্তিলো অভিশংসনের মাধ্যমে অপসারিত হলে, সেসময়ের ভাইস-প্রেসিডেন্ট বলুয়ার্তে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

তবে তার শাসনামলে সামনে এসেছে একাধিক বিতর্ক। দামি উপহার গোপন রাখা, নাকের অস্ত্রোপচারের সময় দেশে কাউকে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট না রেখে বিদেশে যাওয়ার মতো বিষয়ও বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। দেশে অপরাধ বৃদ্ধির বিরুদ্ধে কিছু করতে না পারার অভিযোগে তার জনপ্রিয়তাও ক্রমাগত কমছে। যদিও এই অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেছেন।

দক্ষিণ আমেরিকার এই দেশটির সরকার বলছে, বলুয়ার্তের আগের বেতন দক্ষিণ আমেরিকার ১২টি দেশের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন ছিল। একমাত্র বলিভিয়ার প্রেসিডেন্ট তার থেকে কম বেতন পান।